জিটিওর মেহদি হাসানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়া, শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয়, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচন আয়োজনে কেন দেড় বছর সময় লাগছে, তার ব্যাখ্যা এই সাক্ষাৎকারে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। সাক্ষাৎকারের এই অংশ প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য প্রশ্নোত্তর আকারে হুবহু তুলে ধরা হলো।

মেহদি হাসান: আপনার অন্তর্বর্তী সরকার এখন এক বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। আপনি বলেছেন যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটি আরও পরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপনি এটিকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এগিয়ে এনেছেন। কিন্তু.

..

অধ্যাপক ইউনূস: ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে। রমজানের কারণে।

আরও পড়ুনআওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে যা বলেছেন অধ্যাপক ইউনূস৪ ঘণ্টা আগে

মেহদি হাসান: বুঝেছি। কিন্তু আপনি এই সাক্ষাৎকারের শুরুতে যেমন বলেছেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখনই পদক্ষেপ চান—আগামীকাল নয়, ছয় মাস পরেও নয়। সমালোচকেরা বলছেন, এটি অনেক দেরি। নির্বাচনের জন্য আরও ছয় মাস অপেক্ষা করাটা অনেক দীর্ঘ সময়। মানুষ অস্থির হয়ে পড়ছেন। আমরা কেন আগে নির্বাচন করতে পারছি না? নেপালে, যেখানে এই বছরে কিছুদিন আগে সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে, সেখানকার অন্তর্বর্তী নেতা মাত্র ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশের একটি নির্বাচনের জন্য কেন ১৮ মাস লাগছে বা লাগবে?

অধ্যাপক ইউনূস: অবশ্যই, আপনি বললেন, মানুষ বলছে অনেক সময় লাগছে। এমন মানুষও আছে, যারা বলছে ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন। সুতরাং মানুষ সব ধরনের কথা বলছে। আপনি থাকুন, নির্বাচন কেন? কার নির্বাচন দরকার?

মেহদি হাসান: ঠিক আছে, কিন্তু তাঁরা সেই লোক, যাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। যাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাঁরা বলছেন, আমরা কেন আরও দ্রুত নির্বাচন করতে পারিনি? দেরি কেন হচ্ছে?

অধ্যাপক ইউনূস: তারা যখন এ কথা বলে, তখন এটা গণতন্ত্রের বিষয় নয়। তারা কথা বলে সুশাসন নিয়ে। আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত শাসনব্যবস্থা দেখতে চাই, তাই আপনি থাকুন। কারণ, আমরা নির্বাচনের পর আবার বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে চাই না। আমি যা বলতে চাই, তা হলো আপনি একটি বক্তব্য তুলে ধরেছেন, অন্য বক্তব্যও আছে। কোন বক্তব্যটি বেশি শক্তিশালী...।

আরও পড়ুনহিন্দুদের ওপর সহিংসতা বাড়েনি, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে: প্রধান উপদেষ্টা১ ঘণ্টা আগে

মেহদি হাসান: কিন্তু আপনি কি আজ আমাদের দর্শকদের বলতে চান, নির্বাচনে যেতে এত সময় লাগার কারণ কী?

অধ্যাপক ইউনূস: হ্যাঁ, আপনি নেপালের উদাহরণ দিয়েছেন। নেপালের সরকার আমাদের পরিভাষায় একধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অর্থাৎ আপনার দায়িত্ব একটি নির্বাচন আয়োজন করা। তাই সম্ভবত এটাই তাদের কাজ।

মেহদি হাসান: আপনারা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নন?

অধ্যাপক ইউনূস: আমরা নই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার।

মেহদি হাসান: ঠিক আছে।

অধ্যাপক ইউনূস: আমাদের কত দিন থাকতে হবে, তা কেউ নির্ধারণ করে দেয়নি।

মেহদি হাসান: ঠিক আছে।

অধ্যাপক ইউনূস: আমরা কত দিন থাকব, সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের বোঝাপড়া আছে যে আমাদের তিনটি কাজ রয়েছে। একটি হলো সংস্কার, আরেকটি বিচার ও শেষটি হলো নির্বাচন।

মেহদি হাসান: ঠিক আছে।

অধ্যাপক ইউনূস: তাই আমরা সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছি। এটি একটি বড় এজেন্ডা।

মেহদি হাসান: হ্যাঁ।

অধ্যাপক ইউনূস: কারণ, আপনি যদি শুধু একটি নির্বাচন করেন, তবে সেই পুরোনো জিনিসগুলো আবার ঘটবে। ভিন্ন নামে, ভিন্ন চিত্রে, আরও অনেকভাবে। আমাদের সংস্কার প্রয়োজন। আপনি যদি শুধু নির্বাচন করেন, তবে সবকিছুর একই পুনরাবৃত্তি হবে। কারণ, আইন, নিয়ম, পদ্ধতি একই থেকে যাবে।

মেহদি হাসান: হ্যাঁ।

অধ্যাপক ইউনূস: তাই ছাত্রদের নেতৃত্বে জনগণের একটি দাবি ছিল সংস্কার করা। নিশ্চিত করা যে সব শিকড় উপড়ে ফেলা হয়েছে, যাতে আপনার একটি ভিন্ন ধরনের কাঠামো থাকে, যেন এই জিনিসগুলো ফিরে আসতে না পারে। ফ্যাসিবাদ যেসব পথে প্রবেশ করে, সেই পথগুলো বন্ধ করে দেওয়া, যাতে তারা আর আসতে না পারে। তাই এটি আমাদের এজেন্ডা। এটি একটি বড় এজেন্ডা। তারপর বিচার। সব ঘটনার জন্য দোষী সব ব্যক্তির বিচার, যা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তাই ওই বিচার করার জন্য আমাদের একটি বিশেষ আদালত স্থাপন করতে হবে এবং যে ফলাফল আসে, তা দেখাতে হবে। আদালতব্যবস্থা থেকে দৃশ্যমান ফলাফল আসতে হবে যে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয়টি হলো নির্বাচন। তাই আমাদের এই তিন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, শুধু একটি নয়। নেপালে তারা শুধু নির্বাচন করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বছর থ ক ন র জন য বল ছ ন আম দ র র একট আপন র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে  প্রতারণা করেছে: কম. সাঈদ

নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনে শক্তির জানান দিলেন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কমরেড সাঈদ আহমেদ। সদর-বন্দরবাসী কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করে নগরীতে শোডাউনের মাধ্যমে ধানের শীষের প্রচারণা করলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ এই নেতা।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর)  বিকেলে শহরের আমলাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের প্রধান এই নেতা।

মিছিল ও ধানের শীষের প্রচারণা শেষে কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহু দুঃখজনক ও বিতর্কিত ঘটনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার ও দমন পীড়নের অভিযোগ যেভাবে উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর স্মৃতি আজও জাতির মনে গভীর ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে।

১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আমাদের দলের ৪৪ জন নেতাকে হত্যার অভিযোগ, কিংবা ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে আটক করে পরে হত্যার ঘটনাকে ঘিরে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি এসবই ইতিহাসে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে, তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহিন আলীর মৃত্যুকেও অনেকেই রাজনৈতিক নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমরা ইতিহাসের দাবি হিসেবে তুলে ধরি জবাবদিহির প্রয়োজন থেকে, সত্য উন্মোচনের প্রয়োজন থেকে। কারণ যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অতীত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, তবে তা একদিনে শেষ করা যাবে না।

দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেভাবে দমন-পীড়ন হয়েছে অনেকে মনে করেন, তার নজির পৃথিবীর ইতিহাসেই খুব কম রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই আমরা, দেশ ও জনগণের স্বার্থে, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।

কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছেন এ অভিযোগ জনগণের মুখেই শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের গাড়ি থামিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ঘটনায় তিনি নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলেও, সেদিন ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

তিন জানান, নারায়ণগঞ্জকে জেলা করা এবং তুলারাম কলেজকে সরকারি করার দাবিতে সেই স্মারকলিপি তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রদান করেছিলেন সেই সময় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিল না।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ যেভাবে প্রতারণার জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও ঠিক সে ভাবেই দেবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, তালবাহানা, কিংবা অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা কোনোটাই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এবং জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে যেভাবে অরজগতা সৃষ্টি করেছিল (১১ ডিসেম্বরে) আমাদের পার্টির ৪৪ জন নেতাকে রাজশাহীতে হত্যা করেছিল রক্ষী বাহিনীর মঞ্জুরের নেতৃত্বে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, ১৯৭৫ সালের (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে ধরে এনে ঢাকা সাভারে নিয়ে শেখ মুজিবের রকিবাহিনী হত্যা করেছিল, আরো হত্যা করেছিল পার্লামেন্টে শাহিন আলিকে শেখ মুজিব নিজ হাতে, 

তিনি আরও বলেন, যদি আমরা শেখ হাসিনার ইতিহাস বলতে চাই, বলে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নৃশংস গণহত্যা পৃথিবীর বুকে আর কোন স্বৈরাচার করে নাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে সারা পৃথিবীর বুকে নজির হয়ে থাকবে, আমরা চাই দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের আপোসিন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছে, প্রেসিডেন্টের গাড়ি সে থামিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল, শামীম ওসমান মিথ্যা কথা বলেছে, সেই দিন শামীম ওসমান কোনভাবেই এর সাথে জড়িত ছিল নাভ

ঐদিন আমি নিজে জিয়াউর রহমান কে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জ কে জেলা করার জন্য, তোলারাম কলেজকে সরকারি করার জন্য, সেই সময় শামীম ওসমানের অস্তিত্ব ছিল না, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ঠিক ওইভাবেই তাকে এর জবাব দিয়ে দিয়েছি, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণকে নিয়ে কোন তালবাহানা কোন অগ্নিসংযোগ যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে চায় তাহলে আমরা কোন ছাড় দিব না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল এর) পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মেহেবুব, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড নওশাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কমরেড নুরুলদীন ঢালী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড সুমন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড জাকির শিকদার, আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমরেড গোলজার প্রধান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড শাকিল ও সভাপতি বন্দর থানা ইরফান খন্দকার ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভ্রান্তি-হতাশা-অনিশ্চয়তার মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে: ফখরুল
  • নানা দাবির নামে নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে: মির্জা ফখরুল
  • বিএনপির নতুন স্লোগান ‘অর্থনৈতিক গণতন্ত্রায়ণ’: আমীর খসরু
  • সেই গণতন্ত্র যেন আর কোন ফ্যাসিবাদের জন্ম না দেয় : মামুন মাহমুদ
  • পারভেজের কথায় ‘বিজয় নেবে ধানের শীষ’
  • শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে  প্রতারণা করেছে : কম. সাঈদ
  • শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে  প্রতারণা করেছে: কম. সাঈদ