গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠালেন জবি শিক্ষার্থীরা
Published: 6th, July 2025 GMT
গাজায় অবস্থানরত প্রায় ২০০ পরিবারের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৫ জুলাই) ‘প্রজেক্ট লাইফলাইন গাজা’ এর আওতায় এ খাদ্য পণ্যগুলো বিতরণ করা হয় গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থানরত বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর কাছে।
জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি এ প্রজেক্টের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
আরো পড়ুন:
উপাচার্যরা দায়িত্ব চেয়ে নেননি, হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি: শিক্ষা উপদেষ্টা
আশুরা উপলেক্ষে শেকৃবিতে শিবিরের গণসেহরি
এই প্রজেক্টের পরিচালনায় থাকা জবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আম্মার বিন আসাদ বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সামনে আরো বড় পরিসরে এমন উদ্যোগকে চলমান রাখব। আমাদের কার্যক্রমকে শুধু সাহায্য পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখব না, বরং দখলদারী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রো-প্যালেস্টাইন মুভমেন্টের কাতারে বাংলাদেশকে শক্তিশালীভাবে দাঁড় করানোর বৃহৎ লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব।”
নওশীন নাওয়ার জয়া নামে আরেক প্রজেক্ট পরিচালনাকারী শিক্ষার্থী বলেন, “চোখের সামনে প্রতিনিয়ত গাজাবাসীর উপর যে নির্মমতা আমরা দেখছি, তার বিপরীতে মানুষ হিসেবে আমাদের সামান্যতম করণীয়টুকুই আমরা করার চেষ্টা করেছি। তারই প্রয়াসে প্রজেক্ট লাইফলাইন গাজা নামক প্রকল্পটি আমরা গ্রহণ করি। যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষাভাবে আমাদের সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ বলেন, “এই মানবিক প্রচেষ্টার অংশ হতে পারা আমাদের জন্য এক গভীর দায়িত্ববোধের প্রতিফলন। মানবিকতা, ন্যায়বোধ এবং বৈশ্বিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই আমাদের এই প্রয়াস।”
‘প্রজেক্ট লাইফলাইন গাজা’ একটি স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ, যা গাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক ছাত্র-যুবদের সক্রিয়তায় গঠিত হয়েছে। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও গাজার অসহায় মানুষদের জন্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ব শ বব
এছাড়াও পড়ুন:
গেইল-পেরেরাদের পারিশ্রমিক, হোটেল বিল না দিয়েই লিগের আয়োজকেরা পালিয়েছেন
টুর্নামেন্টের নাম ইন্ডিয়ান হেভেনস প্রিমিয়ার লিগ বা আইএইচপিএল। ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরে আয়োজিত টুর্নামেন্টটি ক্রিস গেইল, থিসারা পেরেরাদের জীবনে নিয়ে এসেছে মহা বিড়ম্বনা। বিশ্ব ক্রিকেটের নামি এই খেলোয়াড়দের হোটেলে রেখে শহর থেকে পালিয়ে গেছেন লিগের আয়োজকেরা। খেলোয়াড়, ম্যাচ কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি, পরিশোধ করা হয়নি হোটেলের বিলও।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে। গত ২৫ অক্টোবর আট দল নিয়ে শুরু হওয়া আইএইচপিএল শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর। কিন্তু শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয়, কারিগরি কারণে দিনের খেলা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রোববার সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতে শ্রীনগর ছেড়ে চলে গেছেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়োজকদের কাছ থেকে তারা কোনো বিল পায়নি। সেই সময় প্রায় ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকা পড়েছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার আইএইচপিএলে আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন। শ্রীনগরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আয়োজকেরা হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা হোটেল, খেলোয়াড় বা আম্পায়ার কারও বিল পরিশোধ করেননি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি যেন সবাই বেরিয়ে যেতে পারে।’
শ্রীনগরের যে হোটেলে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আয়োজকেরা ১০ দিন আগে খেলোয়াড়দের জন্য ১৫০টি কক্ষ চেয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, ক্রিস গেইলের মতো তারকার কারণে কাশ্মীরের পর্যটন উপকৃত হবে। কিন্তু রোববার সকালে দেখি তাঁরা উধাও হয়ে গেছেন। আমাদের বিলও দেননি। গেইলসহ কয়েকজন খেলোয়াড় শনিবারই হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন।’
গেইল ছাড়াও টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, নিউজিল্যান্ডের জেসি রাইডার, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি এবং ওমানের আয়ান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুর্নামেন্টের প্রচারণায় যে সব পোস্টার ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটিতে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের ছবিও বড় আকারে দেখা গেছে।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার পারভেজ রসুল এই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। তিনি জানান, কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় হোটেলে আটকা পড়েছিলেন। পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা বেরিয়ে যান, ‘এক ইংলিশ আম্পায়ার হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছিলেন’।
স্থানীয় এক ক্রিকেটার জানান, আয়োজকেরা সম্ভবত ধারণাই করতে পারেননি এমন একটি টুর্নামেন্ট চালাতে কত বড় বাজেট প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে স্পনসররা সরে যাওয়ায় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছিল, ‘প্রথম দিন নির্ধারিত পোশাকও ছিল না, স্থানীয়ভাবে কিনে আনা হয়েছিল। কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গেও লিখিত চুক্তি করা হয়নি।’
টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল যুবা সোসাইটি মোহালি নামের একটি সংস্থা। সহযোগিতায় ছিল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্পোর্টস কাউন্সিল। কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানান, আইএইচপিএল সভাপতি আশু দানি পুলিশের ছাড়পত্র ও মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন, ‘তারা আমাদের টাকা দিয়েছে। এখানে সরকারের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই। কেন লিগ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেল, আমরা জানি না।’
তবে ২২ অক্টোবরের একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাগীয় কমিশনার অংশুল গার্গের সভাপতিত্বে আইএইচপিএল নিয়ে এক প্রস্তুতি সভার কথা উল্লেখ ছিল, যেখানে অনুমান করা হয়েছিল বকশি স্টেডিয়ামে ২৫–৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে দর্শক উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। টিকিটের দাম কমিয়েও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।