নারায়ণগঞ্জে গণ–অভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আইভী কারাগারে
Published: 9th, May 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলামের নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁকে হাজির করা হলে শুনানি শেষে এই নির্দেশ দেন বিচারক।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান প্রথম আলোকে বলেন, মিনারুল হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ ১২ নম্বর আসামি। এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২৬ মে মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের জন্য শহরের দেওভোগ এলাকায় তাঁর নতুন বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর আজ সকাল পৌনে ছয়টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে বহনকারী গাড়ির ওপর হামলা হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালীর বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় র্যাব ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান জানান, আইভীর বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরকসহ মোট পাঁচটি মামলা আছে। মিনারুল ইসলাম হত্যা মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান আছেন।
গত বছরের ২০ জুলাই সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আদমজী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন পোশাকশ্রমিক মিনারুল ইসলাম। শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরদিন গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর নিহত মিনারুল ইসলামের ভাই নাজমুল হক বাদী হয়ে ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুননারায়ণগঞ্জে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনঅভিযান শুরুর ৬ ঘণ্টা পর আইভীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৬ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনআইভীকে গ্রেপ্তারে বাসায় পুলিশ, বাইরে সমর্থকদের অবস্থান৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ন র ল ইসল ম ন র য়ণগঞ জ আইভ ক
এছাড়াও পড়ুন:
অভিযানের ৬ ঘণ্টা পর আইভীকে গ্রেপ্তার
অভিযান শুরুর সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টায় শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত সাবেক এই মেয়রের বাড়িতে পুলিশ অভিযান শুরু করে। খবর পেয়ে বাড়ির বাইরে অবস্থা নেয় এলাকাবাসী। পরে সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে বাড়ির চারপাশে ঘিরে রাখে। অভিযান শুরুর সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর শুক্রবার ভোর পৌনে ৬টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সেখানে তাঁর বিপুলসংখ্যক সমর্থক অবস্থান করছিলেন। গাড়িবহর নিয়ে পুলিশও ছিল সতর্ক অবস্থানে।
স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্টের পর এই প্রথম বিপুল সংখ্যক পুলিশের একটি বহর সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাড়িতে আসে। এই খবর জেনে বাড়ির চারপাশে অবস্থান নিতে শুরু করে এলাকাবাসী। এসময় আশপাশের মসজিদগুলোয় পুলিশ আসার খবর প্রচার করা হয়। কয়েক শ মানুষ কয়েকটি স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। তবে রাত দেড়টা পর্যন্ত দেওভোগ সড়কের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি বহরকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এলাকাবাসী জানায়, সাবেক মেয়র আইভী স্থানীয়দের কাছে দলমত নির্বিশেষে নারায়ণগঞ্জ নগরীর নানা উন্নয়ন করেছে। তাই স্থানীয়রা এই পুলিশি অভিযান প্রতিহত করতে সড়কে নেমেছেন।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যার চেষ্টাসহ পাঁচটি মামলায় আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে। এসব মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনো পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কিন্তু পুলিশি অভিযান চলমান।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ বিলুপ্ত করা হলে বাড়িতে অবস্থান নেন আইভী।