‘তৈদুছড়া’ ঝরনা দেয় রোমাঞ্চের হাতছানি
Published: 6th, July 2025 GMT
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার তৈদুছড়া ঝরনার খবর এখন পৌঁছে গেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে। পাহাড়ের নির্জন স্থানের ঝরনাটি একসময় পর্যটকদের অগোচরে ছিল। প্রায় ৫০ ফুট উঁচু থেকে ঝরে পড়া জলের উচ্ছ্বাস দেখে মুগ্ধ হতে হয়।
আঁকাবাঁকা পথে সবুজে ঘেরা দীঘিনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের নয়মাইল এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে সীমানাপাড়া। এরপর পাহাড় ডিঙিয়ে হাঁটতে হবে আধা ঘণ্টা থেকে ৪০ মিনিট। এরপর ঝিরিপথে শুরু হবে রোমাঞ্চকর যাত্রা। ঝিরিপথে আছে বিশাল বিশাল সব পাথর। কোনোটা পিচ্ছিল, আবার কোনোটা মসৃণ। ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঝিরিপথে যাওয়ার পর দেখা মিলবে ঝরনার। ঝরনার সৌন্দর্য মুহূর্তেই ভুলিয়ে দেবে পথের ক্লান্তি। পথে পথে দেখা মেলে নানা প্রজাতির পাখি, স্থানীয় লোকদের জুমঘর আর নাম না–জানা পাহাড়ি ফুলের।
তৈদুছড়া ঝরনায় দেখা হয় খাগড়াছড়ি ও ঢাকা থেকে আসা একদল তরুণের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, তৈদুছড়া ঝরনার কথা স্থানীয় বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছেন অনেক দিন আগে। এবার দলবেঁধে এসেছেন একটা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য। তবে এটি যে এত সুন্দর হবে, সেটা তাদের কল্পনার বাইরে। ট্র্যাকিংয়ের জন্য দেশের অন্যতম সেরা একটি স্থান হতে পারে এই ঝরনা।
সীমানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য গণেশ ত্রিপুরা বলেন, এ ঝরনায় সারা বছর পানি থাকে। আর লোকজনও সারা বছর আসেন। ঝরনায় যাওয়ার রাস্তাটা যদি ইট বিছানো হতো, তাহলে ঝরনা পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে যাওয়া যেত।
একসময় ঝরনাটির কথা শুধু স্থানীয় লোকজনই জানতেন। স্থানীয় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ঝরনাটির নাম দিয়েছে ‘তৈদু’। ত্রিপুরা ভাষায় ‘তৈ’ অর্থ ‘জল বা পানি’ আর ‘দু’ অর্থ ‘ধারা’। অর্থাৎ জলধারা। পাহাড়ের গা ঘেঁষে অঝোর ধারায় নিচে গড়িয়ে পড়ছে স্বচ্ছ জলধারা। সবুজ পাহাড়ের বুনো জঙ্গলের মধ্যে প্রায় ৫০ ফুট উচ্চতার ঝরনাটি যে কাউকে মুগ্ধ করে।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম থেকে যেকোনো বাসে চড়ে প্রথমে পৌঁছাতে হবে খাগড়াছড়ি। এরপর সেখান থেকে অটোরিকশা বা চান্দের গাড়িতে করে যেতে হবে সীমানাপাড়ায়। ভাড়া পড়বে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। কেউ চাইলে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলেও যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
খাগড়াছড়ি শহরে পর্যটন মোটেল, হোটেল গাইরিং, অরণ্য বিলাস, মাউন্টেন, শৈল সুবর্ণসহ বিভিন্ন মানের থাকার হোটেল আছে। সেখান থেকে বাজেটের মধ্যে হোটেল বা মোটেল খুঁজে নিতে হবে। ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে এগুলোর ভাড়া। এ ছাড়া দীঘিনালায় থাকতে চাইলে স্টার, রেস্টহাউস, ডিগনিটি নামে তিনটি মাঝারি মানের হোটেল আছে। এখানকার ভাড়া ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার
গাজীপুরে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। প্রায়ই রাতে বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কে ডাকাতের কবলে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এসকল ডাকাত সদস্যদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত এক মাসে কালিয়াকৈর থানা ও মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি অভিযান চালিয়ে ২০ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। একইসঙ্গে ছয়টি পিকআপও জব্দ করেছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সুমন হোসেন ও সোহাগ নামে দুজন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি। এসময় তাদের দখলে থাকা একটি পিকআপ জব্দ করা হয়। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের ডাকাতি মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরআগে, গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের তিন গ্রেপ্তার করা হয়। উপজেলার মৌচাক ফকিরবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকমাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। বিশেষ করে কালিয়াকৈর-মাওনা আঞ্চলিক সড়ক ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে তাদের উৎপাত বেশি।
সড়কে পুলিশ টহল থাকলেও ডাকাত সদস্যরা বিভিন্ন ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে এরপর সুযোগ বুঝে ডাকাতি করে। এছাড়াও মাওনা কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি করে তারা। পুলিশ এরপর থেকেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করে।
মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) আব্দুস সেলিম বলেন, “ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে। তবে আমরা ডাকাতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। গত ১ মাসে আমাদের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ১৫ জন ডাকাত সদস্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পাঁচটি পিকআপ জব্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, “রাতে আমাদের টহল পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা গত এক মাসে ২০ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন তথ্য মিলেছে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ঢাকা/রেজাউল/এস