নাসির উদ্দীন ইউসুফসহ তিন জনকে আইনি নোটিশ
Published: 25th, September 2025 GMT
নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের জিনিসপত্র ফেরত দিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবরেণ্য সংস্কৃতিকর্মী নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুসহ চারজনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সেলিম আল দীনের ভাইয়ের ছেলে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সেলিম আল দীনের ভাতিজা ও সেলিম আল দীন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন শুভ্রের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান।
আরো পড়ুন:
শিল্পকলায় ‘এস এম সোলায়মান প্রণোদনা’
ট্র্যাব স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন এরশাদ হাসান
সেলিম আল দীনের অর্জিত বিভিন্ন পদক, পুরস্কার, নাটকের পাণ্ডুলিপি ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র ফেনীতে অবস্থিত সেলিম আল দীন জাদুঘরে জমা দেওয়ার জন্য নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিশপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন মো.
আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান নোটিশের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, নাট্যকার সেলিম আল দীন বিশ্বমানের নাট্যকার, লেখক, গবেষক ও নাট্যনির্দেশক ছিলেন। নাট্যজগতে তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘নাট্যাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। পাশাপাশি তিনি বিপুলসংখ্যক নাটক রচনা করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সেলিম আল দীনের সব পদক, পুরস্কার, পাণ্ডুলিপি, মূল্যবান দ্রব্য ও ব্যবহার্য সামগ্রী জাতীয় সম্পদ এবং দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলার উন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, দুঃখজনকভাবে প্রয়াত সেলিম আল দীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, মো. কামরুল হাসান, আব্দুস সালাম ও নাসরিন সুলতানা বিলকিস তার স্মৃতিচিহ্ন, পাণ্ডুলিপি, পদক ও পুরস্কার নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিজেদের কাছে রেখেছেন। এগুলো সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং প্রদর্শনের সুযোগ না থাকায় সেলিম আল দীনের ভক্ত, গবেষক ও অনুরাগীরা সেগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সেলিম আল দীনের জন্মস্থান ফেনীতে ‘সেলিম আল দীন কেন্দ্র’ এবং এর অংশ হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে ‘সেলিম আল দীন মিউজিয়াম’ চালু রয়েছে। এই কেন্দ্র ও জাদুঘরে অসংখ্য ভক্ত, অনুরাগী এবং দেশি-বিদেশি গবেষক নিয়মিত যাতায়াত করলেও সেখানে সেলিম আল দীনের মূল্যবান পদক, পুরস্কার ও পাণ্ডুলিপির দেখা পাওয়া যাচ্ছে না, যা সবার জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলেও এ নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়াত সেলিম আল দীনের সব পদক, পুরস্কার, পাণ্ডুলিপি, মূল্যবান দ্রব্য ও ব্যবহার্য সামগ্রী জাদুঘরে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান জানান, বিষয়টি অবগতির জন্য এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধে নোটিশের কপি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ল ম আল দ ন র প রস ক র উদ দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস