বারবার রূপ বদলানো ম্যাচটা তখন রোমাঞ্চের চূড়ায়। নির্ধারিত সময়ে ৩–৩ সমতায় থাকার পর চলছিল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা। কখন কী হয়, সেদিকেই চোখ সবার। কে নায়ক হয়ে উঠতে পারেন, তা নিয়েও ছিল কৌতূহল। তবে এমন পরিস্থিতিতে নায়ক হিসেবে খুব কম মানুষই হয়তো ডেভিড ফ্রাত্তেসির কথা ভেবেছিলেন।

সেন্টার মিডফিল্ডে খেললেও চ্যাম্পিয়নস লিগে আগের ১২ ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ১ গোল। গোল যে তিনি সচরাচর করেন, তা এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। কিন্তু ফুটবল তো মুহূর্তের খেলা। একটি মুহূর্তই বদলে দেয় সব হিসাব–নিকাশ। আর নাটকীয় এই মুহূর্তে নায়ক হয়ে উঠতে পারেন যে কেউ।

গতকাল রাতে সেই নায়ক হওয়ার উপলক্ষটা লুফে নিলেন ২৫ বছর বয়সী ফ্রাত্তেসি। বার্সার বক্সের ভেতর বল পেয়ে ভুল করেননি। নিয়মিত স্কোরার না হলেও গোল করলেন স্ট্রাইকারসুলভ ফিনিশিংয়ে। সামনে থাকা দুই ডিফেন্ডারের ফাঁদ এড়িয়ে করেছেন নিখুঁত প্লেসিং। ফ্রাত্তেসির এই গোলই মূলত পার্থক্য গড়ে দিয়েছে বার্সেলোনা–ইন্টারের ধ্রুপদি চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের।

আরও পড়ুনইয়ামালের একের পর এক শট ঠেকিয়ে মহানাটকের নায়ক সমার৩ ঘণ্টা আগে

গোলের পর ফ্রাত্তেসির উদ্‌যাপনটাও ছিল দেখার মতো। বাঁ পাশের কর্নার ধরে দৌড়ে উঠে পড়েন গ্যালারি ও মাঠের মাঝামাঝিতে থাকা গেটে। এ সময় তাঁর সঙ্গে উদ্‌যাপনে যোগ দেন অধিনায়ক লাওতারো মার্তিনেজও। উদ্‌যাপনের এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, গেটটা বোধ হয় টপকেই যাবেন ফ্রাত্তেসি। যদিও শেষ পর্যন্ত নেমে এসে সতীর্থদের সঙ্গে সারেন বাকি উদ্‌যাপন। তাঁর এই গোলই শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন ভেঙেছে বার্সার। কারণ হয়েছে রাফিনিয়াদের কান্নার।

সতীর্থদের সঙ্গে ফ্রাত্তেসির উদ্‌যাপন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার দাবিতে গাইবান্ধায় সমাবেশ 

দীর্ঘ নয় বছরেও গাইবান্ধার তিন সাঁওতাল  হত্যার বিচার হয়নি। আহতদের অনেকে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একাধিকবার সরকারের পক্ষ থেকে নানা আশ্বাসের বাণী দেওয়া হলেও তার কোনোটিই বাস্তবায়ন  হয়নি।

‎বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় ‘সাঁওতাল হত্যা দিবসে’ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ

টাঙ্গাইল-৩: বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ সাঁওতালদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে যায়। তখন পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিকদের সঙ্গে সাঁওতালদের দফায় দয়ায় সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় ৩০ জন সাঁওতাল আহত হন। পরে তাদের মধ্যে মঙ্গল মারডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম নামে তিন সাঁওতাল মারা যান।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, হত্যার বিচার, আসামিদের গ্রেপ্তার, বাড়িঘরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।

‎এর আগে, সকালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামে নির্মিত অস্থায়ী শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। মাদারপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে কালো পতাকা, সাঁওতালদের ঐতিহ্য তীর-ধনুক, ব্যানার, বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশ স্থলে মিলিত হয়। ‎সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, গোবিন্দগঞ্জ ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি ঢাকা এসব কর্মসূচির আয়োজন করে। 

‎সাহেবগঞ্জ নিমতলা মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি গণেশ মুরমু। বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন, ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রভাত টুডু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আহ্বায়ক আতোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসিরউদ্দিন মোল্লা, আদিবাসী নেতা রাফোয়েল হাসদা, কামিল হেমব্রম, সমাজকর্মী গোলাম রব্বানী মুসা।

‎একইদিনে গাইবান্ধা পাবলিক  লাইব্রেরি মিলনায়তনে সাঁওতাল হত্যা দিবসের আরেকটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার কমিটির একাংশের সভাপতি ফিলিমন বাসকের সভাপতিত্বে সেখানে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খায়রুল কবির, এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আদিবাসী নেত্রী বিচিত্রা তিরকিত, গাইবান্ধা আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, সমাজকর্মী মোর্শেদ হাসান দীপন।

ঢাকা/মাসুম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ