রাজশাহীতে শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মৃৎশিল্পীদের রং-তুলির আঁচড়ে প্রাণ পাচ্ছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। শিল্পীদের যত্নে মাটি, খড় ও বাঁশের কাঠামোয় ফুটে উঠছে ঐশ্বর্যের রূপ। এসব প্রতীমা যাবে মণ্ডপে মণ্ডপে। 

এদিকে, মণ্ডপ সাজসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মীরা। নগরের বিভিন্ন স্থানে শেষ মুহূর্তের প্যান্ডেল তৈরির কাজও চলছে জোরেশোরে।

আরো পড়ুন:

দুর্গাপূজায় সারা দেশে র‍্যাবের ২৮১ টহল দল মোতায়েন

৯ দিন বন্ধ থাকবে বাংলাবান্ধায় আমদানি-রপ্তানি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। দেবীর আগমনী বার্তায় ইতোমধ্যেই ভক্তকুলে সাজ সাজ রব। প্রতিমাশালায় ঘুম নেই কারো। মৃৎশিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তিল তিল করে কাদামাটিতে গড়া প্রতিমায় ভরে উঠছে পালপাড়াগুলো।

রাজশাহী নগরের ধর্মসভা মন্দিরের গণেশ পাল, শেখেরচকের কার্তিক পাল, হড়গ্রামের অনন্ত পাল, রনজিত পাল, ষষ্ঠীতলার অরুণ কুমার পাল, আর রেশমপট্টির সুশীল পালের হাতে এখন প্রতিমা নির্মাণের ব্যস্ততা। তাদের মতো জেলায় প্রায় ৪০টি পাল পরিবার দিনরাত প্রতিমা গড়ছেন নিজেদের আঙিনায়। শেষ মূহুর্তে এখন রং-তুলির আঁচড়ে সেজে উঠছে দেবী দুর্গা।

প্রতিমা শিল্পী কার্তিক চন্দ্র পাল বলেন, “রং করার কাজ হচ্ছে। এখন খুব চাপ। আজ, কাল, ও পরশু সব প্রতিমা হস্তান্তর করতে হবে। এবার ২৮টা প্রতিমার কাজ করছি। এরমধ্যে তিনটি শহরের বাইরে যাবে। বাকি ২৫টা শহরের মধ্যেই বিভিন্ন মণ্ডপে চলে যাবে।”

দেবী দুর্গাকে শাড়ি পড়াচ্ছেন এক মৃৎশিল্পী

রাজশাহী মহানগর পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি সুব্রত রায় বলেন, “নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে জোরেশোরে প্রস্তুতি চলছে। প্রতিটি মণ্ডপে ১০ জনের স্বেচ্ছাসেবক দল থাকবে। এক্ষেত্রে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের সহায়তা করছেন।”

এবার রাজশাহী মহানগররে ৮০টি ও জেলায় ৪১২টি মিলে মোট ৪৯২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হচ্ছে। অধিকাংশ মণ্ডপই এখন প্রস্তুত, শিগগিরই মণ্ডপে শোভা পাবে প্রতিমাগুলো। উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, আনসার এবং সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা নজরদারি চালাচ্ছেন প্রতিমা নির্মাণ কেন্দ্র ও মণ্ডপগুলোতে।

গত মঙ্গলবার রাজশাহী নগরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন র‌্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ। পরে ধর্মসভা মণ্ডপে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো ধরনের হুমকি নেই জানিয়ে র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, “ষষ্ঠী পূজা থেকে মণ্ডপ এবং রাস্তাগুলোতে বিশেষ নজরদারি থাকবে। শুধু র‌্যাবই নয়, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। এ বছরও অনেক ভালো পরিকল্পনা করা হয়েছে। হুমকি পর্যবেক্ষণ করেছি। বিশেষ কোনো হুমকি নেই। তারপরও আমরা নিরাপত্তাব্যবস্থাকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছি। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলে আশা করি।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এই দেশে সব ধর্মের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারেন। বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি এত বেশি সহায়তা এবং সহযোগিতার মনোভাব আছে বলে আমি মনে করি না। গতবার মাদরাসার ছাত্ররাও মণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। এর তো তুলনা হয় না।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরের লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে চলছে

বন্দরের ঐতিহ্যবাহী লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে মেতে উঠেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। যে খাল দিয়ে এক সময় শীতলক্ষা-বহ্মপুত্র নদীতে সংযোগ ছিল।

সেই ঐতিহ্যবাহী খালটি অবৈধভাবে দখল করে পাঁকা স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছে ওই সকল ভূমিদস্যুরা।

খালটি দখল হয়ে যাওয়ার কারনে পয়নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয়রা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উল্লেখিত খাল দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা ।

এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে,  বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও  সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদ ও সানাউল্লাহ সানু এবং বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিনের মদদপুষ্ট হয়ে আদর্শ বিদ্যানিকেতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে খাল দখল করে রাস্তা বানিয়েছে।  

তেমনি ভাবে গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে  পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া  খালটি ভরাট করার কারনে  বন্দর ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের কদমতলীসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ড্রেজার দিয়ে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি ভরাট করতে গিয়ে সরকারি খাল দখল করে নিয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।

বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন সৈকত জানান,  এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে  একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। 

এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুদের কর্তৃক দখলকৃত খালটি উদ্ধার করে পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা  করেছে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।  
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে দুর্গোৎসব: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • দেবী দুর্গার বিদায়ের সুরে রাজশাহীতে প্রতিমা বিসর্জন
  • ঢাকঢোল বাজিয়ে চট্টগ্রামে প্রতিমা বিসর্জন, বৈরী আবহাওয়ায়ও মানুষের ঢল
  • অশুভের বিরুদ্ধে শুভ শক্তির জয় হোক: হাওলাদার
  • দর্পণ বিসর্জন: মণ্ডপে মণ্ডপে বিদায়ের সুর
  • উৎসবের আনন্দে ভরা পূজার মেলা
  • বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই পর্যটকের ঢল, বিকেলে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব
  • বিজয়া দশমীতে আজ শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব
  • ড. ইউনূসকে অসুর রূপে উপস্থাপন নিন্দনীয়: উপদেষ্টা 
  • বন্দরের লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে চলছে