পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে গিয়ে রাজেশ কুমার পাল (৪০) নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। 

শনিবার (১০ মে) বেলা ১১ টার দিকে সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

মৃত রাজেশ রাজশাহী জেলার পুটিয়া এলাকার শরৎ কুমার পালের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাজেশ, তার এক চাচাতো ভাই ও ভগ্নিপতি কমল কুমার কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে হোটেল ‘সাগর নীড়ে’ ওঠেন। আজ (শনিবার) সকালে তারা সমুদ্রে গোসলে নামেন। পরে রাজেশ সমুদ্রের ঢেউয়ের তোড়ে একটু গভীরে গিয়ে ডুবে যায়। এসময় তার স্বজনদের ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাজেশকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাজেশের ভগ্নিপতি কমল কুুমার পাল জানান, সকালে তার তিনজনই সৈকতে গোসলে নামেন। এসময় রাজেশ সমুদ্রের গভীরে চলে গেলে তারা ডাকাডাকি শুরু করেন। তাদের সঙ্গে সৈকতে গোসলরত অপর পর্যটকরাও ডাকাডাকি শুরু করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রাজেশকে উদ্ধার করে। পরে তিনিসহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো.

সবুর মিয়া বলেন, “সৈকতের জিরো পয়েন্টের পশ্চিম পাশে পর্যটকদের ডাকাডাকিতে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে এক পর্যটককে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে মহিপুর থানা পুলিশের কাছে আমরা লাশ হস্তান্তর করি।”

মহিপুর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন,  ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছ থেকে লাশ গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/ইমরান/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে যাত্রীবাহী লঞ্চে নারীদের প্রকাশ্যে মারধর

মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতি করা একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের কেবিনে ‘পিকনিকে’ আসা অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ওই যাত্রীদের কাছ থেকে টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (৯ মে) রাত ৮ টার দিকে লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জ ঘাটে নোঙর করে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভাঙচুরের খবর পেয়ে সেখানে যান তারা। পরে ভেতরে ঢুকে বেশ কিছু দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন এবং মারধরের শিকার নারীদের সাথে কথা বলে ফিরে আসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনাস্থলে ছিলেন এমন একজন জানান, লঞ্চটি ঢাকা-লালমোহন রুটের প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলো। লঞ্চটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার বেশ কয়েকটি কেবিনে ২০-২৫ জন কিশোর-যুবক ও দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী ছিলেন। তারা ঢাকা থেকে ওই লঞ্চের কেবিন ভাড়া করে সারাদিন পিকনিক করে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা রঙের পোষাক পরিহিত আনুমানিক ১৫-১৭ বছর বয়সী এক নারীকে লঞ্চের একেবারে সামনের অংশে উঠিয়ে বেল্ট দিয়ে বেপরোয়াভাবে পেটাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ শহরের নেহাল আহমেদ জিহাদ নামের একজন। এসময় ৫০-৬০ জন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সেই দৃশ্য তাদের মোবাইল ফোনে ধারণ করে উল্লাস করছেন ও বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিডিওতে মারধর করতে থাকা নেহাল আহমেদ জিহাদ বলেন, ‘‘স্থানীয় কয়েকশ’ লোক তাদের আচরণ ও বেশভূষায় পতিতা বলে আখ্যা দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমণ করতে চলে আসে। আমি তাদের নিবৃত্ত করতে ভাই হিসাবে শাসন করেছি। এটা আমার করা উচিৎ হয়নি। আবার আমি এটা না করলে মানুষজন নারীদের জামাকাপড় টেনে খুলে ফেলতো। আরও বেশি হেনস্তা করতো। তাছাড়া স্থানীয়দের কাছ থেকে অন্তত ৮টি মোবাইল আমি তাদের উদ্ধার করে দিয়েছি। আমি মারধরের ঘটনায় অনুতপ্ত।’’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া এ ঘটনার একাধিক ভিডিওতে আরও দেখা যায়, থেমে থাকা লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় উঠে গণহারে অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যাত্রীদের পেটাচ্ছেন ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। এসময় তারা লঞ্চের কেবিনগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছেন এবং দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নৌভ্রমণে বের হয়ে আক্রমণের শিকার ‘এমভি ক্যাপ্টেন’ নামের লঞ্চটিতে পিকনিকের উদ্দেশ্যে আসা অন্তত ছয় জন যাত্রী মারধরে আহত হন। এর মধ্যে দুইজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী। তবে, তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সবাই ঢাকার কামরাঙিরচর এলাকার বাসিন্দা।

এছাড়া লঞ্চটিতে অন্তত ৩০০ জন সাধারণ যাত্রী ছিলেন। তাদের সাথে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও স্থানীয়দের উত্তেজনা দেখে তারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলম জানান, সন্ধ্যার নাস্তা কেনার জন্য ৮ থেকে ১০ জন নারি যাত্রী লঞ্চ থেকে পল্টুনে নামে। সেখানে থাকা স্থানীয়রা মাদকসেবী ও পতিতা সন্দেহ করে তাদের পিছু নিয়ে লঞ্চে ওঠার চেষ্টা করলে লঞ্চের ম্যানেজার মো. শফিক তাদের প্রবেশে বাঁধা দেয়। এতে উত্তেজিত লোকজন জড়ো হয়ে লঞ্চে ঢুকে ভাঙচুর, লুট ও যাত্রীদের মারপিট করেন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজনা কমে আসে।

প্রকাশ্যে নারীদের মারধরের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফিরোজ কবির বলেন, ‘‘পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ঘটনাটি যেহেতু নদীতে ঘটেছে এ বিষয়ে নৌ পুলিশ ব্যবস্থা নিবে বলে ‍শুনেছি।’’

মুক্তারপুর নৌ পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সাথে আমরাও ছিলাম। মারধরের ঘটনার পর আমরা লঞ্চটিকে অনেকদূর পর্যন্ত পাহারা দিয়ে এগিয়ে দিয়ে আসি। ভুক্তভোগীরা পরবর্তীতে মারধর ও লুটের ঘটনায় অভিযোগ করবেন বলে আমাদের জানান। আজ (শনিবার) সকাল পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/রতন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক কাউন্সিলর ইকবালের লোক পরিচয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার অভিযোগ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সাবেক কাউন্সিলর ইকবালের লোক পরিচয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ
  • তাপপ্রবাহ থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
  • মুন্সীগঞ্জে যাত্রীবাহী লঞ্চে নারীদের প্রকাশ্যে মারধর
  • বৈষম্যবিরোধী তিন নেতার ওপর হামলা, প্রতিবাদে সমাবেশ
  • বগুড়ায় কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
  • জাবি আলোনসোই রিয়াল মাদ্রিদের পরবর্তী কোচ
  • টাঙ্গাইলে চলন্ত মোটরসাইকেলে কক‌টেল নিক্ষেপ, দুই ভাই গুরুতর আহত
  • আগামী চার দিনের তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা