ফতুল্লায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাংবাদিক হৃদয় ও হাবিব, আটক ১
Published: 4th, May 2025 GMT
ফতুল্লায় সংবাদ সংগ্রহকালে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক উজ্জীবিত বাংলাদেশ-এর বার্তা সম্পাদক মিলন বিশ্বাস হৃদয় ও ফটো সাংবাদিক হাবিব খন্দকার। রোববার (৪ মে) বেলা তিনটার দিকে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মাসদাইর শ্মশানের সামনে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে নির্মিত "প্রতিরোধ স্তম্ভ" দখল করে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র ইট-বালু-পাথরের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এই অবৈধ দখল ও ব্যবসার বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন সাংবাদিকরা।
আহত মিলন বিশ্বাস হৃদয় জানান, “প্রতিরোধ স্তম্ভ ঘিরে কারা ব্যবসা করছে তা জানার জন্য আমরা সেখানে যাই। ছবি তোলার পর স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎ সালাউদ্দিন, জাকির হোসেন ও আরও ৫-৬ জন এসে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
পরিচয় দেওয়ার পরও তারা হামলা থামায়নি। আমাদের মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে এবং আমাদের একটি দোকানে আটকে রাখে।” পরে সহকর্মীরা এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
হামলার নেতৃত্বদানকারী সালাউদ্দিনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন সাংবাদিকরা। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
দৈনিক উজ্জীবিত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কবিরুল ইসলাম বলেন, “এই হামলার নেপথ্যে থাকা সালাউদ্দিন এক সময় নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিল। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যার মামলা রয়েছে, যা থেকে মাত্র দুই দিন আগে জামিনে মুক্তি পেয়েছে।”
স্থানীয়রা জানান, প্রতিরোধ স্তম্ভটি সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছে এবং সেখানে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে। প্রশাসন প্রতি বছর একটি নির্ধারিত দিনে সেখানে ফুল দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে। বাকি সময় এটি সন্ত্রাসীদের দখলে থাকে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, “ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হামলাকারী সালাউদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠায় আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট
সারা দেশে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠাসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
প্রস্তাবে জেলা জজদের মধ্য থেকে বাণিজ্যিক আদালতের বিচারক নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি কর্তৃক হাইকোর্ট বিভাগে বাণিজ্যিক আপিল বেঞ্চ গঠনের বিষয়টিও প্রস্তাবে উঠে এসেছে। প্রস্তাবে মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে মামলা দায়েরের আগেই অনেক বিরোধ আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি হবে এবং আদালতের ওপর মামলার ক্রমবর্ধমান চাপ অনেকাংশে হ্রাস পাবে বলে আশা করা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোনো বাণিজ্যিক মামলা বা আবেদনের মূল্যমান ৫০ লাখ টাকা হলে তা বাণিজ্যিক আদালতে বিচার্য হবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার সময়ে সময়ে এই নির্ধারিত মূল্যমান সীমা পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে।
সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বণিকদের সাধারণ লেনদেন থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, বিমান ও নৌপরিবহন, নির্মাণ ও অবকাঠামোগত প্রকল্প, ফ্র্যাঞ্চাইজ চুক্তি, বিতরণ ও লাইসেন্সিং, প্রযুক্তি উন্নয়ন, ট্রেডমার্ক, কপিরাইট, পেটেন্ট, শিল্প নকশা, ডোমেইন নাম, ভৌগোলিক নির্দেশক, বিমা এবং অংশীদারত্ব চুক্তি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পরিষেবা খাত এবং শেয়ারহোল্ডার বা যৌথ উদ্যোগ–সম্পর্কিত বিরোধকে বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালতের এখতিয়ারভুক্ত করার কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এর ফলে আধুনিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ–সম্পর্কিত প্রায় সব ধরনের বিরোধ একটি বিশেষায়িত আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা যায়।
বিচারপ্রক্রিয়াকে দ্রুত ও কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করার বিষয়ে প্রস্তাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চূড়ান্ত শুনানি অবশ্যই ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব এড়াতে সংক্ষিপ্ত বিচারের সুযোগও প্রস্তাবে রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবে আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আর বলা হয়, বাণিজ্যিক আপিল আদালত ছয় মাসের মধ্যে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে প্রস্তাবে উল্লেখ রয়েছে। প্রস্তাবে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারক ও আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ এবং ধারাবাহিক পেশাগত উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।