বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দেওয়া বক্তব্যে পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন বজলুর রশীদ ফিরোজ। ‘খাগড়াছড়িতে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পাহাড়ি আদিবাসীদের অধিকার হরণ, বিচারহীনতা বন্ধ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগ গ্রহণের দাবিতে’ এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে স্বাধীনতার পর থেকে একটি বিধ্বংসী জাতি নিধনপ্রক্রিয়া চলমান। স্বাধীনতা–পরবর্তী প্রতিটি সরকার এই নিধনের জন্য দায়ী। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামকে আরেকটি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সঙ্গে তুলনা করেন। পাশাপাশি সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনা ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হওয়া হামলার বিষয়ে একটি উচ্চতর কমিটি গঠন করে তদন্ত করার দাবি জানান।

বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক মুশতাক হোসেন বলেন, ‘এবারের উসকানিতে রক্ত ঝরেছে আমাদের পাহাড়ি আদিবাসী বাচ্চাদের। তাই আমি অনুরোধ করব, এই উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে আপনারা শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এরা চায় না বাংলাদেশে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করুক।’

খাগড়াছড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহতের কথা উল্লেখ করা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল। তিনি বলেন, ‘এক স্বৈরাচার চলে গেছে, কিন্তু আরেক স্বৈরাচার চেয়ারে অধিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে যদি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে না পারেন, তাহলে আমরা আপনাদেরও ক্ষমতায় থাকতে দেব না।’

খাগড়াছড়িতে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গোটা বাংলাদেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করে মোকাবিলা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী শামসুল হুদা।

প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আটটি দাবি তুলে ধরেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন। দাবিগুলো হলো কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং তার পরিবারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত; প্রাণহানির ঘটনায় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন; নিহত ও আহতদের পরিবারের সুরক্ষা; দীর্ঘদিনের সামরিকীকরণ নীতি পর্যালোচনা, অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা; হত্যার শিকার পরিবারকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্য দীপায়ন খীসার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী খায়রুল চৌধুরী, বিএমএসসির ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি নুমংপ্রু মারমা প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঘটন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ