সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা ৭৮ নারী ও পুরুষকে বাংলাদেশের সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়ার জঙ্গলে ফেলে গেছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একাধিক নৌযানে সীমান্তবর্তী রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর তাদের ফেলে চলে যায়। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

স্থানীয় মান্দারবাড়িয়া বন বিভাগের টহল ফাঁড়ির সদস্যদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদস্যরা উদ্ধারে রওনা হয়েছে।

বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক মো.

মশিউর রহমান জানান, শুক্রবার বিকেলের দিকে তারা জানতে পারেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা ৬৩ জন নারী-পুরুষকে মান্দারবাড়িয়া টহলফাঁড়ির পাশে রেখে গেছে। সন্ধ্যার পর জানতে পারেন দ্বিতীয় দফায় আরও ১৫ জনকে পৃথক স্পিডবোটে একই জায়গায় ফেলে যাওয়া হয়েছে।

বন বিভাগের এ ঊর্ধ্বতন কমকর্তা আরও জানান, এত মানুষের জায়গা দেওয়ার সুযোগ সেখানে নেই। উপকূল থেকে অনেক দূরের হওয়ায় গতকাল রাতের মধ্যে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব না। এ ছাড়া কী কারণে এবং কেন তাদের এভাবে বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হলো, সেটাও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। তবে বনকর্মীসহ কোস্টগার্ড সদস্যরা ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

এ বিষয়ে কোস্টগার্ড কৈখালী বিসিজি স্টেশনের মুখপাত্র এম মালেকুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থল মোংলার কাছাকাছি। এ কারণে শ্যামনগর থেকে কোস্টগার্ডের কোনো দল রওনা না হলেও হয়তো বা সেদিক থেকে কোস্টগার্ড সদস্যরা রওনা হয়েছেন।

এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এসব নারী ও পুরুষ বাংলাদেশি নাগরিক। তবে জন্ম বাংলাদেশে হলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের সুযোগে ভারতে নাগরিকত্ব নিয়েছেন। চলমান দু’দেশের মধ্যকার উত্তেজনায় হয়তো তাদের আটক করে বাংলাদেশে পাঠানোর অংশ হিসেবে বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে মান্দারবাড়িয়ায় অবস্থানরতদের কাছে খাবার বা সুপেয় পানি নেই। এ খবর জেনে উদ্ধারকারী দলের মাধ্যমে শুকনা খাবার ও পানি পাঠিয়েছেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন। উদ্ধার করে লোকালয়ে আনার পর তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মিলবে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রটি।

শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, তারা কোন দেশের নাগরিক আর কেন বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে, সেসব তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন দরবন ব এসএফ ম ন দ রব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) শুরু করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে। 

বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ভারতীয় সীমান্তে জড়ো হচ্ছে শত শত মানুষ। পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানা এলাকার হাকিমপুর সীমান্তে এমন ঘটনা দেখা গেছে। বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র এই সীমান্তেই জড়ো হয়েছেন নারী শিশু সহ অন্তত ৩০০ জন বাংলাদেশি নাগরিক।

আরো পড়ুন:

সৌদিতে বাস-ট্যাংকার সংঘর্ষ, ৪২ ভারতীয় হজযাত্রীর মৃত্যুর আশঙ্কা

দিল্লির আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর সহযোগী গ্রেপ্তার

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, শহর থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশকারী এই বাংলাদেশিরা ফের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য হাকিমপুর সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন। কেউ দালালের মাধ্যমে কেউ আবার নিজেরাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এসেছেন সীমান্তে। কিন্তু বিএসএফের বাধায় সীমান্তেই আটকে পড়েছেন এই বাংলাদেশিরা। 

আটকে পড়া ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে ভারতে অনুপ্রবেশের পর তারা কলকাতা, দিল্লি, ব্যাঙ্গালুরু থেকে মুম্বাইয়ের মতো শহরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ভারত জুড়ে শুরু হওয়া এসআইআরের কারণে জেল ও জরিমানা এড়াতে দেশে তারা ফিরতে চাইছেন। 

অফিসিয়াল বিবৃতি জারি না করলেও বিএসএফ সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এমন ছবি শুধুমাত্র হাকিমপুর সীমান্তের নয়। এই সীমান্তে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের সংখ্যাটা অনেক বেশি। বিএসএফ জানিয়েছে, আটকে পড়া এই বাংলাদেশিদের মানবিক বিবেচনায় গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্বের দাবির স্বপক্ষে নিথিপত্র বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে আগামী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন
  • সুন্দরবন থেকে আমাজন বন ঝাঁঝরা কেন 
  • পর্যটক টানতে ছাড়ের ছড়াছড়ি, নির্বাচন ঘিরে আশা-নিরাশা
  • মেহেরপুর সীমান্তে ১২ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
  • মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ