স্বপদে পুনর্বহালের দাবি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানদের
Published: 7th, May 2025 GMT
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণের প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁদের পুনরায় বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। তাঁরা ‘স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের অপসারিত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন ‘স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের অপসারিত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ’র সভাপতি ও গাজীপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইজাদুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্বতন্ত্রভাবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষভাবে বিভিন্ন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে দলীয় কোনো প্রতীক ছিল না। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাঁরা বিজয় অর্জন করে শপথ গ্রহণ করে কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ ৫ আগস্ট ক্ষমতা পরিবর্তনের পর গত বছরের ১৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ সারা বাংলাদেশের ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে। স্থানীয় সরকার বিভাগের অন্য স্মারক ও পত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাময়িকভাবে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। যা খুবই দুঃখজনক।
ইজাদুর রহমান আরও বলেন, তৃণমূল জনগণের আস্থা ও স্বচ্ছতার প্রতীক উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত সব জনপ্রতিনিধিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কোনো ব্যাখ্যা ও শুনানি ছাড়া একটি নির্বাহী আদেশে অপসারণ করা হয়েছে। যা স্বাধীন–সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধানের ২৬, ২৭, ৩১ ও ৫৯ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
‘স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের অপসারিত জনপ্রতিনিধিবৃন্দ’র আহ্বায়ক লায়লা বানু বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ আপৎকালে উপজেলা পরিষদ জনগণের সঙ্গে কাজ করে। দীর্ঘদিন প্রশাসক দিয়ে উপজেলা পরিষদে জনগণের সেবা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জনগণ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। স্থানীয় সরকার উপজেলা পরিষদ আইন ব্যতিরেকে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অব্যাহতি প্রদান স্থানীয় সরকারের মূল আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
লায়লা বানু বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁরা সরাসরি জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন না। এতে তৃণমূল পর্যায়ে জনসেবা ও উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার যে কথা বলা হচ্ছে, এ পদক্ষেপ তার সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর শপথ গ্রহণ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তাঁরা এ বিষয়গুলোকে বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অপস র জনগণ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।