জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের সময় প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পাল্টাপাল্টি অবস্থানের ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এমন কার্যক্রম প্রমাণ করে যাঁরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি এই দলগুলোর কোনো শ্রদ্ধা নেই। এমনকি ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বেলায়ও এটাই সত্য।

রাজনৈতিক দলগুলো এখন দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতিগত মতপার্থক্যকে সামনে এনে এবং নিজেদের পছন্দমতো পদ্ধতিকে সবার ওপর চাপিয়ে দিয়ে এরা প্রমাণ করতে চাইছে, তারাই প্রভাবশালী দল। এই প্রভাব বিস্তারকারী শক্তি প্রদর্শন করে নির্বাচনের আগেই তারা বিজয়ী দল হিসেবে ভোটের মাঠের দখল নিতে চায়।

আরও পড়ুনসরকার যেদিকে যাবে, পরিস্থিতি সেদিকে ঘুরবে৪১ মিনিট আগে

ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, গণভোট, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বৈত ক্ষমতা তথা সংসদ সদস্যের ক্ষমতা এবং কনস্টিটুয়েন্ট পাওয়ার (গাঠনিক ক্ষমতা) নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতভেদ ছিল না। মতভিন্নতা ছিল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে। অধিকাংশ দল চেয়েছে উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) প্রশ্নে বিএনপি তাদের অবস্থান থেকে যেন সরে আসে, অর্থাৎ উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি যেন মেনে নেয়। কিন্তু এখানে বিএনপি নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছে। নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে সমাধান করতে পরে ঐকমত্য কমিশন চতুরতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। সরকারও এ ক্ষেত্রে সমাধানের পথে না গিয়ে দায়িত্বহীন আচরণ করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে তার বৈশিষ্ট্য এবং দায়িত্ব মনে রাখতে হবে। কতগুলো দায়িত্ব দিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। তারা কোনো রাজনৈতিক দল হিসেবে ক্ষমতা অর্জন করেনি। সব দলের সমর্থনে তারা কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের কাজ করছে। তারা কোনো দলের পক্ষ বা কোনো দলের প্রতিপক্ষ হতে পারবে না। সরকারকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে, দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

আরও পড়ুনসরকারের সিদ্ধান্ত না মানলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠবে১ ঘণ্টা আগে

এখন সরকার বলছে, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা বসে যেন ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দেয়। সরকারের উচিত ইনফরমালি হলেও বিবদমান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বসা, আলোচনা করা। সরকার যদি নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে, তাহলে একটা সমাধান আসবে।

আর যদি সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে কোনো সমাধানে না আসতে পারে কিংবা এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে না পারে, তাহলে তা জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। সরকারকে মনে রাখতে হবে, উদ্ভূত জটিল পরিস্থিতির কারণে আগামী নির্বাচন যদি ফেব্রুয়ারিতে না হয়, তাহলে এর দায়দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলো নেবে না, এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

হাসনাত কাইয়ূম: সভাপতি, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

আরও পড়ুনন্যূনতম ঐক্য না হলে নির্বাচন শঙ্কায় পড়বে৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ পর স থ ত সরক র র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

কথায় কথায় রাস্তায় যাবেন, বৃহত্তর দল যদি নামে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু

বাংলাদেশের মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না, স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে তবে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি আবার তার প্রতিবাদে আবার রাস্তায় যায় তাহলে কি হবে সংঘর্ষ হবে না? বৃহত্তর দল বাংলাদেশে যদি রাস্তায় নামে এগুলোর প্রতিবাদে, আমাদের সংঘর্ষ হবে। এইজন্য আমরা কি শেখ হাসিনা বিদায় করেছি?’

আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ট্রেস কনসালটেন্সি নামে এক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলো ‘অবসেসড’ হয়ে গেছে বলেন আমীর খসরু। কিছু কিছু রাজনীতিবিদদের মধ্যে এ ধরনের মনমানসিকতা ডেভেলপ করে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্বাস করতে হবে যে যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে তার বাইরে গিয়ে আবার নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে কিন্তু ঐকমত্যের শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে না। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য হতে হবে।’

প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রাজধানীর একটি হোটেলে আজ শনিবার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চালকের আসনে সরকার, সিদ্ধান্তও তাদের দিতে হবে
  • সংস্কার আটকে গেলে নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হবে: এনসিপি নেতা আখতার
  • মানুষের পারিবারিক সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য আটকে আছে: আমীর খসরু
  • যে বিষয়গুলো আলোচনাতেই আসে নাই, সেগুলোও ঢুকিয়েছে ঐকমত্য কমিশন: সেলিমা রহমান
  • অন্তর্বর্তী সরকার কেন জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করতে পারল না
  • কথায় কথায় রাস্তায় যাবেন, বৃহত্তর দল যদি নামে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু
  • নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে কিছু থিঙ্কট্যাংক বলছে, জুলাই সনদে নারী, কৃষক, শ্রমিক নেই: প্রেস সচিব
  • মতৈক্য হবে না, কারণ দলগুলো বিভিন্ন মহলের স্বার্থ দেখে: ফরহাদ মজহার
  • ঐকমত্যের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই: আমীর খসরু