থামেনি বৃষ্টি, পাহাড় থেকে নামছেন না অনেকেই
Published: 6th, July 2025 GMT
কয়েক দিন ধরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজার জেলায় পাহাড় ধসের শঙ্কা বাড়ছে। তবুও নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন না অনেকেই। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লানপাড়া গ্রামে পাহাড়ের পাদদেশ ঝুঁকি নিয়ে হাজারও মানুষকে বসবাস করতে দেখা গেছে। টানা বৃষ্টির পরও তারা সেখান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে না যাওয়া বিপাকে পড়েছে প্রশাসন।
পুরাতন পল্লানপাড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আবদুল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টি আসলে ভয়ভীতির মধ্য থাকতে হয়। তবে চলে যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করছে। কিন্তু আমাদের ঘরে ছাগল-হাস-মুরগি রয়েছে, সেগুলো নিয়ে চিন্তিত। তাই এখনও বাড়ি ছেড়ে যাইনি। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে মনে এখানে থাকা আর সম্ভব হবে না।’
আবু ছৈয়দ বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষায় যাওয়া-আসা খুব কষ্ট। সরকারের পক্ষে থেকে যদি নিরাপদ একটা আশ্রয় দেয় তখন আর পাহাড়ে কেউ থাকবে না।’
জুহুরা বেগম বলেন, ‘পাহাড় ধসে বাড়িঘর ভেঙে গেছে। পরিবারের সাত সদস্য রয়েছে। গতকাল আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছি। বৃষ্টি কমলে এখান থেকে কোথায় ফিরব জানি না।’
টেকনাফ পুরাতন পল্লান পাড়ার সিপিপি লিডার কুলসুমা আক্তার বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে আমাদের সিপিপির টিম পাহাড়ে অবস্থানরত বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে আসতে বলছে। এখন পর্যন্ত দেড়শ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। অনেক মানুষ সেখানে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।’
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে যারা বসবাস করছেন, তাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
২০১০ সালের ১৪ জুন সকাল থেকে রাতভর টানা বর্ষণে টেকনাফ উপজেলায় পাহাড় ধসে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া উখিয়ায় ২০১০ ও ১২ সালের টানা বর্ষণে পাহাড় ১৫ জন নিহত হয়েছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প হ ড় ধস ন র পদ বসব স
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ