চাঁদাবাজির অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক দুই নেতা আটক
Published: 21st, May 2025 GMT
মানিকগঞ্জে চাঁদাবাজির অভিযোগ, পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ এবং অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সাবেক দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২১ মে) সকাল ৮টার দিকে তাদের নিজ বাসা থেকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার উত্তর সেওতা এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে মেহেরাব হোসাইন (১৯) ও শিবালয় উপজেলার নবগ্রাম এলাকার রজ্জব আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম রাজু (২১)। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মানিকগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ফুলছড়ির ৬ ইউপি চেয়ারম্যান আটক
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই ডাকাত দলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১
বৈষম্যববরোধী আন্দোলনের মানিকগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ওমর ফারুক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। শুনেছি, তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে। তবে, তারা দুজনই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।’’
ওসি এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ ও মানিকগঞ্জ নিউজ নামের একটি ফেক ফেসবুক পেইজের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’’
ঢাকা/চন্দন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ম ন কগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
মানিকগঞ্জে তাজিয়া মিছিল দেখতে সড়কের পাশে মানুষের ভিড়
মানিকগঞ্জে গড়পাড়া ইমামবাড়ি থেকে জেলা শহরের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ছিল মানুষের ভিড়।
আজ রোববার পবিত্র মহররমের তাজিয়া মিছিল দেখতে তাঁরা এই দীর্ঘ পথে সারিবদ্ধ হয়ে অবস্থান করেন। সড়কের পাশে ভবনগুলোর ছাদেও মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে মানিকগঞ্জে শত বছরের প্রাচীন গড়পাড়া ইমামবাড়ি অন্যান্য বারের মতো এবারও পবিত্র আশুরা পালন করছে। এ উপলক্ষে ১০ দিন ব্যাপী ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়।
আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গড়পাড়া ইমামবাড়ি থেকে দেশের অন্যতম বড় তাজিয়া মিছিল বের হয়। হজরত ইমাম হোসেনের শেষ মঞ্জিলের নকশা ‘তাজিয়া’, তাঁর নিজের ব্যবহার করা ঘোড়া ‘দুলদুল’ এবং কারবালা যুদ্ধের স্মৃতি বহনকারী নিশান নিয়ে হাজার হাজার ইমামভক্তরা এই শোকমিছিলে অংশ নেন। বিগত সময়ের মতো এবারও শোকমিছিলে ‘হায় হোসেন, হায় ইমাম’ শোকধ্বনি গাইবেন ইমামভক্তরা।
এ শোকমিছিল মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড হয়ে জেলা শহরে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের মাঠে গিয়ে শেষ হয়। এ মিছিল দেখতে সহস্রাধিক মানুষ সড়কের দুই পাশে ভিড় করেন।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাজিয়া মিছিল দেখতে আসা শামীম হোসেন বলেন, ‘তাজিয়া মিছিলে কারবালার ময়দানে শোকাবহ ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই সমবেদনা জানাতে এখানে এসেছি।’
মিছিল শেষে আজ সন্ধ্যায় সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ মাঠে ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পর আশুরার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মর্যাদা সম্পর্কে এক সভা হয়। এতে গড়পাড়া ইমামবাড়ি দরবার শরিফের প্রধান খাদেম এবং বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (ভিএসজেএ) সভাপতি শাহ আরিফুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। সভায় হজরত ইমাম হোসেনের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। সভায় হজরত ইমাম হোসেনের আত্মার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে। মানিকগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ শোকসভায় কারবালার মহান শহীদদের মহান আত্মত্যাগ সম্পর্কে আলোচনা করেন। আলোচনা সভা শেষে ইসলাম ও বিশ্ব শান্তির উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। গড়পাড়া ইমামবাড়ির অন্যতম খাদেম শাহ্ শাহজাদা রহমান বাঁধন এ পর্ব পরিচালনা করেন।
এদিকে শোকমিছিল উপলক্ষে গড়পাড়া ইমামবাড়ি ও জেলা শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়। মিছিলে সুশৃঙ্খলা রক্ষায় ইমামবাড়ির স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া সেনাসদস্যরা সড়কে টহলের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে গড়পাড়া ইমামবাড়ির পাশে তিন দিনব্যাপী মেলা বসেছে। মেলায় গেরস্তালি বিভিন্ন জিনিসপত্র, মনিহারি, লোহা-তামার জিনিসপত্র, শিশুদের খেলনাসহ বিভিন্ন খাবারের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষজন মেলায় ভিড় করেন।
শাহ আরিফুর রহমান বলেন, ‘মুসলমানদের কাছে ১০ মহররমের দিন অত্যন্ত শোকের। ইয়াজিদ চেয়েছিল রাজতন্ত্র কায়েম করতে। তবে ইসলাম তথা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নীতি ও আদর্শের মধ্যে রাজতন্ত্র ছিল না। ইসলাম উদার ও শান্তির ধর্ম। ইমাম হোসেন ও তাঁর মাতামহ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই নীতি ও আদর্শ অনুযায়ী চলতে বলেছেন। দেখিছেন ইসলাম সত্য ও শান্তির ধর্ম; ইসলাম অসত্য, অন্যায় ও অবিচারের ধর্ম নয়। ইমাম হোসেনের সেই শিক্ষাই আমাদের নেওয়া উচিত।’