গাছগালির সবুজে আচ্ছাদিত সরু পাকা সড়কের পাশেই মহল্লাটি। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রায় ৩৩টি পরিবারের বসবাস। এ মহল্লার প্রতিটি পরিবার ঢাক, ঢোল, ঢুগি, তবলা, খোলসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে আসছেন যুগ যুগ ধরে।

এই মহল্লার অবস্থান মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া দাসপাড়ায়। এখানকার বাসিন্দাদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। সারা বছর ঢাক–ঢোল তৈরি করলেও দুর্গাপূজার আগে এসব বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা বাড়ে। পূজায় প্রাণের স্পন্দন জাগে ঢাক–ঢোলের তালে।

সরেজমিন একদিন

বুধবার দাসপাড়ায় গিয়ে পুরুষ সদস্যদের ব্যস্ততা চোখে পড়ল। সংসারের কাজের পাশাপাশি নারীরাও তাঁদের সহযোগিতা করছেন। পুরুষদের কেউ কেউ শুকনো গাছের মোটা কাণ্ড থেকে হাতুড়ি-বাটাল দিয়ে ঢাক ও ঢোলের ফাঁপা আকৃতির কাঠামো তৈরি করছেন। কেউ তৈরি করা আকৃতিতে পালিশ ও রং করছেন। আবার কেউ তৈরি করা ফাঁপা আকৃতির দুই পাশে চামড়া লাগাচ্ছেন।

কারিগরদের সঙ্গে আলাপে জানা গেল, ঢাক–ঢোল তৈরিতে আম, তাল, কাঁঠাল, মেহগনি, কড়ই, নিম ও ডুমুরগাছের কাঠ ব্যবহৃত হয়। এসব বাদ্যযন্ত্র তৈরির জন্য প্রথমে গাছের মোটা কাণ্ড বেছে নেওয়া হয়। কাঠ শুকালে বাদ্যযন্ত্রের আকৃতি করা হয়। পরে এর দুই পাশে চামড়া টেনে বাঁধা হয় বাঁশ ও পাটের দড়ি দিয়ে।

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় কাঠ দিয়ে ঢাক–ঢোলের গড়ন তৈরি করে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়েছে। বুধবার উপজেলার বালিয়াখোড়া দাসপাড়ায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব দ যযন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব

অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্‌যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।

হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।

নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।

আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।

অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।

লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।

সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্‌যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।

শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানা গেল রাজামৌলির ছবির নাম, থাকছেন মহেশ বাবু-প্রিয়াঙ্কা
  • দেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদারের জয়ের গল্প আসছে
  • নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আদি নববর্ষ’ উদ্‌যাপন
  • মুগ্ধ করল নবান্ন উৎসবে ধান কাটার প্রতিযোগিতা
  • রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
  • নবান্নের পিঠায় সুবাসিত রাবি
  • ঘূর্ণির জাদুতে বিশ্বজয় 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারুণ্যের উৎসব রোববার
  • পয়লা অগ্রহায়ণে ‘নববর্ষ’ উদ্‌যাপন করবে ডাকসু
  • দিনভর আনন্দ আয়োজনে সাফল্য উদ্‌যাপন