জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে ব্রাজিল যাচ্ছে সাতক্ষীরার নওশীন ও নুর
Published: 10th, November 2025 GMT
জাতিসংঘের জলবায়ু-সংক্রান্ত ৩০তম সম্মেলন বা কপ-৩০ শুরু হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের বেলেম শহরে। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু ঝুঁকিতে বিপর্যস্ত পৃথিবীকে রক্ষার অঙ্গীকারে জড়ো হচ্ছেন ১৫০ দেশের ১২ হাজারের বেশি প্রতিনিধি। এই মঞ্চে বাংলাদেশ থেকে শিশু প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিচ্ছে সাতক্ষীরার দুই শিক্ষার্থী।
এই দুজন হলো নওশীন ইসলাম ও নুর আহমদ। উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তবতা তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়েই আজ সোমবার রাত একটার দিকে তাদের বেলেমের পথে রওনা হওয়ার কথা।
নওশীন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও প্রতাপনগর ইউনাইটেড বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাবা শহীদুল ইসলাম ও মা জেসমিন দুজনই শিক্ষক। নওশীন ২০২১ সাল থেকে উপকূলের শিশুদের অধিকার ও জলবায়ু ন্যায়ের আন্দোলনে যুক্ত। বর্তমানে সে ‘উপকূলীয় শিশু ফোরাম’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এবং আশাশুনি উপজেলার সভাপতি।
অন্যদিকে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের যতীন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা নুর আহমদ সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা জি.
এই দুই শিশু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বাসিন্দা, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত অনেক বেশি। তাদের কপ-৩০-এ অংশ নেওয়ার সুযোগ এসেছে বেসরকারি সংস্থা জাগ্রত যুব সংঘের (জেজেএস) ‘স্ট্রেংদেনিং চিলড্রেনস ভয়েস অ্যান্ড লিডারশিপ ইন অ্যাড্রেসিং ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিজাস্টার রিস্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের মাধ্যমে।
প্রকল্পটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক নবকুমার সাহা জানান, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের ১০টি উপজেলায় শিশুদের নেতৃত্ব ও কণ্ঠস্বর শক্তিশালী করতে কাজ করছে জেজেএস। শিশুরা নিজেরাই তাদের সমস্যা ও সমাধান নির্ধারণে অংশ নিক, তাদের কণ্ঠস্বর যেন স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শোনা যায়।
একই রকম প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করে নওশীন ইসলাম বলে, ‘উপকূলের শিশুদের দুঃখ-দুর্দশা তুলে ধরতেই ব্রাজিল যাচ্ছি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়, খাবারের অভাব হয়, বাল্যবিবাহ বাড়ে। আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যাওয়া সবার দায়িত্ব। আমি চাই উন্নত দেশের নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে আরও আন্তরিক হোক।’
নুরের কণ্ঠেও শোনা যায় একই রকম দৃঢ়তা। সে বলে, ‘বিশ্বনেতারা নিজেদের অতীতের ভুলের দায় আমাদের ওপর যেন চাপিয়ে না দেন। যারা বেশি কার্বন নিঃসরণ করছে, তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করব।’
সন্তানদের এমন ভূমিকায় গর্বিত বলে জানিয়েছেন নওশীন ও নুরের মা-বাবা। নুরের মা লায়েকা খানম বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা যেন নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে পারে—এই তো সবচেয়ে বড় অর্জন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নওশ ন জলব য় উপক ল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সুস্থ থাকার মন্ত্রে নানা আয়োজনের ফ্লো ফেস্ট
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার মন্ত্রে আয়োজিত হলো তিন দিনব্যাপী ফ্লো ফেস্ট। এতে ছিল ইয়োগা, নাচ, ধ্যান, গল্প, থিয়েটার, আর্ট, ফিটনেস সেশন ও বই প্রকাশসহ একশর বেশি কার্যক্রম। ফেস্ট ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত।
‘বি ইন ইয়োর ফ্লো’ স্লোগান সামনে রেখে রাজধানীর গুলশান–২ এর বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে গত বৃহস্পতিবার শুরু হয় এই ফেস্ট। আজ শনিবার ছিল উৎসবের তৃতীয় ও শেষ দিন। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ আয়োজন।
মেলায় ছিল পাঁচটি গ্রাউন্ড—ইয়োগা সালা, মেডিটেশন গার্ডেন, আর্ট সোল জোন, প্লে-গ্রাউন্ড এবং অ্যাম্ফিথিয়েটার। পাঁচটি গ্রাউন্ডই দিনভর ছিল নানা আয়োজনে ব্যস্ত।
ইয়োগা ও ওয়েলনেস উৎসব হিসেবে ইতিমধ্যে আয়োজনটি দেশে জায়গা করে নিয়েছে। ২০২২ সাল থেকে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্কে এ আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিবছরই এর পরিসর বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা। সবার জন্য উন্মুক্ত এ আয়োজনে গতকাল অংশ নেন বিপুল দর্শনার্থী।
ফ্লো ফেস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাজিয়া ওমর বলেন, ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে সুন্দর জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং সুস্থতার চর্চাকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে তোলার জন্য আমাদের এ আয়োজন। আমরা চাই, প্রতিটি মানুষ সুস্থ থাকুক; ওষুধ ছাড়া সুস্থভাবে বাঁচুক।’
শাজিয়া ওমর বলেন, ‘স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা প্রতিবছর একটি ফ্লো ফেস্টের আয়োজন করি। এখানে বিভিন্ন ধরনের ইয়োগা ও মেডিটেশনের প্রশিক্ষকদের আনা হয়। সুস্থতার জন্য প্রয়োজন আমাদের মুভমেন্ট, মেডিটেশন, ক্রিয়েটিভিটি আর কানেকশন।’
মেলায় অ্যাডভেঞ্চারে মেতেছে এক শিশু। রাজধানীর গুলশান-২; ৮ নভেম্বর ২০২৫