কুয়াকাটা সৈকতে ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে গিয়ে পর্যটকের মৃত্যু
Published: 10th, May 2025 GMT
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে গিয়ে রাজেশ কুমার পাল (৪০) নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১০ মে) বেলা ১১ টার দিকে সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃত রাজেশ রাজশাহী জেলার পুটিয়া এলাকার শরৎ কুমার পালের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাজেশ, তার এক চাচাতো ভাই ও ভগ্নিপতি কমল কুমার কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে হোটেল ‘সাগর নীড়ে’ ওঠেন। আজ (শনিবার) সকালে তারা সমুদ্রে গোসলে নামেন। পরে রাজেশ সমুদ্রের ঢেউয়ের তোড়ে একটু গভীরে গিয়ে ডুবে যায়। এসময় তার স্বজনদের ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাজেশকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজেশের ভগ্নিপতি কমল কুুমার পাল জানান, সকালে তার তিনজনই সৈকতে গোসলে নামেন। এসময় রাজেশ সমুদ্রের গভীরে চলে গেলে তারা ডাকাডাকি শুরু করেন। তাদের সঙ্গে সৈকতে গোসলরত অপর পর্যটকরাও ডাকাডাকি শুরু করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাজেশকে উদ্ধার করে। পরে তিনিসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো.
মহিপুর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/ইমরান/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা-পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সন্তান না নেওয়া ভালো
‘স্তন ক্যানসার এমন একটি রোগ, যা স্তনের কোষ থেকে শুরু হয়, বিশেষ করে মিল্ক ডাক্টস বা লোবিউল থেকে হয়। ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটি “ইনভেসিভ ডাক্টাল কার্সিনোমা” হিসেবে দেখা যায়। এ ছাড়া লোবুলার কার্সিনোমা, মিউসিনাস কার্সিনোমা, মেডুলারি কার্সিনোমা ও স্ট্রোমাল টিস্যু থেকেও ক্যানসার হতে পারে। এর মূল কারণ হলো ডিএনএ মিউটেশন, যা জেনেটিক, অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল, এনভায়রনমেন্টাল এক্সপোজার ও বয়সজনিত।’
কথাগুলো বলেন ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও উপদেষ্টা ডা. পারভিন আখতার বানু।
স্তন ক্যানসার সচেতনতার মাস অক্টোবর। এ উপলক্ষে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এসকেএফ অনকোলজি আয়োজন করে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার-চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা। নাসিহা তাহসিনের উপস্থাপনায় এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিন আখতার বানু। তিনি বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা, রোগনির্ণয়, ডায়াগনসিস ও চিকিৎসাসুবিধা বিষয়ে কথা বলেন। পর্বটি সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
শুরুতেই উপস্থাপক জানান, ক্যানসারকে অনেকেই ‘মডার্ন ডে ডিজিজ’ বলে। বিশ্বে প্রতি আটজন নারীর মধ্যে একজনের স্তন ক্যানসার শনাক্ত হয়। তবে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও স্তন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্তন ক্যানসারকে শুধু নারীর রোগ হিসেবে ভাবার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশের স্তন ক্যানসারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নারীদের মধ্যে এর প্রকোপ সম্পর্কে ডা. পারভিন আখতার বানু বলেন, ‘বাংলাদেশে এটি “সিগনিফিকেন্ট হেলথ হ্যাজার্ড”। প্রতি এক লাখ নারীর মধ্যে এতে প্রায় ২২.৫ জন আক্রান্ত হন। আমাদের দেশে দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেক কম বয়সে, অর্থাৎ ১৫ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যেই প্রায় ১৯.৫ শতাংশ কেস ডায়াগনসিস হয়। এর মৃত্যুহারও অনেক বেশি—প্রায় ৬৫ শতাংশ। এর কারণ দেরিতে শনাক্তকরণ।’
স্তন ক্যানসারের প্রধান ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে ডা. পারভিন আখতার বানু বলেন, ‘প্রধান ঝুঁকির কারণগুলো হলো শারীরিক কর্মকাণ্ড কম করা, স্থূলতা বৃদ্ধি, অধিক মাত্রায় ফাস্ট ফুড গ্রহণ, হরমোন ও টক্সিক কেমিক্যালযুক্ত খাবার গ্রহণ, নারীদের মেনোপজের পর হরমোনাল ফ্যাক্টরের কারণে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহার করা, ব্রেস্টফিডিং না করানো, দেরিতে গর্ভধারণ, ফ্যামিলি হিস্ট্রি, বিআরসিএ১/২ জিন মিউটেশন এবং ভিটামিন ডির ঘাটতি ইত্যাদি।’
স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো কী এবং কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত? উপস্থাপকের প্রশ্নের উত্তরে ডা. পারভিন আখতার বানু বলেন, ‘প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে স্তনে চাকা বা লাম্প হওয়া, স্তনের সাইজ বা আকারের পরিবর্তন, নিপল ডেবে যাওয়া বা নিপল থেকে দুধ ছাড়া কিছু বের হওয়া, ব্রেস্টের চামড়ায় টান পড়া, কুঁচকে যাওয়া, বগলের নিচে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া এবং অস্বাভাবিক ব্যথা করা। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।’
সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন এবং এটির পদ্ধতি প্রসঙ্গে ডা. পারভিন আখতার বানু বলেন, ‘এটি সহজ, কিন্তু স্তন ক্যানসার শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন ২০ বছর বয়স থেকেই শুরু করা উচিত। সাধারণত মাসিক শেষ হওয়ার ৫ থকে ৭ দিন পর করাটা উপযুক্ত। গোসলের সময় বা পিঠের নিচে বালিশ রেখে শুয়ে তিনটি আঙুলের প্যাড দিয়ে চক্রাকারে পুরো ব্রেস্ট ও বগল পরীক্ষা করতে হবে। এ সময় লক্ষ রাখতে হবে অস্বাভাবিক লাম্প, চাকা, নিপল ডিসচার্জ, স্কিন চেঞ্জ ইত্যাদি হচ্ছে কি না।’
প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপক জানান, এসকেএফ অনকোলজি বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র ইউজিএমপি ও অ্যানভিজা ব্রাজিল অনুমোদিত প্ল্যান্ট। ফলে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ২৭টি দেশে এবং দক্ষিণ আমেরিকায় রপ্তানি হচ্ছে। এ ছাড়া এসকেএফ অনকোলজির সারা দেশে রয়েছে ৩৩টি সেবাকেন্দ্র, যার মাধ্যমে ক্যানসারের ওষুধ পাওয়া যায়। শুধু তা-ই নয়, ঘরে বসে অর্ডার করলেই বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে সহজেই পৌঁছে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে স্তন ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা, রোগনির্ণয়, ডায়াগনসিস ও চিকিৎসাসুবিধা বিষয়ে পরামর্শ দেন ডা. পারভিন আখতার বানু