ওয়ান ব্যাংকে নতুন এমডির যোগদান, সাউথইস্ট ও সাউথ বাংলায় এ মাসেই নতুন এমডি
Published: 10th, November 2025 GMT
বেসরকারি খাতের তিন ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আসছে। ইতিমধ্যে ওয়ান ব্যাংকে যোগ দিয়েছেন নতুন এমডি। সাউথইস্ট ব্যাংক ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকে (এসবিএসি) নতুন এমডির অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাঁরা চলতি মাসেই যোগ দেবেন। ব্যাংক খাত সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ওয়ান ব্যাংকে এমডি পদে গতকাল রোববার যোগ দিয়েছেন মুহিত রহমান। তিনি বহুজাতিক স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যক্রমে এমডি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি এই ব্যাংকে যোগ দেন। এর আগে ছিলেন আমেরিকান এক্সপ্রেসে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যক্রমে একাধিক এমডি রয়েছেন, তবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) একজন। গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়ান ব্যাংকের এমডি মো.
এদিকে সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেন গত ২৮ জুলাই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এর আগে চলতি বছরের ৪ মে নুরুদ্দিন মো. ছাদেক হোসেনকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। পদত্যাগের পর থেকে ব্যাংকটির নতুন এমডি খোঁজা হচ্ছিল। ব্যাংকটির নতুন এমডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. খালিদ মাহমুদ খান। তিনি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত এমডি ও প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা। চলতি মাসেই তিনি ব্যাংকটিতে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকে (এসবিএসি) এমডি হাবিবুর রহমান গত মার্চে পদত্যাগ করেন। এখন এই ব্যাংকের এমডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এস এম মইনুল কবির। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে কর্মরত। তিনিও চলতি মাসেই এমডি পদে যোগ দেবেন।
এদিকে মেঘনা ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন হওয়ার পর এমডি কাজী আহ্সান খলিল গত ২৭ জুলাই পদত্যাগ করেন। জানা গেছে, এমডি পদের জন্য একাধিক ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেয় পর্ষদ। বেসরকারি খাতের একটি শীর্ষ ব্যাংকের বর্তমান এমডিকে এই পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে, যা এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন পেলে নতুন এমডি পাবে মেঘনা ব্যাংক।
জানা গেছে, আরও কয়েকটি ব্যাংকে নতুন এমডি নিয়োগ হবে। কারণ, বর্তমানে এমডি পদে থাকা অনেকের বয়স তখন ৬৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে। নির্ধারিত বয়সসীমা পার হলে নতুন এমডি খোঁজা একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ পরিবারের আর্থপাচার তদন্তে বি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি ব্যাংক সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, তার পুত্র রাইয়ান কবির, পুত্রবধূ নুসরাত নাহার এবং এ কাজে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ার ক্রয় এবং সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের আড়ালে ঋণ জালিয়াতি, সন্দেহজনক লেনদেনসহ বিবিধ অনিয়মের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে পাচার করার অভিযোগ তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
এ লক্ষ্যে বিএসইসি পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় কিছু নির্দেশনাসাপেক্ষে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে কমিশন।
সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। তদন্তের বিষয়ে আভিভা ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক রানা দাশ।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) গোয়েন্দা প্রতিবেদনে প্রি-আইপিও প্লেসমেন্ট শেয়ার ক্রয় এবং সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের আড়ালে ঋণ জালিয়াতি, সন্দেহজনক লেনদেনসহ বিবিধ অনিয়মের সঙ্গে আলমগীর কবির, তার ছেলে রাইয়ান কবির, পুত্রবধূ নুসরাত নাহার এবং উক্ত কাজে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
বিগত সরকারের আমলে আইন বা বিধিবিধান লঙ্ঘন করা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিএসইসির তদন্তের আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করা প্রয়োজন। এ কারণে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স ১৯৬৯-এর ধারা ২১, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন তিন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
তদন্ত কমিটি যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে
বিএসইসির কাছে পাঠানো বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লিখিত সাউথইস্ট ব্যাংকের অভিযুক্তরা কি পরিমাণ টাকা আত্মসাত করেছে সে বিষয়টির অনুসন্ধান ও তদন্ত করা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ২০ জুলাই সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন আলমগীর কবীর। ব্যক্তিগত ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তিনি। ২০০৪ সাল থেকে টানা ২০ বছর সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন আলমগীর কবির। ব্যাংকের নীতিনির্ধারণী পদে থেকে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পর্ষদে যুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আসে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এম এ কাশেম। তবে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করলেও আলমগীর কবির এতদিন ব্যাংকটির পরিচালক হিসেবে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ নভেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বে লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেনে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে আলমগীর কবিরকে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করে বিএসইসি। একই ঘটনায় তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগমকে পাঁচ কোটি টাকা ও জামাতা তুষার এল কে মিয়াকে আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া গত ১৪ জুলাই আলমগীর কবিরকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
ঢাকা/তারা