সহানুভূতির জন্য হিনা ক্যান্সারের খবর রটিয়েছেন, দাবি রোজালিনার
Published: 26th, January 2025 GMT
মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছেন বলিউড অভিনেত্রী হিনা খান। নিয়মিত নিচ্ছেন কেমোথেরাপি। চাইছেন এই ব্যাধিকে জয় করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার। তাঁর মনের অদম্য জোর দেখে অনুরাগীরাও সাহস জুগিয়ে যাচ্ছেন। বলিউড সতীর্থদের অনেকেই যখন হিনার সাহসের প্রশংসা করছেন, তখনই বিপরীত প্রান্ত থেকে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন আরেক অভিনেত্রী রোজালিন খান।
তিনি দাবি করেছেন, হিনার শরীরে আদৌ ক্যান্সার বাসা বাঁধেনি। সহানুভূতি নেওয়ায় চেষ্টায় ক্যান্সারের খবর রটিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে রোজালিন খান বলেছেন, ‘ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে যারা নতুন জীবনে ফিরে আসতে পেরেছেন, আমি তাদের একজন। তাই ক্যান্সার সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা আছে। কিন্তু হিনার লক্ষণ দেখে সন্দেহ হচ্ছে, আদৌ তাঁর ক্যান্সার হয়েছে কিনা।’
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে হিনা জানিয়েছেন, ১৫ ঘণ্টা ধরে তাঁর একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। ক্যান্সারের তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছেন তিনি। এই পর্যায়ে চিকিৎসা চলে প্রথমে অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশন।
এ খবর শোনার পরই বিস্ময় প্রকাশ করে রোজালিন বলেছেন, ‘যখন শুনলাম হিনা বলছে তাঁর ১৫ ঘণ্টা ধরে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে, এতে চমকে উঠেছিলাম। ১৫ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার! কী করিয়েছেন হিনা? ম্যাসটেকটমি? তার উপর ছবিতে দেখলাম অস্ত্রোপচারের পর হাসছেন হিনা! আমার যখন ম্যাসটেকটমি অর্থাৎ স্তনের পুনর্গঠন হয়েছিল, তারপর তিন দিনের জন্য হুঁশ ছিল না। কারণ এত বড় অস্ত্রোপচারের পর কখনই তাড়াতাড়ি রোগীকে হুঁশে আনা হয় না। তাই হিনাকে বিবৃতি দিয়ে জানাতে হবে কোন অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর? ম্যাসটেকটমি হয়ে থাকলে, সেটাও জানাতে হবে। আর হিনা যদি এতই সাহসী হন, তাহলে নিজের মুণ্ডিত মস্তকের ছবি কেন পোস্ট করেছেন না সমাজমাধ্যমে? কেন নিজের চিকিৎসার নথিপত্রের ছবি পোস্ট করছেন না? কারণ শিক্ষিত ও বুদ্ধিমান মানুষ তখনই তাঁর জালিয়াতি হাতেনাতে ধরে ফেলবে! হিনা সস্তা প্রচারে থাকার জন্য ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার দাবি করছেন।’
রোজালিনের মুখে এমন কথা শুনে অনেকেই অবাক। একই সঙ্গে বিস্মিত এমন চাঁচাছোলা কথার জবাবে হিনা খানের নীরবতা দেখে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
বাসাবাড়িতে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু নিয়োগ বন্ধে আইন করার সুপারিশ
বাসাবাড়ির কাজে তথা গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করার পাশাপাশি কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রমের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়। এ ছাড়া গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি ২০১৫-তে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গৃহকর্মে নিয়োগ করা যাবে না।
শ্রম সংস্কার কমিশন এ প্রসঙ্গে বলেছে, গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। একই সঙ্গে এই আইনের কার্যকর বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, সেখানে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৃহশ্রমিকদের বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিতে হবে। এর আগপর্যন্ত নিশ্চিত করতে হবে ‘গৃহকর্মীর কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা–২০১৫’–এর যথাযথ বাস্তবায়ন।
নিয়োগের ক্ষেত্রে আবাসিক, অনাবাসিক, খণ্ডকালীন বা স্থায়ী—সব ধরনের গৃহশ্রমিকদের জন্য কর্মঘণ্টা, বেতন, ছুটি, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সুবিধা উল্লেখ করে একটি স্বচ্ছ ও নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্মসংস্থান চুক্তি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে শ্রমিকের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি কার বরাবর, কোন স্থানে এবং কীভাবে দায়ের করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
গৃহশ্রমিকদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে গৃহকর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া গৃহকর্মীদের সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদানেরও সুপারিশ করেছে কমিশন।
পারলারের কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নেওয়ার পরামর্শ
এদিকে বিউটি পারলার খাতের শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে এ খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা ও তাঁদের সন্তানদের জন্য শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র বা ডে কেয়ার সুবিধা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেছে কমিশন।
অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ খাতে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠনের সুপারিশও করেছে কমিশন। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের কাজের মান ও ঝুঁকি বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা এবং তাঁদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে পদোন্নতি কাঠামো তৈরি করতে হবে।
দেশের সব বিউটি পারলার শ্রমিকদের পেশাগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষার জন্য শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।
বিউটি পারলারের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করাসহ সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নির্দেশিকা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিউটি পারলারের কর্মীদের বড় একটি অংশ রাতে বাসায় ফেরে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ও রাত্রিকালীন বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব শ্রমিকের সামাজিক মর্যাদা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে কমিউনিটিভিত্তিক উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।