কয়েক দিন ধরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। অতি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজার জেলায় পাহাড় ধসের শঙ্কা বাড়ছে। তবুও নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন না অনেকেই। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লানপাড়া গ্রামে পাহাড়ের পাদদেশ ঝুঁকি নিয়ে হাজারও মানুষকে বসবাস করতে দেখা গেছে। টানা বৃষ্টির পরও তারা সেখান থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে না যাওয়া বিপাকে পড়েছে প্রশাসন।

পুরাতন পল্লানপাড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী আবদুল্লাহ বলেন, ‘বৃষ্টি আসলে ভয়ভীতির মধ্য থাকতে হয়। তবে চলে যাওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করছে। কিন্তু আমাদের ঘরে ছাগল-হাস-মুরগি রয়েছে, সেগুলো নিয়ে চিন্তিত। তাই এখনও বাড়ি ছেড়ে যাইনি। যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে মনে এখানে থাকা আর সম্ভব হবে না।’

আবু ছৈয়দ বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষায় যাওয়া-আসা খুব কষ্ট। সরকারের পক্ষে থেকে যদি নিরাপদ একটা আশ্রয় দেয় তখন আর পাহাড়ে কেউ থাকবে না।’

জুহুরা বেগম বলেন, ‘পাহাড় ধসে বাড়িঘর ভেঙে গেছে। পরিবারের সাত সদস্য রয়েছে। গতকাল আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছি। বৃষ্টি কমলে এখান থেকে কোথায় ফিরব জানি না।’

টেকনাফ পুরাতন পল্লান পাড়ার সিপিপি লিডার কুলসুমা আক্তার বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে আমাদের সিপিপির টিম পাহাড়ে অবস্থানরত বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে আসতে বলছে। এখন পর্যন্ত দেড়শ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। অনেক মানুষ সেখানে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।’

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে যারা বসবাস করছেন, তাদের নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।

২০১০ সালের ১৪ জুন সকাল থেকে রাতভর টানা বর্ষণে টেকনাফ উপজেলায় পাহাড় ধসে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া উখিয়ায় ২০১০ ও ১২ সালের টানা বর্ষণে পাহাড় ১৫ জন নিহত হয়েছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প হ ড় ধস ন র পদ বসব স

এছাড়াও পড়ুন:

সাহেব আলীতে শুরু, বাটলারে স্বপ্নপূরণ

২০১০ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে পথচলা শুরু বাংলাদেশ নারী দলের। প্রথম ম্যাচেই ১-০ গোলে হার। তবে সেই হতাশা বেশি দিন থাকেনি। পরের ম্যাচে ৩১ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে আসে প্রথম জয়।

সেই শুরু থেকে আজ ২০২৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলাদেশ নারী দল খেলেছে ফিফা–স্বীকৃত টায়ার-১ শ্রেণির ৬৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এর মধ্যে জয় ২৭টি, হার ৩১টি, ড্র ১১টি। ১৫ বছরের এই পথচলায় সবচেয়ে উজ্জ্বল অর্জন—প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়া।

কোচ সাহেব আলী বেঁচে থাকলে আজ নিশ্চয়ই খুব খুশি হতেন। ১৯৭৭ সালের ১০ আগস্ট ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ২২ জন ছাত্রীকে নিয়ে ঢাকায় প্রথম মেয়েদের ফুটবলের অনুশীলন শুরু করেছিলেন তিনিই। তখন সাহেব আলী বলেছিলেন, এই মেয়েদের মধ্যেই ভবিষ্যতের ফুটবলার আছে। ৭-৮ জন অনেক দূর যেতে পারে। কিন্তু অর্থাভাবে কয়েক দিনের মধ্যেই সেই অনুশীলন বন্ধ হয়ে যায়। তারপর দীর্ঘ নীরবতা।

২০০৩ সালে ফিফা ও এএফসির চাপ না থাকলে হয়তো সেই নীরবতা আজও থাকত। বাধ্য হয়েই বাফুফে আবার চালু করে নারী ফুটবল। মাঠে এসে তখন ম্যাচ পণ্ড করে দেয় একশ্রেণির মানুষ। বাফুফে পিছিয়ে আসে। কিন্তু মেয়েদের ফুটবল চালু না রাখলে অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় ফিফা। সেই হুমকিই যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

আরও পড়ুনপাহাড়ি কন্যা ঋতুপর্ণা, যাঁর বাঁ পায়ের জাদুতে ইতিহাসের সামনে বাংলাদেশ০২ জুলাই ২০২৫

২০০৭ সালে ‘ভিশন এশিয়া’ প্রকল্পের অধীনে প্রথম মহিলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করে বাফুফে। ২০০৯ সালে শুরু হয় জাতীয় মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। এরপর গোলাম রব্বানীকে নারী দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর হাত ধরেই শুরু নতুন যাত্রা। যদিও বাফুফে ভবনে দীর্ঘমেয়াদি আবাসিক ক্যাম্পের আয়োজন দেখে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ভঙ্গুর কাঠামোর মধ্যে শুধু ক্যাম্প করে আর কত দূর যাওয়া যাবে? মেয়েদের অদম্য ইচ্ছার জোরে কত দূর যাওয়া যায়, তা তো আজ প্রমাণিতই।

২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেকের সময়টায় দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ ছিল বাংলাদেশ। ২০১১ সালে সাফের বাইরে প্রথম কোনো দল হিসেবে উজবেকিস্তানের সঙ্গে খেলার সুযোগ আসে। অলিম্পিক বাছাইয়ের সেই ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ।

গোলের পর আনন্দে কেঁদেই ফেললেন ঋতুপর্ণা চাকমা। উচ্ছ্বসিত মারিয়া মান্দা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাহেব আলীতে শুরু, বাটলারে স্বপ্নপূরণ