নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র থাকবেই। পূজাকে কেন্দ্র করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হতে পারে। যত দিন রাষ্ট্র থাকবে, যত দিন রাজনীতি থাকবে, তত দিন ষড়যন্ত্র থাকবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য রাজনীতিবিদদের দূরদর্শিতার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন।

আজ সোমবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায় নিজ বাড়িতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দলীয় নেতা-কর্মী ও কেরানীগঞ্জবাসীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘দেশের হাজার হাজার পূজামণ্ডপের মধ্যে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নেতিবাচক দিক দেখতে পাচ্ছি না। আমরা আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবেই শারদীয় দুর্গা উৎসব উদ্‌যাপিত হবে।’

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ভাষ্য, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে জাতির সামনে যে অঙ্গীকার করেছে, তাতে যদি তারা অনড় থাকে, তাহলে কেউ নির্বাচন আটকে রাখতে পারবে না। নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা যারা তৈরি করছে, তারা সাম্প্রদায়িক দুশমন।

একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র দেশের নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য একটি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ব্যবহার করছে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, ‘এই সাম্প্রদায়িক দুশমন যদি শক্তি সঞ্চয় করে, তাহলে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র—সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই আমরা যাঁরা রাজনীতি করি, তাঁরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং সরকারের যদি দৃঢ়তা থাকে, তাহলে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে হবে। এই সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে এমন একটি অজানা আশঙ্কার উদ্ভব ঘটবে এবং এমন ধরনের ঘটনা ঘটবে, যা জাতি কখনো প্রত্যাশা করে না।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাড়িতে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পরিবার বড় পরিসরে ধুমধাম করে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করে। তাই আমি আজ তাঁদের পূজার শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি। পূজার সময় গয়েশ্বর রায় ও তাঁর পুত্রবধূ নিপুণ রায় আশপাশের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন, যাতে তাঁরা উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা পালন করতে পারেন। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব সম্প্রদায় মিলে আমরা একটি পরিবার। এ দেশ আমাদের সবার।’

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে সেলিমা রহমান বলেন, ‘১৭ বছর আমরা খুন, গুম, হামলা, মামলা, অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার হয়েছি। বিগত সরকার হিন্দু সম্প্রদায়কে তাদের ভোটার বলত। অথচ বাস্তবে তারাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের সম্পদ লুটপাট, তাদের অসম্মান ও হেয় করত। আমরা ১৭ বছর আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছি। এই ১৭ বছরে মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ ধ্বংসের দিকে গেছে। তাই আজ চারদিকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা। আমাদের প্রত্যাশা, নির্বাচনের পর তরুণেরা বাংলাদেশের শিকড়কে ধারণ করে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সমাজ বিনির্মাণ করবে, যাতে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই শান্তিতে বসবাস করতে পারে।’

দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ সময় গয়েশ্বর রায়ের পুত্রবধূ ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় উপস্থিত থেকে অতিথিদের স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া, বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো.

জামালউদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ, সাবেক ছাত্রনেতা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী, ঢাকা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকাররম হোসেন এবং ঢাকা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জুয়েল মোল্লা প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ষড়যন ত র র জন ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক

রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় উপজেলার কোদালপুর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে কোদালপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বহাল, ২ মহাসড়কে অবরোধ শিথিল

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিরপুর থানায় ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রধান আসামি করে গণঅভ্যুত্থানে নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে মামলা থেকে নিরপরাধ বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।

গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য তারেক আজিজ মোবারক ঢালী বলেন, ‘‘যেসব বিএনপি নেতাকর্মীর নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তারা সকলে বিগত দিনে স্বৈরাচারি হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে আমার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।’’ 

কোদালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম সালু মৃধা বলেন, ‘‘বিগত দিনে বিএনপি করার কারণে আমরা মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি, হামলার শিকার হয়েছি। এখন আবার আমাদের নাম একই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এটি ঘৃণিত ষড়যন্ত্র, এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’’ 

ভুক্তভোগী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মৃধা বলেন, ‘‘আমি বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। এমনকি, জুলাই আন্দোলনেও অংশ নিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত ২০ সেপ্টেম্বর আমার নাম মিরপুর থানার মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’’ 

তিনি এর তীব্র নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান। 
 

ঢাকা/আকাশ/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় ড্যাবের এক নেতার বিরুদ্ধে আরেক নেতার অনুসারীদের মানববন্ধন
  • জুলাই সনদের দ্রুত আইনি ভিত্তি দিতে হ‌বে: মাওলানা ইমতিয়াজ
  • গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক
  • জনগণের দাবি অবজ্ঞা করবেন না: খেলাফত মজ‌লিস
  • পিআরের নামে জামায়াত ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে: কায়সার কামাল
  • রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে না দেওয়ার আহ্বান তানিয়া রবের