মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় খাল দখল করে পাকা ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। কিছু নির্মাণাধীন। নির্মাণকাজের সুবিধার জন্য কালভার্টের মুখ ভরাট করে পানিপ্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে।
এ চিত্র উপজেলার উত্তর কাজী কসবা গ্রামের। এ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন টেলি ভূঁইয়া ও শাহজালাল বেপারি কাজী কসবা খালে এসব স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার উত্তর কাজী কসবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলা রামপাল ইউনিয়নের উত্তর কাজী কসবা গ্রামে তোফাজ্জল হোসেন টেলি ভূঁইয়া খালের পুরো অংশ দখল করে প্রশস্ত পাকা রাস্তা ও বাড়ির প্রধান ফটক নির্মাণ করেছেন। এর পাশেই খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন স্থানীয় শাহজালাল বেপারি নামের এক ব্যক্তি। পাকা বিম করে ভবনের মেঝে ঢালাইয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
গ্রামবাসী জানান, দখলের কবলে পড়া খালটি সদর উপজেলার মীরকাদিম নদীবন্দর এলাকা থেকে উত্তর কাজী কসবা গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সদর উপজেলার কাটাখালী খালের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এক সময় এই খাল দিয়ে সব ধরনের নৌযান চলাচল করলেও বিভিন্ন স্থানে দখলের কারণে খালটি এখন মৃতপ্রায়। ইদানীং নৌযান না চললেও খাল দিয়ে অন্তত পানি প্রবাহিত হতো। কিন্তু প্রায় ৬ মাস আগে উত্তর কাজী কসবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০০ মিটার পশ্চিমে খালের পুরো অংশ দখল করে বাড়ির গেট ও রাস্তা নির্মাণ করেন তোফাজ্জল। তাঁর দেখাদেখি এ স্থাপনার পূর্বপাশে খালের বিস্তীর্ণ অংশ দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন শাহজালাল। এভাবে খালের প্রায় ৮-১০টি স্থানে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে খালে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় কামরুল হাসান বলেন, খালটি দিয়ে পানিপ্রবাহের জন্য কয়েক বছর আগে উত্তর কাজী কসবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেই কালভার্টের মুখ পুরো ভরাট করে এখন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
অভিযুক্ত শাহজালাল বেপারির দাবি, তিনি যেখানে ভবন নির্মাণ করছেন, সেখানে তাদের জমি আছে এবং খালের জমিও আছে। তিনি বলেন, ‘আমি কন্ট্রাক্টরি করি। নির্মাণসামগ্রী রাখার জন্য একটি পাকা ঘর তুলতেছি।’
অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেন টেলির বক্তব্য জানতে তাঁর বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে খুদে বার্তা দিলেও সাড়া মেলেনি।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম হাসানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দখল ন র ম ণ করছ ন ন ন র ম ণ কর সদর উপজ ল শ হজ ল ল র উপজ ল প রব হ
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হত্যায় দুজন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়া চট্টগ্রামের রাউজানে গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন এবং বায়েজিদে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
সরোয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন হেলাল হোসেন ওরফে মাছ হেলাল ও আলা উদ্দিন। গ্রেপ্তার দুজনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বায়েজিদের হাজিরপুল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান বলেন, সরোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজন র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। তবে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীসহ মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে চলাফেরা রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন রয়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে গুলি করে হত্যা করা হয় সরোয়ারকে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায় সরোয়ারের নাম রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র-চাঁদাবাজির ১৫টি মামলা। একই ঘটনায় সরোয়ার ছাড়াও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহও রয়েছেন।
র্যাব জানায়, সরোয়ারকে গুলি করার পরদিন চালিতাতলী এলাকায় ইদ্রিস নামে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করা হয়। এ ঘটনায় আরমান আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গুলি করার সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী’ শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যা ও মিজান জড়িত।
এদিকে গত বুধবার রাতে রাউজানের বাগোওয়ান এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচজন আহত হন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইশতিয়াক চৌধুরী অভি, মোহাম্মদ জেকি ও মো. জনি নামে তিনজনকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় র্যাব।
সংসদ নির্বাচনের আগে গোলাগুলির ঘটনা রোধে র্যাব তৎপর রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে জনসংযোগ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে র্যাব।