গুলিতে নিহত মামুন কোর্টে গিয়েছিলেন হাজিরা দিতে
Published: 10th, November 2025 GMT
পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সাইফ মামুন (৫৫)। তিনি একজন ব্যবসায়ী। হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে তিনি কোর্টে গিয়েছিলেন।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে তাকে গুলি করে দুর্বত্তরা। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক দুপুর ১২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সাইফের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মোবারক কলোনী এলাকায়। তার বাবার নাম এসএম ইকবাল হোসেন। বাড্ডার আফতাবনগর এলাকায় একটি বাসায় স্ত্রী ও ২ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন।
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখা যায় একজন ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপর পড়ে আছেন।
“আমরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢামেকে পাঠানো হয়, পরে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন,” বলেন তিনি।
নিহতের স্ত্রী রিপা আক্তার বলেন, “আমার স্বামী আজ কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বের হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা আমার স্বামীকে গুলি করে। পরে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসে স্বামীর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাই।”
রিপা আক্তার বলেন, “আমার স্বামী বিএনপি সমর্থক ছিলেন এবং পাশাপাশি ব্যবসা করতেন তিনি।”
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবগত করা হয়েছে।”
ঢাকা/বুলবুল/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের নির্বাচনে ব্রাজিলের মডেল কীভাবে ‘২২ বার ভোট’ দিলেন
ভারতে ভোট জালিয়াতির ঘটনায় ব্রাজিলের এক মডেলের নাম জড়িয়ে গেছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হরিয়ানার বিভিন্ন ভোটার কার্ডে ভোটারের ছবির জায়গায় লারিসা নেরি নামের ওই মডেলের ছবি দেখা গেছে। এ ক্ষেত্রে নামের জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন হিন্দু নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
হরিয়ানায় গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১০টি কেন্দ্রে ২২ বার ভোটার কার্ডে নেরির ছবি ব্যবহার করে ভোট দেওয়া হয়েছে।
ভারতের বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, এ ধরনের নকল ভোটার কার্ডগুলো হরিয়ানায় গত বছরের নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।
রাহুল বলেন, ‘তিনি (ব্রাজিলীয় মডেল) হরিয়ানায় ২২ বার ভোট দিয়েছেন। তিনি হরিয়ানার ভিন্ন ভিন্ন ১০টি বুথে ভোট দিয়েছেন এবং তাঁর নামের জায়গায় সীমা, সুইটি, সরস্বতী, রেশমি, বিমলাসহ বিভিন্ন নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এটি কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রিত কর্মকাণ্ড। কেউ এই নারীকে ভোটার তালিকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ঢুকিয়েছে, বুথ পর্যায়ে নয়।’
ভারতের বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, এ ধরনের নকল ভোটার কার্ডগুলো হরিয়ানায় গত বছরের নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে রাহুল গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই নারী কে? তাঁর বয়স কত? তিনি কোন রাজ্য থেকে এসেছেন? আমাকে কিছু ধারণা দিন।’
রাহুল বলতে থাকেন, ‘তিনি (ওই নারী) ব্রাজিলের নাগরিক। একজন ব্রাজিলীয় মডেল। এটি একটি স্টক ফটোগ্রাফ।’
একজন ব্রাজিলীয় নারীর নাম কীভাবে হরিয়ানার নির্বাচনী তালিকায় যুক্ত হলো, সে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল।
যে নারীকে নিয়ে এত কিছু, সেই ব্রাজিলীয় মডেল বলছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তাঁর ব্যবহৃত ছবিটিও পুরোনো।
অনলাইনে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে ব্রাজিলীয় মডেল নেরি বলেন, ‘তারা আমার পুরোনো ছবি ব্যবহার করছে। এটা একটা পুরোনো ছবি। আমার বয়স তখন ১৮ বা ২০ বছর ছিল। আমি জানি না, এটা কোনো নির্বাচন বা ভোটসংক্রান্ত কিছু কি না…এবং সেটা ভারতে। উফ! তারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য আমাকে ভারতীয় হিসেবে দেখাচ্ছে। এ কেমন পাগলামো! কী উদ্ভট ব্যাপার! আমরা কোন দুনিয়ায় আছি?’
রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস দল ২০২৪ সালে হরিয়ানায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল। তবে তারা ওই নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে হেরে যায়। তখন কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুধু ১১ হাজার ২০০ ভোটের ব্যবধান ছিল।রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, হরিয়ানার ২ কোটি নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে প্রতি আটজনের একজন ভুয়া।
কংগ্রেসের নেতা বলেন, এক পর্যালোচনায় বেশ কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে—একই ছবির বারবার ব্যবহার, একই ঠিকানায় একসঙ্গে বহু ভোটারের নিবন্ধন এবং বিভিন্ন রাজ্যের ভোটার তালিকায় একই ব্যক্তির নাম থাকা।
রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেস ২০২৪ সালে হরিয়ানায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিল। জরিপও সেই কথা বলছিল। তবে তারা ওই নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে হেরে যায়। তখন কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুধু ১১ হাজার ২০০ ভোটের ব্যবধান ছিল।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি, ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি।’
রাহুল অন্য একজন নারীর ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেন, ২২৩ জন ভোটারের জায়গায় ওই নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে এবং দুটি ভোটকেন্দ্রে এ ভোটগুলো দেওয়া হয়েছে। ভোটার পরিচিতি কার্ডে ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানা, নাম ও বয়স উল্লেখ করা হয়েছে।
রাহুল বলেন, ‘প্রথমবার যখন আমি এই তথ্য জানতে পেরেছিলাম তখন আমি একদমই বিশ্বাস করতে পারিনি। বিভিন্ন সূত্রের কাছ থেকে এ ব্যাপারে যাচাই করার জন্য আমি দলের সবাইকে বলেছিলাম। আজ আপনারা যা দেখছেন, তা সেই প্রক্রিয়ারই ফল।’
এ কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, ভারতের নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছভাবে কাজ করছে না। তারা বিজেপিকে সহায়তা করছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভোটার তালিকায় জালিয়াতি করছে।
তবে নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি নির্বাচনের অনেক আগেই সব রাজনৈতিক দলকে ভোটার তালিকা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কেউ কোনো আপত্তি জানায়নি।