কক্সবাজার সৈকতে জমি দখল করে দোকানপাট
Published: 4th, May 2025 GMT
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট। সড়কের দক্ষিণ পাশে দুই একরের বেশি সরকারি জমি দখল করে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে ৯০টির বেশি পাকা দোকান। জায়গাটির বর্তমান বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকার বেশি।
টিনের উঁচু ঘেরা দিয়ে ভেতরে নির্মাণ করা হচ্ছে দোকানপাট। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি জমি দখল করে ওবাইদুল হোছাইন নামের এক ব্যক্তি সেখানে দোকান নির্মাণ করছেন। ওবাইদুল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের নেতা। জায়গাটি তিনি সাচ্চিদানন্দ সেনগুপ্ত নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে দাবি করেন। তবে সাচ্চিদানন্দের নামে কোনো খতিয়ান খুঁজে পায়নি জেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, টিনের ঘেরার সবুজ রং করা তালাবদ্ধ একটি ফটকে সাইনবোর্ড ঝুলছে। তাতে লেখা, ‘এই প্রতিষ্ঠান সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।’ পাশে টাঙানো আরেকটি বিলবোর্ড লেখা, ‘মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ দ্বারা নিষেধাজ্ঞা আছে। সংরক্ষিত এলাকা, উন্নয়নকাজ চলিতেছে। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ।’
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ নেতা ওবাইদুল হোছাইন লোকজন নিয়ে সরকারি ২ একর ৩০ শতকের জমিটি দখল করে নেন। এরপর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দখলদারদের তাড়িয়ে দেওয়ায় কিছুদিন জায়গাটি খালি পড়ে ছিল। মাসখানেক আগে উচ্চ আদালতের একটি নোটিশ টাঙিয়ে জায়গাটি ফের দখল করে নেন ওই ব্যক্তি। এরপর টিনের ঘেরা দিয়ে ভেতরে দোকানপাটের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
সম্প্রতি সুগন্ধা সড়কের সরকারি জমিতে গোপনে দোকানপাট নির্মাণের ছবি সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও কউক কর্মকর্তাদের নজরে আসে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারি জমিতে রাতের অন্ধকারে দোকানপাট নির্মাণ করা হচ্ছিল। প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যে নির্মিত দোকানপাট সরিয়ে না নিলে উচ্ছেদ করা হবে।
সৈকত এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে কউকের অনুমোদন লাগে। দোকানপাট নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি জানিয়ে কউকের উপ–নগর পরিকল্পনাবিদ মো.
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সহসভাপতি ওবাইদুল হোছাইন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। মামলায় কয়েক মাস করাভোগও করেন। সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে সরকারি জায়গাটি ফের দখল করে দোকানপাট নির্মাণ শুরু করেন তিনি।
ওবাইদুল হোছাইন বলেন, সাচ্চিদানন্দ সেনগুপ্ত নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে জায়গাটি ভাড়া নিয়ে তিনি দোকান নির্মাণ করছেন। দোকান উচ্ছেদ না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলা ভূমি অফিসের সিল, সই জালিয়াতির মাধ্যমে চারটি বিএস খতিয়ান সৃজন করে সরকারি খাসজমিটি দখলের জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। তবে কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানা বলেছেন, ভূমি অফিসের মূল রেকর্ডে সাচ্চিদানন্দ সেনগুপ্ত নামের কোনো ব্যক্তির খতিয়ানের অস্তিত্বই নেই।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স চ চ দ নন দ ন র ম ণ কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘জাতীয় ইস্যুতে সর্বদলীয় ঐকমত্য জরুরি’
ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক মাহমুদুল হাসান নিজামী বলছেন, “দেশের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐকমত্য গঠন করা অতীব জরুরি।”
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইসলামী সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা জানান।
নিজামী তার বক্তব্যে বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা ও নির্বাচন দুইটিই দেশের ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করে। দেশের কল্যাণে জনগণের দাবি পূরণে সর্বস্তরের মানুষের মানবিক আচরণ প্রয়োজন। সরকারের কাজ হলো জাতিকে সঠিক পথ দেখানো, আর জনগণের কর্তব্য সেই পথ অনুসরণ করা। কিন্তু বর্তমানে সরকার ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে গেছে- এটি কারো কাম্য নয়।”
তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতীয় ইস্যুতে সর্বদলীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। জাতীয় সংলাপই তার অন্যতম প্রেক্ষাপট।”
অনুষ্ঠানে সংগঠনের মহাসচিব বি এম এরশাদ বলেন, “নাগরিক নিরাপত্তা ও আসন্ন নির্বাচন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখন নির্বাচনকে গণদাবি হিসেবে দেখা হলেও নাগরিকের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান অস্থায়ী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হওয়া উচিত। তিনি যোগ করেছেন যে বৈষম্যরোধ, বাকস্বাধীনতা এবং স্বাধীন মত প্রকাশের নিশ্চয়তা প্রদান করাই সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার ভিত্তি।”
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এস এম সরওয়ার বলেন, “দেশের সংকটময় সময়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ছাড়া উন্নয়ন ও কল্যাণমুখী ভবিষ্যত নির্মাণ সম্ভব নয়। তাই জাতীয় নিরাপত্তা ও আগামী নির্বাচনকে সফল করতে সংগঠনটি কাজ করে যাচ্ছে।”
ঢাকা/এএএম/এস