মিজোরামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার, পাঠানো হলো দিল্লিতে
Published: 4th, May 2025 GMT
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই মার্কিন নাগরিককে আটকের পর মিজোরাম থেকে তাদের বহিষ্কার করে দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ- মিজোরামের রাজধানী আইজলে পৌঁছে তারা কেএনএ/এফ জঙ্গিদের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিল।তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগেরও অভিযোগ রয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর ছিল, মোট চারজন মার্কিন নাগরিক পর্যটন ভিসায় ২ মে আইজলে যান। তারা চিটাগং হিল ট্র্যাক্টসের (সিএইচটি) কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএ/এফ) সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করছে। সূত্র আরও জানায়, আটককৃতরা কেএনএ/এফ- এর নেতা নাথান লনচেও বমের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। বম বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলের কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট ও এর সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন।
এই তথ্য পাওয়ার পর লেংপুই বিমানবন্দরে ওই দুই মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করে মিজোরাম পুলিশ। গ্রেপ্তার দুজনের নাম চেকুন ও সারন। অপর দুজনের অবস্থান কিংবা পরিচয় এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানিয়েছেন ২ মে লেংপুই বিমানবন্দর থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন পুরুষ, অন্যজন নারী। পরদিন শনিবার সেখান থেকে তাদের দিল্লিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর কারণ হিসেবে ওই কর্মকর্তা আরও জানার, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কারও রাজ্যে প্রবেশের জন্য ‘সুরক্ষিত এলাকা পারমিট’ (প্রটেকটেড এরিয়া পারমিট-পিএপি) নেই।
ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের খবর, ওই চারজন মার্কিন নাগরিক মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে লংত্লাই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বম সম্প্রদায়ের শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছিলেন। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট গঠনে প্রাথমিকভাবে অন্তত দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের বিরুদ্ধে এখনো সীমান্ত এলাকায় উসকানিমূলক কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এই কারণে কর্তৃপক্ষ দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন সংক্ষেপিত নাম ব্যবহার করে থাকে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক
এছাড়াও পড়ুন:
লিফলেট বিতরণে যাওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলার অভিযোগ
মাদারীপুরের শিবচরে তারেক রহমানের ৩১ দফা–সংবলিত লিফলেট বিতরণের সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার রাত আটটার দিকে শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট নিয়ে বের হন মাদারীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাবলু সিদ্দিকীর কর্মী-সমর্থকেরা। শিবচর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করেন তাঁরা। ফেরার পথে উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকায় এলে শিবচর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান বাবুল ফকিরের লোকজনের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ।
এ সময় উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন। ভাঙচুর করা হয় পাঁচটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিবচর থানা–পুলিশ ও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া সুমন আহম্মেদ ও রাশেদ মৃধা বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফা লিফলেট নিয়ে তাঁরা চরশ্যামাইল এলাকার কাজীর দোকান নামক স্থানে এলে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল ফকিরের ছেলে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা সুমন ফকিরের নেতৃত্বে শতাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তাঁদের অনেক লোকজন আহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল রেখে তাঁদের অনেকে সেখান থেকে ফিরেছেন।
বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রথমে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কয়েকজন অনুসারীর কথাকাটাকাটি হয়। পরে বিষয়টি মিটমাটও হয়ে গেছে। লিফলেট বিতরণ শেষ করে মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরার সময় রাস্তায় গতিরোধ করে দুই দিক থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে। কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। হামলায় যারা আহত বেশির ভাগই বিএনপির কর্মী সমর্থক। তিনি হামলার নিন্দা জানিয়ে জড়িতের বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বাবলু ফকিরের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমিসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই। এ ঘটনায় থানায় এখনো অভিযোগ দেয়নি কেউ। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’