‘কালো হেলমেট পরা দুজন বাইকে এসে ককটেল ফাটিয়ে চলে যায়’
Published: 10th, November 2025 GMT
প্রবর্তনার সামনে আজ সোমবার সকালে যখন ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তখন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠানে ককটেল বিস্ফোরণ হয় সকাল সাতটার একটু আগে। এর মূল ফটকের সামনে একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন একজন নিরাপত্তারক্ষী। রাস্তায় লোকজনও ছিল কিছু। সেই সময় ইকবাল রোডের দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি ককটেল ফাটিয়ে চলে যান। যদিও তার আগে এই দুই ব্যক্তি কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে, বিস্ফোরণের আগে–পরের পরিস্থিতি তুলে ধরেন প্রবর্তনার ফাইন্যান্স ম্যানেজার মো.
‘প্রবর্তনা’ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান।
মো. তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজে যা দেখেছি, সকাল সাতটার একটু আগে দুজন প্রবর্তনার মূল ফটকের পাশে এসে দাঁড়ায়। তারপর দুজন দুই পাশে তাকাতে থাকে। এ সময় প্রবর্তনার একজন নিরাপত্তারক্ষী ফটকের উল্টো দিকে ছিলেন। দেখা যায়, এ সময় দুই যুবক কোনো কিছু না করে বাইক নিয়ে চলে যায়। খানিকক্ষণ পরে ইকবাল রোডের দিক থেকে তারা বাইক চালিয়ে আসতে থাকে। প্রবর্তনার ফটকের কাছাকাছি এসে ককটেল বা এ রকম কোনো বস্তু ফেলে। সেখানে ধোঁয়া ওঠে এবং প্রচণ্ড শব্দ হয়।’
মো. তানভীর আহমেদ বলেন, বিস্ফোরণের এ সময় রাস্তায় লোকজন চলাচল করছিল। এতে যে কেউ আঘাত পেতে পারত। কিন্তু কিছু হয়নি।
প্রবর্তনার সামনের অংশউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের নির্বাচনে ব্রাজিলের মডেল কীভাবে ‘২২ বার ভোট’ দিলেন
ভারতে ভোট জালিয়াতির ঘটনায় ব্রাজিলের এক মডেলের নাম জড়িয়ে গেছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানার বিভিন্ন ভোটার কার্ডে ভোটারের ছবির জায়গায় লারিসা নেরি নামের ওই মডেলের ছবি দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে নামের জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন হিন্দু নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
হরিয়ানায় গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১০টি কেন্দ্রে ২২ বার ভোটার কার্ডে নেরির ছবি ব্যবহার করে ভোট দেওয়া হয়েছে।
ভারতের বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, এ ধরনের নকল ভোটার কার্ডগুলো হরিয়ানায় গত বছরের নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।
রাহুল বলেন, ‘তিনি (ব্রাজিলীয় মডেল) হরিয়ানায় ২২ বার ভোট দিয়েছেন। তিনি হরিয়ানার ভিন্ন ভিন্ন ১০টি বুথে ভোট দিয়েছেন এবং তাঁর নামের জায়গায় সীমা, সুইটি, সরস্বতী, রেশমি, বিমলাসহ বিভিন্ন নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এটি কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রিত কর্মকাণ্ড। কেউ এই নারীকে ভোটার তালিকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ঢুকিয়েছে, বুথ পর্যায়ে নয়।’
ভারতের বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, এ ধরনের নকল ভোটার কার্ডগুলো হরিয়ানায় গত বছরের নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই নারী কে? তাঁর বয়স কত? তিনি কোন রাজ্য থেকে এসেছেন? আমাকে কিছু ধারণা দিন।’
রাহুল বলতে থাকেন, ‘তিনি (ওই নারী) ব্রাজিলের নাগরিক। একজন ব্রাজিলীয় মডেল। এটি একটি স্টক ফটোগ্রাফ।’
একজন ব্রাজিলীয় নারীর নাম কীভাবে হরিয়ানার নির্বাচনী তালিকায় যুক্ত হলো, সে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল।
যে নারীকে নিয়ে এত কিছু, সেই ব্রাজিলীয় মডেল বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁর ব্যবহৃত ছবিটিও পুরোনো।
অনলাইনে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে ব্রাজিলীয় মডেল নেরি বলেন, ‘তারা আমার পুরোনো ছবি ব্যবহার করছে। এটা একটা পুরোনো ছবি। আমার বয়স তখন ১৮ বা ২০ বছর ছিল। আমি জানি না, এটা কোনো নির্বাচন বা ভোটসংক্রান্ত কিছু কি না…এবং সেটা ভারতে। উফ! তারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য আমাকে ভারতীয় হিসেবে দেখাচ্ছে। এ কেমন পাগলামো! কী উদ্ভট ব্যাপার! আমরা কোন দুনিয়ায় আছি?’
রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস দল ২০২৪ সালে হরিয়ানায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল। তবে তারা ওই নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে হেরে যায়। তখন কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুধু ১১ হাজার ২০০ ভোটের ব্যবধান ছিল।রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, হরিয়ানার ২ কোটি নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে প্রতি আটজনের একজন ভুয়া।
কংগ্রেসের নেতা বলেন, এক পর্যালোচনায় বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে—একই ছবির বারবার ব্যবহার, একই ঠিকানায় একসঙ্গে বহু ভোটারের নিবন্ধন এবং বিভিন্ন রাজ্যের ভোটার তালিকায় একই ব্যক্তির নাম থাকা।
রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেস ২০২৪ সালে হরিয়ানায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল। জরিপও সেই কথা বলছিল। তবে তারা ওই নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে হেরে যায়। তখন কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুধু ১১ হাজার ২০০ ভোটের ব্যবধান ছিল।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি, ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি।’
রাহুল অন্য একজন নারীর ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেন, ২২৩ জন ভোটারের জায়গায় ওই নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে এবং দুটি ভোটকেন্দ্রে এ ভোটগুলো দেওয়া হয়েছে। ভোটার পরিচিতি কার্ডে ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানা, নাম ও বয়স উল্লেখ করা হয়েছে।
রাহুল বলেন, ‘প্রথমবার যখন আমি এই তথ্য জানতে পেরেছিলাম তখন আমি একদমই বিশ্বাস করতে পারিনি। বিভিন্ন সূত্রের কাছ থেকে এ ব্যাপারে যাচাই করার জন্য আমি দলের সবাইকে বলেছিলাম। আজ আপনারা যা দেখছেন, তা সেই প্রক্রিয়ারই ফল।’
এ কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, ভারতের নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছভাবে কাজ করছে না। তারা বিজেপিকে সহায়তা করছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভোটার তালিকায় জালিয়াতি করছে।
তবে নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি নির্বাচনের অনেক আগেই সব রাজনৈতিক দলকে ভোটার তালিকা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কেউ কোনো আপত্তি জানায়নি।