৭৮ জনকে সুন্দরবনে ফেলে গেল বিএসএফ ও ভারতীয় কোস্টগার্ড
Published: 9th, May 2025 GMT
সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা ৭৮ নারী ও পুরুষকে বাংলাদেশের সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়ার জঙ্গলে ফেলে গেছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একাধিক নৌযানে সীমান্তবর্তী রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর তাদের ফেলে চলে যায়। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
স্থানীয় মান্দারবাড়িয়া বন বিভাগের টহল ফাঁড়ির সদস্যদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা উদ্ধারে রওনা হয়েছে।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক মো.
বন বিভাগের এ ঊর্ধ্বতন কমকর্তা আরও জানান, এত মানুষের জায়গা দেওয়ার সুযোগ সেখানে নেই। উপকূল থেকে অনেক দূরের হওয়ায় গতকাল রাতের মধ্যে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব না। এ ছাড়া কী কারণে এবং কেন তাদের এভাবে বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হলো, সেটাও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। তবে বনকর্মীসহ কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ড কৈখালী বিসিজি স্টেশনের মুখপাত্র এম মালেকুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থল মোংলার কাছাকাছি। এ কারণে শ্যামনগর থেকে কোস্টগার্ডের কোনো দল রওনা না হলেও হয়তো বা সেদিক থেকে কোস্টগার্ড সদস্যরা রওনা হয়েছেন।
এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এসব নারী ও পুরুষ বাংলাদেশি নাগরিক। তবে জন্ম বাংলাদেশে হলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের সুযোগে ভারতে নাগরিকত্ব নিয়েছেন। চলমান দু’দেশের মধ্যকার উত্তেজনায় হয়তো তাদের আটক করে বাংলাদেশে পাঠানোর অংশ হিসেবে বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে মান্দারবাড়িয়ায় অবস্থানরতদের কাছে খাবার বা সুপেয় পানি নেই। এ খবর জেনে উদ্ধারকারী দলের মাধ্যমে শুকনা খাবার ও পানি পাঠিয়েছেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন। উদ্ধার করে লোকালয়ে আনার পর তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মিলবে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি।
শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, তারা কোন দেশের নাগরিক আর কেন বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে, সেসব তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন দরবন ব এসএফ ম ন দ রব ড় য়
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁর দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট ও সাপাহার সীমান্ত দিয়ে নারী, শিশুসহ ১৮ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদের আটক করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি।
বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, ধামইরহাট উপজেলার কালুপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে গতকাল রাতের কোনো এক সময় ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। পরে রাত ৩টার দিকে ২৭১/১ এস সীমান্ত পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কালুপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বিজিবি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের ধামইরহাট থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ১৪ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও পাঁচজন পুরুষ। তাঁদের বাড়ি খুলনা, নড়াইল ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই ১৪ জনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে গতকাল রাতের কোনো এক সময় সাপাহার উপজেলার বামনপাড়া এলাকা দিয়ে চারজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সীমান্তের ২৪৬/২ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে ওই চারজনকে আটক করে বিজিবি। পরে তাঁদের সাপাহার থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সাপাহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আজিজ বলেন, বিজিবির হস্তান্তর করা ওই চারজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও দুজন নারী। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলায়। তাঁদের দাবি করা পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্তের আগ্রাদ্বিগুণ এলাকা দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ।