দেশবরেণ্য নাট্যকার প্রয়াত সেলিম আল দীনের অর্জিত বিভিন্ন পদক, পুরস্কার, নাটকের পাণ্ডুলিপি ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র সংরক্ষণের জন্য ফেনীতে তাঁর নামে থাকা জাদুঘরে জমা দিতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুসহ চারজনের বরাবর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অপর তিনজন হলেন মো. কামরুল হাসান, আবদুস সালাম ও নাসরিন সুলতানা বিলকিস।

সেলিম আল দীনের ভাইয়ের ছেলে ও সেলিম আল দীন কেন্দ্র, ফেনীর সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন শুভ্রর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান আজ বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ওই নোটিশ পাঠান।

নাট্যকার সেলিম আল দীন একজন বিশ্বমানের নাট্যকার, লেখক, গবেষক ও নাট্যনির্দেশক ছিলেন উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, নাট্যজগতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ‘নাট্যাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পদক ও পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। তাঁর জন্মস্থান ফেনীতে সেলিম আল দীন কেন্দ্র এবং সেই কেন্দ্রের অংশ হিসেবে ‘সেলিম আল দীন মিউজিয়াম’ রয়েছে।

নোটিশের ভাষ্য, এসব পদক, পুরস্কার, পাণ্ডুলিপি, মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী এবং তাঁর ব্যবহার্য সামগ্রী জাতীয় সম্পদ ও দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সংবিধানের ২৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার সংরক্ষণ করা এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলার পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তবে দুর্ভাগ্যজনক যে প্রয়াত সেলিম আল দীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগে নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, মো.

কামরুল হাসান, আবদুস সালাম ও নাসরিন সুলতানা বিলকিস তাঁর (সেলিম) সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন, ব্যবহার্য জিনিসপত্র, পাণ্ডুলিপি, পদক ও পুরস্কারগুলো নিজেরা নিজেদের কাছে নিয়ে রেখেছেন, যা ধীরে ধীরে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং প্রদর্শনের অভাবে সেলিম আল দীন ভক্ত, গবেষক ও অনুরাগীরা সেগুলো দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু প্রথম আলোকে বলেন, আইনি নোটিশ পেয়েছেন। আইনগতভাবে জবাব দেবেন। একুশে পদক সেলিম আল দীন নিজেই গ্রহণ করেন। তিনি মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন, যা তাঁর ছোট ভাই বোরহান উদ্দিন গ্রহণ করেন।

ফেনীতে সেলিম আল দীন কেন্দ্র এবং সেই কেন্দ্রের অংশ হিসেবে ‘সেলিম আল দীন মিউজিয়াম’ ২০০৯ সাল থেকে সচল বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কেন্দ্র ও জাদুঘরে অগণিত ভক্ত, অনুরাগী, দেশি-বিদেশি গবেষকেরা নিয়মিত যাতায়াত করলেও সেলিম আল দীনের মূল্যবান এসব পদক, পুরস্কার, পাণ্ডুলিপি ও তাঁর ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দেখা পাচ্ছেন না, যা সবাইকে মর্মাহত করছে।

সেলিম আল দীনের সমস্ত পদক, পাণ্ডুলিপি, পুরস্কার, মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র ফেরত দিতে নোটিশে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নোটিশদাতার আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিটসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন নোটিশদাতা। বিষয়টি অবহিত করতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরও নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র য জ ন সপত র স ল ম আল দ ন র গ রহণ কর প রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম

রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির করা মামলায় আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান আজ শনিবার এই আদেশ দেন।

বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে হাতিরঝিল থানা থেকে হিরো আলমকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় তাঁকে সিএমএম আদালতের ৯তলার এজলাসে নেওয়া হয়।

হিরো আলমের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁর জামিন চেয়ে শুনানি করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ২০০ টাকা মুচলেকায় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিকে হিরো আলমের মামলার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন এই মামলার বাদী রিয়া মনি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘হিরো আলমের একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। আমাকে যেমন বিনা কারণে জেল খাটিয়েছে, তারও জেলে থাকা উচিত।’

এর আগে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন এলাকা থেকে সাবেক স্ত্রী রিয়া মনির দায়ের করা মামলায় হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত হিরো আলম ও তাঁর সহযোগী আহসান হাবিব সেলিমের বিরুদ্ধে ১২ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানা অনুসারেই হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৩ জুন হাতিরঝিল থানায় রিয়া মনি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি হিরো আলম ও বাদী রিয়া মনির মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এরপর হিরো আলম বাদীকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। গত ২১ জুন বাদীর পরিবারের সঙ্গে মীমাংসার কথা বলে হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় একটি বাসায় ডাকা হয়। ওই সময়ে হিরো আলমসহ ১০ থেকে ১২ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বাদী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে তাঁরা বাদীর বর্তমান বাসায় বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করেন। এতে বাদীর শরীরে জখম হয়। এ সময় তাঁর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের হার চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুনরিয়া মনির মামলায় হিরো আলম গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্ব দেখছে শেখ হাসিনার বিচার
  • হৃদয় থেকে বলছি, শেখ হাসিনা খালাস পেলে খুশি হব: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
  • জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
  • দুই আসামিকে খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ
  • এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নে রুল
  • এস আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগসংক্রান্ত আদেশ স্থগিত
  • মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
  • ‎আইনজীবী মাসুদ মিয়ারমৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • আসামির বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশের চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত
  • রিয়া মনির মামলায় জামিন পেলেন হিরো আলম