বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, গৌরীপুর বিএনপির আহ্বায়কসহ ৫ জন বহিষ্কার
Published: 10th, November 2025 GMT
ময়মনসিংহ-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির গৌরীপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণসহ পাঁচজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রবিবার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করা নিয়ে যা জানাল পুলিশ
গাংনীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের অভ্যন্তরে হাঙ্গামা, সহিংসতা, রক্তপাতসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করার জন্য ময়মনসিংহ জেলাধীন গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান (হিরন), যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম খোকন, সদস্য মাসুদ পারভেজ কার্জন, গৌরীপুর পৌর বিএনপির সদস্য সচিব সুজিত কুমার দাস ও যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান পলাশকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কা করা হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম.
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসেনকে পরিবর্তনের দাবিতে কয়েকদিন ধরে তায়েবুর রহমান হিরনের সমর্থকরা রেলপথ ও সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করছিলেন। রবিবার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসেনের সমাবেশ ছিল হোস্টেল মাঠে এবং একই সময়ে আহমেদ তায়েবুর রহমান হিরনের কর্মসূচি ছিল গৌরীপুর মধ্য বাজারে।
সমাবেশে যাওয়ার পথে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় অসুস্থ হয়ে ময়মনসিংহ নগরীর দৌলত মুন্সিরোড এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ছাত্রদল কর্মী তানজিন আহমেদ (৩০) মারা যান।
গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) দেবাশীষ কর্মকার বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে অসুস্থ হয়ে তানজিন আহমেদ নামে এক যুবক মারা গেছেন। হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন আহত আটজন। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ দ ত য় ব র রহম ন র স ঘর ষ ব এনপ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক আফিফুরের গফরগাঁওয়ে প্রযুক্তি শিক্ষার উদ্যোগ
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশি তরুণেরা যেখানে বিদেশে পাড়ি জমান ভালো চাকরির আশায়, সেখানে ময়মনসিংহের আফিফুর রহমান বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পাস করে দেশের বাইরে নয়, ফিরে গেছেন নিজ উপজেলায়, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ষোলহাসিয়া গ্রামে। প্রযুক্তির জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিয়ে গড়ে তুলছেন ভবিষ্যতের ডিজিটাল নাগরিকদের।
মানবসম্পদ গড়ার কারিগর
আফিফুর রহমান, বর্তমানে একজন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষক ও প্রশিক্ষক। ২০১৭ সালে প্রথম ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তাঁর বন্ধুর কোচিং সেন্টারের একটি কক্ষে শুরু করেন টিউশনি। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লে তিনি আলাদা একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পড়ানো শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কোরডেফট আইসিটি প্রাইভেট প্রোগ্রাম ও কোরডেফট কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। কোরডেফট আইসিটি প্রাইভেট প্রোগ্রামের আওতায় পড়ানো হয় উচ্চমাধ্যমিক স্তরের আইসিটি বিষয় এবং কোরডেফট কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে শেখানো হয় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদি সার্টিফিকেট ইন কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স এবং সেই সঙ্গে ৩ মাস মেয়াদি গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স।
আফিফুরের চাকরিজীবন
ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক (সম্মান) হয়ে আফিফুরের লক্ষ্য ছিল উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিদেশে যাওয়া। পরিবারে একমাত্র ছেলে হওয়ায় বাবা-মায়ের আপত্তিতে সেই স্বপ্ন স্থগিত রাখেন। সিদ্ধান্ত নেন, দেশেই পেশাজীবন গড়বেন। পরবর্তী সময়ে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রামে চাকরির সুযোগ পেয়েও সেখানে না গিয়ে নিজ জেলা ময়মনসিংহের ক্যাপিটাল কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।
চোখ বাঁচাতে চাকরি ছাড়েন
পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকায় দুটি কোম্পানিতে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেন। একটিতে ৬ মাস ও অন্যটিতে ৩ মাসের মতো চাকরি করেন। সে জায়গায় কাজটি ছিল সম্পূর্ণ কম্পিউটার–নির্ভর। কয়েক মাস পরই তাঁর জন্য চাকরিটি করা কঠিন হয়ে পরে। দীর্ঘ সময় কম্পিউটার পর্দায় তাকিয়ে থাকার কারণে, আফিফুরের চোখে দেখা দেয়, ‘ড্রাই আই সিনড্রোম’। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে তাঁরা জানান, দীর্ঘ সময় কম্পিউটারে কাজ করা আফিফুরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। অনতিবিলম্বে তাঁকে পেশা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। চোখ বাঁচাতে চাকরি ছাড়েন আফিফুর। এরপর ভিন্ন ভিন্ন পেশায় কয়েকটি চাকরি সন্ধান করেন। কিন্তু আশানুরূপ না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার।
নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়া
নিজ উপজেলা ময়মনসিংহের গফরগাঁও ফিরে গিয়ে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান। ধীরে ধীরে দেখলেন, তিনি ছাড়া বন্ধুরা সবাই ব্যস্ত, বারবার আড্ডা দিতে ডাকলে তাঁরাও কিছুটা বিরক্তই হন। খোঁজ নিয়ে জানলেন, বেশির ভাগ বন্ধুই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি, পদার্থ, গণিত ইত্যাদি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে বন্ধুদের উৎসাহে তিনি অবসর সময় কাটানোর জন্য মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন।
ক্লাস নিচ্ছেন আফিফুর রহমান