১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বর, সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশযান স্পুৎনিক-২ প্রবেশ করে পৃথিবীর কক্ষপথে। সেই মহাকাশযানে কোনো মানুষ ছিল না। ছিল মাত্র একটি কুকুর। নাম লাইকা। সেই কুকুরই পৃথিবীর কক্ষপথে যাওয়া প্রথম প্রাণী। লাইকা ছিল এক ভবঘুরে পথের কুকুর। মস্কোর অলিগলিতে বেড়ে ওঠা এক অবাঞ্ছিত জীব। যাকে ধরে আনা হয়েছিল বিজ্ঞানচর্চার নামে এক মৃত্যুমুখী অভিযানে পাঠাতে। লাইকা পৃথিবীর কক্ষপথে উত্তপ্ত মহাকাশযানে ঘুরতে ঘুরতে মারা গিয়েছিল।

লাইকার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৮ সালের ১১ জুন ‘অ্যালবার্ট’ নামে এক বানরকে মহাকাশে পাঠানোর চেষ্টা করে। পৌঁছানোর আগেই সে মারা যায়। ১৯৪৯ সালে ‘অ্যালবার্ট–২’ মহাকাশের কারমান রেখা পেরোলেও, ফিরে আসার আগেই মারা যায়। ফরাসিরা পাঠিয়েছিল ‘ফেলিসেট’ নামের এক বিড়ালকে। ফিরে আসার পর যার মস্তিষ্কচিত্র নেওয়ার পর তাকে হত্যা করা হয়।

এসব প্রাণীর কেউই জানত না তারা কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে। কষ্ট, ভয়, মৃত্যু, সবই তারা পেয়েছে। পেয়েছে এমন এক অভিযানে গিয়ে, যেখানে সম্মতি ছাড়া তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এ ঘটনাগুলো আমাদের নৈতিক বোধের সামনে নিয়ে আসে এক অপরিহার্য প্রশ্ন। প্রজাতিভেদে একেক প্রাণীর সঙ্গে নিজেদের স্বার্থে একেক রকম আচরণ করার অধিকার আমাদের আছে কি না? এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েই অস্ট্রেলীয় দার্শনিক পিটার সিঙ্গার ১৯৭৫ সালে তাঁর বিখ্যাত বই ‘অ্যানিমেল লিবারেশন’ প্রকাশ করেন।

পিটার সিঙ্গার বলেন, আমরা যদি কোনো প্রাণীর কষ্টকে শুধু তার প্রজাতিগত পরিচয়ের কারণে কম গুরুত্ব দিই, তাহলে তা একধরনের নৈতিক পক্ষপাত তৈরি হয়। আর সেই পক্ষপাতের নাম স্পিসিজম।

১৯৭৫ সালে প্রকাশিত পিটার সিঙ্গারের বিখ্যাত বই ‘অ্যানিমেল লিবারেশন’.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিটার সিঙ্গারের দর্শন: মনুষ্যত্বের চূড়ান্ত ইশতেহার

১৯৫৭ সালের ৩ নভেম্বর, সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশযান স্পুৎনিক-২ প্রবেশ করে পৃথিবীর কক্ষপথে। সেই মহাকাশযানে কোনো মানুষ ছিল না। ছিল মাত্র একটি কুকুর। নাম লাইকা। সেই কুকুরই পৃথিবীর কক্ষপথে যাওয়া প্রথম প্রাণী। লাইকা ছিল এক ভবঘুরে পথের কুকুর। মস্কোর অলিগলিতে বেড়ে ওঠা এক অবাঞ্ছিত জীব। যাকে ধরে আনা হয়েছিল বিজ্ঞানচর্চার নামে এক মৃত্যুমুখী অভিযানে পাঠাতে। লাইকা পৃথিবীর কক্ষপথে উত্তপ্ত মহাকাশযানে ঘুরতে ঘুরতে মারা গিয়েছিল।

লাইকার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৮ সালের ১১ জুন ‘অ্যালবার্ট’ নামে এক বানরকে মহাকাশে পাঠানোর চেষ্টা করে। পৌঁছানোর আগেই সে মারা যায়। ১৯৪৯ সালে ‘অ্যালবার্ট–২’ মহাকাশের কারমান রেখা পেরোলেও, ফিরে আসার আগেই মারা যায়। ফরাসিরা পাঠিয়েছিল ‘ফেলিসেট’ নামের এক বিড়ালকে। ফিরে আসার পর যার মস্তিষ্কচিত্র নেওয়ার পর তাকে হত্যা করা হয়।

এসব প্রাণীর কেউই জানত না তারা কোথায় যাচ্ছে, কেন যাচ্ছে। কষ্ট, ভয়, মৃত্যু, সবই তারা পেয়েছে। পেয়েছে এমন এক অভিযানে গিয়ে, যেখানে সম্মতি ছাড়া তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এ ঘটনাগুলো আমাদের নৈতিক বোধের সামনে নিয়ে আসে এক অপরিহার্য প্রশ্ন। প্রজাতিভেদে একেক প্রাণীর সঙ্গে নিজেদের স্বার্থে একেক রকম আচরণ করার অধিকার আমাদের আছে কি না? এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েই অস্ট্রেলীয় দার্শনিক পিটার সিঙ্গার ১৯৭৫ সালে তাঁর বিখ্যাত বই ‘অ্যানিমেল লিবারেশন’ প্রকাশ করেন।

পিটার সিঙ্গার বলেন, আমরা যদি কোনো প্রাণীর কষ্টকে শুধু তার প্রজাতিগত পরিচয়ের কারণে কম গুরুত্ব দিই, তাহলে তা একধরনের নৈতিক পক্ষপাত তৈরি হয়। আর সেই পক্ষপাতের নাম স্পিসিজম।

১৯৭৫ সালে প্রকাশিত পিটার সিঙ্গারের বিখ্যাত বই ‘অ্যানিমেল লিবারেশন’

সম্পর্কিত নিবন্ধ