তামিমের বিরুদ্ধে ‘ভুতুড়ে আপত্তি’ আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন
Published: 25th, September 2025 GMT
ওল্ড ডিএইচএসের কাউন্সিলর হিসেবে তামিম ইকবালে বিরুদ্ধে গতকাল ‘রহস্যময়’ এক আপত্তি জমা পড়ে বিসিবির নির্বাচন কমিশনে। আপত্তির মূল দাবি, তামিম নাকি এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেননি, তিনি সংগঠক নন এবং ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবেরও কেউ নন।
আপত্তিটি সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর পক্ষে জমা পড়লেও হালিম শাহ কালই বলেছেন এ রকম কোনো চিঠি তিনি নির্বাচন কমিশনে দেননি, বিসিবিতেও তিনি গতকাল যাননি। ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদও নিশ্চিত করেছেন, তাঁর সই করা চিঠিতেই তামিমকে কাউন্সিলর করেছে ক্লাব। তামিম বর্তমানে ক্লাবটির যুগ্ম সম্পাদক বলেও জানিয়েছেন তিনি।
একটি সূত্র অবশ্য আজ দাবি করেছে, তামিমের বিরুদ্ধে আপত্তিটি জানানো হয়েছে ই-মেইলে। যে মাধ্যমেই জানানো হোক, অভিযোগটিই এখন মূল্যহীন। কারণ, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আজ সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, তাঁরা তামিমের বিরুদ্ধে আসা আপত্তিটি আমলেই নেননি।
আপত্তির শুনানি শেষে আজ সন্ধ্যায় মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেইন জানিয়েছেন, তাঁরা এটি আমলে নিচ্ছেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা চিঠিটি পেয়েছি। তবে, যিনি এই আপত্তি জানিয়েছেন, তিনি আজ শুনানিতে উপস্থিত থেকে বিষয়টি উত্থাপন করেননি। সুতরাং, আমরা তাকে অনুপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত করেছি এবং এই আপত্তিটি আর আমলে নেব না।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, খসড়া ভোটার তালিকার ওপর গতকাল মোট ৩৮টি আপত্তি পেয়েছেন তাঁরা। যার ৩০টি জমা দেওয়া হয়েছে সশরীরে এসে, আটটি এসেছে ই-মেইলে। আপত্তির ওপর হওয়া শুনানিতে আজ আটজন অনুপস্থিত ছিলেন।
দুদকের পর্যবেক্ষণের কারণে তৃতীয় বিভাগ বাছাই থেকে ওঠা ১৫টি বিতর্কিত ক্লাবকে খসড়া ভোটার তালিকায় রাখা হয়নি। তবে শুনানি শেষে আজ খসড়া ভোটার তালিকায় না থাকা ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমির ইফতেখার রহমান প্রশ্ন তুলেছেন, বোর্ড সভার অনুমোদন ছাড়াই এই ১৫ ক্লাবকে খসড়া ভোটার তালিকায় না রাখার চিঠি গেছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
চিঠিতে কে স্বাক্ষর করেছেন—একাধিকবার এই প্রশ্ন করেও নির্বাচন কমিশন সদস্যদের কাছ থেকে এর কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘১৫টি ক্লাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে আমরা তাদের আইনজীবী, মালিক ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে শুনানি করেছি। আমরা প্রত্যেকের বক্তব্য নোট নিয়েছি এবং সেগুলো পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। চিঠিটিতে কে স্বাক্ষর করেছেন, সে বিষয়টি বলতে গেলে আমাদের রেকর্ড দেখতে হবে কারণ আমরা অনেক কাগজপত্র দেখেছি।’
আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৪টায় চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘অনুগ্রহ করে আগামীকাল বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, হয়তো ভালো কিছুই দেখবেন।’
নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে কি না এমন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, তাঁরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবেই কাজ করছেন। বিসিবির নির্বাচনে আগে রিটার্নিং, প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসাররা বিসিবির কর্মী হতেন। কিন্তু এবার বিসিবির বাইরে থেকে এসব কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ‘আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছি এবং কোনো চাপের মধ্যে নেই’—বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই নির্বাচন কমিশনের অপর দুই সদস্য পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির প্রধান সিবগাত উল্লাহ এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক (যুগ্ম সচিব) কাজী নজরুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস