সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) রেকর্ড পরিমাণ শুকনা হলুদ আমদানি হয়েছে। এ সময় ৩২ হাজার ২৯১ টন শুকনা হলুদ আমদানি হয়েছে। এর বাজারমূল্য ৫৪২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৪ কোটি ৫ লাখ টাকা বেশি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে ৩০ হাজার ৪৫০ টন শুকনা হলুদ আমদানি হয়েছিল। যার মূল্য ছিল ৪৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমদানি বেড়েছে ১ হাজার ৮৪১ টন।

আমদানি বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারে। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় সাতক্ষীরার মসলা বাজারে গুঁড়া হলুদের দাম কমে এসেছে। জেলা সদরের সুলতানপুর বড় বাজারের মেসার্স ঠাকুর স্টোরে বর্তমানে প্রতি কেজি গুঁড়া হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা দরে। দেড় মাস আগেও এটি ছিল ৩২০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জানান, পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় গুঁড়া হলুদের দাম কিছুটা কমেছে।

সাতক্ষীরা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা এস এম আবদুল্লাহ বলেন, আমদানি বৃদ্ধি ও বাজারে সরবরাহ বাড়ায় গুঁড়া হলুদের দাম কমেছে। একই সঙ্গে অন্যান্য মসলার দামও সহনীয় রাখতে নিয়মিত বাজার তদারক করা হচ্ছে।

ভোমরা বন্দরভিত্তিক মসলা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো.

আবু হাসান জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অন্যান্য সময়ের তুলনায় তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে শুকনা হলুদ আমদানি করা হয়েছে। এসব পণ্য ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরবর হ

এছাড়াও পড়ুন:

চিত্রা নদী দখল করে পৌরসভার ভবন, এবার নির্মাণ হচ্ছে সীমানাপ্রাচীর

নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে পৌরসভা ভবন। এখন ভবনের এক পাশে খানিকটা বাড়িয়ে নদীর মধ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে সীমানাপ্রাচীর। কাজটি করছে যশোরের বাঘারপাড়া পৌরসভা।

ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল ১৯৯০ অনুযায়ী, নদীর দুই ধারের যে অংশ শুষ্ক মৌসুমে চর পড়ে এবং বর্ষায় ডুবে যায়, তা নদীতট বা ফোরশোর হিসেবে গণ্য। এই জায়গায় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা বা স্থাপনা করার অধিকার নেই। কেউ দখল করলে তিনি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বিবেচিত হন। কিন্তু এ আইনও মানেনি বাঘারপাড়া পৌরসভা।

২০২০ সালের ৩০ জুলাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রকাশিত নদী দখলদারদের তালিকায় চিত্রা নদীর ব্যাপক দখলের কথা উল্লেখ করা হয়। বাঘারপাড়া এলাকায় নদীর জায়গায় পৌরসভার শৌচাগার, দলীয় কার্যালয়, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, পুকুর, দোকানপাট ও বসতবাড়ি গড়ে তোলার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আংশিক তালিকায় ৪১ জন দখলদারের নাম থাকলেও পরে পাঠানো পূর্ণাঙ্গ তালিকায় ১২৬ জন অবৈধ দখলদার অন্তর্ভুক্ত হয়।

এ সম্পর্কে বাঘারপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব এবং পৌরসভার প্রশাসক মাহির দায়ান আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত অর্থবছরে পৌরসভার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। চলতি অর্থবছরে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আমি সম্প্রতি বদলি হয়ে এসেছি। বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ নিচ্ছি।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় সূত্র জানায়, বাঘারপাড়া মৌজায় চিত্রা নদীর দাগ নম্বর ১৭৩৩। ২০০২ সালে ৩০ অক্টোবর বাঘারপাড়া পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয় ছিল বর্তমানে উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে। ২০১১ সালে চিত্রা নদীর জায়গা দখল করে পৌরসভা ভবন নির্মাণ করা হয়।

উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা চিত্রা নদী হঠাৎ বাঁক নিয়ে পশ্চিমমুখী হয়েছে—জায়গাটিই বাঘারপাড়া। নদীর উত্তর পাশে বাঘারপাড়া থানা, দক্ষিণ পাশে পৌরসভা, তার পাশে উপজেলা পরিষদ। গতকাল শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভা ভবনের পশ্চিম পাশে নদীর ভেতর দক্ষিণ থেকে উত্তর এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমমুখী সীমানাপ্রাচীরের নির্মাণকাজ চলছে। নিচে লোহার রড বেঁধে কংক্রিট ঢালাই দেওয়া হয়েছে। কয়েক ফুট অন্তর উঁচু করে রাখা হয়েছে বাঁধাই করা রড।

পৌরসভা সূত্র জানায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় কাজটি করা হচ্ছে। বরাদ্দ ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সীমানাপ্রাচীরের দৈর্ঘ্য ১১৫ ফুট, উচ্চতা ৮ ফুট। কাজ করছে যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামাল এন্টারপ্রাইজ। গত ১ আগস্ট কাজ শুরু হয়েছে, ১২০ দিনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।

মেসার্স কামাল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, ‘এক মাস আগে কাজ শুরু করেছি। মাঝে কয়েক দিন কাজ বন্ধ ছিল। আবার শুরু করেছি। আশা করছি দুই মাসের মধ্যে শেষ করতে পারব।’

বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ভুপালী সরকার ছুটিতে থাকায় তাঁর মতামত জানা যায়নি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং জেলা নদী রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘নদীর জায়গায় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি।’

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে চিত্রা নদীর ৩৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হবে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। ধলগ্রাম থেকে দাইতলা অংশ পুনঃখনন পরিকল্পনাধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকার কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের অধিকারের তোয়াক্কা করছে না: জোনায়েদ সাকি
  • মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প
  • এবার পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানিতে ডিজেল ‘গায়েব’, দেড় লাখ লিটার গেল কোথায়
  • ব্যবসা-বাণিজ্যে কমলেও ভোক্তাঋণে বড় প্রবৃদ্ধি কেন
  • নভেম্বরের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
  • ভারত, চীন, রাশিয়া ও জাপান চার মাসে ঋণের কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি
  • ভারতের অনুমতির অপেক্ষায় বুড়িমারীতে আটকা ভুটানের পণ্য 
  • চিত্রা নদী দখল করে পৌরসভার ভবন, এবার নির্মাণ হচ্ছে সীমানাপ্রাচীর
  • ভারতের অনুমতি না পাওয়ায় ভুটানের ট্রানশিপমেন্ট পণ্য বুড়িমারীতে আটকে
  • পোশাক, ইস্পাত, সারসহ শিল্প খাতে উৎপাদন ৩০–৫০% কমেছে: ঢাকা চেম্বার সভাপতি