পাকিস্তানে হামলার জেরে ভারতের শেয়ারসূচকে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের পতন হয়নি। আজ বুধবার সকালে ভারতের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার পরই বাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্সের পতন হয়েছে ২০০ পয়েন্ট পর্যন্ত। পতন হয়েছে আরেক সূচক নিফটিরও। এরপর অবশ্য বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় সেনসেক্স সূচকের মান ছিল ৮০ হাজার ৫৭৯ দশমিক ২৭ পয়েন্ট। নিফটি সূচকের মান ছিল ২৪ হাজার ৩৬৫ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। তাতে গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় আজ সেনসেক্সের পতন হয়েছে এখন পর্যন্ত ৬১ পয়েন্ট এবং নিফটির পতন হয়েছে ২৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে পাকিস্তানের শেয়ারবাজারেও লেনদেন শুরু হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

একই সঙ্গে অনিশ্চয়তার জেরে ভারতর মুদ্রা রুপিরও দরপতন হয়েছে আজ সকালে। সকালের শুরুতেই রুপির দর আরও ৩১ পয়সা কমেছে। ফলে প্রতি ডলারে বিপরীতে এখন ৮৪ দশমিক ৬৬ রুপি পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক দিন ধরেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল, ভারত পাকিস্তানে হামলা করবে। গত রাতে হামলা শুরু হয়ে যাওয়ার পর বাজারে যে আজ প্রভাব পড়বে, তা প্রত্যাশিতই ছিল।

এদিকে আজ সকালে এশিয়ার শেয়ারসূচকগুলোর মধ্যে হ্যাং সেং সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। পতন হয়েছে নিক্কেই এশিয়া সূচকের। সূচকটি পড়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। এ ছাড়া এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্স সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।

মঙ্গলবারের বাজারে সেনসেক্স ও নিফটি ৫০ সূচক উভয়েই পড়েছে। দিনভর বাজারের পরে শেষ পর্যন্ত ১৫৫ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট নেমে ৮০ হাজার ৬৪১ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্টে শেষ হয়েছে বিএসই সেনসেক্স। অন্যদিকে ৮১ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট নেমে ২৪ হাজার ৩৭৯ দশমিক ৬০ পয়েন্টে শেষ হয়েছে নিফটি ৫০ সূচক।

এনডিটিভির সংবাদে বিশ্লেষকদের মন্তব্য, ভারতের এই হামলা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে। সেই সঙ্গে হামলার তীব্রতা বৃদ্ধির তেমন ইচ্ছা ভারতের নেই। এ দুই কারণে সূচকের বড় পতন হয়নি। সূচক আবার ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। জিওজিত ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান বিনিয়োগ কৌশলবিদ ভি কে বিজয়কুমার বলেন, পাকিস্তান কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে বিনিয়োগকারীদের। তবে বাজার আগে থেকেই জানে, এই হামরা হতে পারে। সে কারণেও তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলেই তিনি মনে করেন।

এ ছাড়া ভারতের শেয়ারবাজারে কয়েক দিন ধরে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে। সেটাই বাজারের অতটা আক্রান্ত না হওয়ার কারণ হিসেবে মনে করেন বিজয়কুমার। গত ১৪ অধিবেশনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৪৩ হাজার ৯৪০ কোটি রুপির শেয়ার কিনেছে। মূলত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো বলে বিনিয়োগকারীরা ভারতের দিকে ঝুঁকছেন। সে কারণে বাজার ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই নিজ অবস্থান ধরে রাখতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র শ য় রব জ র ন হয় ছ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন

ব্যাপক দরপতন চলছে দেশের শেয়ারবাজারে। আজ বুধবার দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া প্রায় সব শেয়ারকে দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।

এতে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১১৭ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়। সূচক পতনের হার ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

দুপুর সাড়ে ১২টায় ১২৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ হারিয়ে ৪৮২৩ পয়েন্ট পর্যন্ত নামতে দেখা গেছে। পতনের হার বিবেচনায় ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির পর এটাই সর্বোচ্চ দর পতন। ওই দিন সূচক হারিয়েছিল ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

ব্যাপক দরপতনে আতঙ্ক বিরাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। গত কয়েক বছর ধরেই শেয়ারবাজারে মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে। তবে আজকের পতনের ভালো ব্যাখ্যা মিলছে না।

পেহেলগাম হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় প্রতিশোধ হিসেবে ভারত ‘অপারেশন সিন্ধুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে বিমান হামলা চালিয়েছে। এর পর পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের বেশ ক্ষয়ক্ষতি খবর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনার কারণে এমন পতন হতে পারে। 

লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দুপুর ১টা পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৯৩টির কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে।

এর মধ্যে ৩৭৭টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। এ সময় সামান্য  দর বেড়ে কেনাবেচা হচ্ছিল মাত্র ৮ শেয়ার।

দিনের লেনদেনের প্রথম তিন ঘণ্টায় ৩৬৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হতে দেখা যায়।

প্রায় সব শেয়ারের দর পতনে প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স এ সময় ১১৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময়ের সূচক পতনের হার ছিল ২ দশমিক ৩০ শতাংশ।

আজ সকাল ১০টায় দিনের লেনদেন শুরু হয় পতনে। প্রথম ১৮ মিনিটে ডিএসইএক্স প্রায় ৯৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৮৫৭ পয়েন্টে নেমেছিল। 

ভারত-পাকিস্তানের শেয়ারবাজার

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরুর ফলে উভয় দেশের শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, যা এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও প্রভাব ফেলেছে।

ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জ এর কেএসই-১০০ সূচক বুধবার সকালে ৬৫০০ পয়েন্ট বা ৫.৫ শতাংশ পতন হয়। এটি ২০২৩ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় একদিনের পতন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এদিকে ভারতের শেয়ারবাজারে প্রথমদিকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও, বাজার দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরে পায়। বুধবার সকালে সেনসেক্স সূচক ৬৯২ পয়েন্ট হ্রাস পেলেও পরে তা ২০০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে ৮০,৮৪৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। নিফটি ৫০ সূচকও প্রাথমিক পতনের পর ২৪,৪৩৮ পয়েন্টে পৌঁছাতে দেখা গেছে।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রভাব এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও দেখা গেছে। সিঙ্গাপুরের এসজিএক্স নিফটি সূচক বুধবার সকালে ১ দশমিক ২০ শতাংশ হ্রাস পেলেও পরে তা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হ্রাসে সীমাবদ্ধ থাকে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্ক মনোভাবের প্রতিফলন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টা রোববার শেয়ারবাজার নিয়ে বৈঠকে বসছেন
  • শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন