চিংড়িচাষিদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হোয়াইট স্পট সিনড্রোম ভাইরাস। এ ভাইরাস আক্রমণ করলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারা পড়ে চিংড়ি। ভাইরাসটি কেন আক্রমণ করে, ব্যাপকতা কতটুকু, কোন ধরনের টিকা এ ভাইরাস রোধ করতে পারে—তা নিয়ে গবেষণা করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর একটি দল।

প্রথম ধাপের ওই গবেষণা ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল ইনফরমেশন (এনসিবিআই) ও আমেরিকান সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণার মাধ্যমে মূলত হোয়াইট স্পট সিনড্রোম ভাইরাসের জীবনরহস্য (জিনোম সিকোয়েন্সিং) উন্মোচন করেন গবেষকেরা।

গবেষক দলে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী রুবেল আহমেদ ও শেখ মোহাম্মদ তাহমিদ। কক্সবাজার, টেকনাফ, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা ঘুরে ঘুরে তাঁরা গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করেন। তারপর এসব তথ্য বিশ্লেষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং, রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন ল্যাব (এনরিচ) বা গবেষণাগারে।

রুবেল ও তাহমিদ জানান, বাংলাদেশে বিরাজমান হোয়াইট স্পট সিনড্রোম ভাইরাসের প্রকরণ কেমন, চিংড়ির মৃত্যুর ক্ষেত্রে ভাইরাসের কোন বিষাক্ত প্রোটিন বা জিন ভূমিকা রাখে, এটি কীভাবে ছড়ায়—এসব তথ্য জানার উদ্দেশ্যেই কাজ করছেন তাঁরা। এ ছাড়া দেশে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটির জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে। এ গবেষণার তথ্য ভাইরাসটি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। এখন তাঁরা প্রতিষেধক তৈরির কাজ করছেন।

আরও পড়ুনকেন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছিলাম২০ অক্টোবর ২০২৪

শুধু এই দুই তরুণ গবেষক নন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এনরিচ’ গবেষণাগার রাত-দিন এক করে কাজ করছেন একদল তরুণ। তাঁরা কখনো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও স্থূলতার ক্ষেত্রে জিনগত ভিন্নতা বের করেছেন, আবার কখনো ডেঙ্গুর নতুন ধরন নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে এসব গবেষণা।

শুরুর গল্প

২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের এ গবেষণাগার। এখানে আছে ‘আইসেক-১০০’, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হয় এই যন্ত্র। বায়োইনফরমেটিকস–সংক্রান্ত কাজের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারও আছে। এ গবেষণাগার থেকে এ পর্যন্ত ৪৫টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে ১৭টি প্রকল্পের কাজ চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিজ বায়োলজি অ্যান্ড মলিকুলার এপিডেমিওলজি রিসার্চ গ্রুপের গবেষক দলের তত্ত্বাবধানে গবেষণাগারটি পরিচালিত হয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও এ গবেষণাগার ব্যবহার করেন। যেমন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ গবেষকেরা নানা বিষয়ে এখানে কাজ করেছেন। নেচার পোর্টফোলিও, ল্যানসেট–এর মতো বিশ্বখ্যাত সাময়িকীতে জায়গা পেয়েছে তাঁদের প্রবন্ধ।

এ গবেষণাগারে মোটাদাগে তিনটি ক্ষেত্রে কাজ হয়—সংক্রামক রোগ, জিনগত ও বংশগত রোগ, খাদ্যনিরাপত্তা ও সমুদ্রবিজ্ঞানে জীবপ্রযুক্তির প্রয়োগ।

গবেষণাগার সম্পর্কে ল্যাবের অন্যতম প্রধান ও জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আদনান মান্নান বলেন, ‘দেশের যেকোনো প্রান্তের তরুণ গবেষকেরা এখানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তাঁদের হাতেখড়ি হচ্ছে গবেষণায়। কখনো তাঁরা করোনার নতুন ধরনের ভয়াবহতা নিয়ে কাজ করছেন। আবার কখনো নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী ক্লেবসিয়েলা ব্যাকটেরিয়ার গতিপ্রকৃতি জানার চেষ্টা করছেন।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও গবেষকেরাও এনরিচে কাজ করার সুযোগ পান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক জ করছ ন প রক শ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে।

পদের নাম: অধ্যাপক
বিভাগ: ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস
পদসংখ্যা: ১
শিক্ষাগত যোগ্যতা: প্রার্থীদের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস অথবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস ও মার্কেটিং) উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ পিএইচডি ডিগ্রি থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপক্ষে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এর মধ্যে কমপক্ষে সাত বছর ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগে সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রার্থীদের ইনডেক্সড/ডিওআই (ডিজিটাল অবজেক্ট আইডেন্টিফায়ার) সংবলিত মানসম্মত জার্নালে কমপক্ষে ১২টি গবেষণা প্রকাশনা থাকতে হবে। শিক্ষক হিসেবে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের সামগ্রিক শিক্ষা ও শিক্ষা আনুষঙ্গিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিশেষ অবদানও যোগ্যতা হিসেবে গণ্য করা হবে। বিভাগের অভ্যন্তরীণ পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে।
বেতন স্কেল: ৫৬,৫০০-৭৪,৪০০ টাকা

যেভাবে আবেদন
সার্টিফিকেট, মার্কশিট, প্রশংসাপত্র ও অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্রের সত্যায়িত প্রতিলিপিসহ ১১ কপি দরখাস্ত পাঠাতে হবে।

আবেদন ফি
রেজিস্ট্রারের অনুকূলে এক হাজার টাকা মূল্যের পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট পাঠাতে হবে।

আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা
রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১০০০।

আবেদনের শেষ সময়
৩১ আগস্ট ২০২৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ