জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, “শেখ হাসিনা মাঝেমধ্যেই টুপ করে ঢুকে পড়তে চায়। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষরা বলে, শেখ হাসিনা ঢুকুক, তাকে ধরে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হবে এবং গণহত্যার বিচার করা হবে।”

রবিবার (৬ জুলাই) দুপরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জুলাই পদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

আখতার বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ এতটা সাহসী যে, বিএসএফ বন্দুক নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছে, আর আপনারা কাস্তে নিয়ে ওদের তাড়িয়ে দিয়েছেন। 'দিল্লী না ঢাকা' স্লোগানটি সবচেয়ে বেশি ধারণ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ।”

আরো পড়ুন:

কিছু দল হাসিনার ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছে: শামসুজ্জামান দুদু

শেখ হাসিনার বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে: প্রসিকিউটর

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারীরা যে নির্মম নির্যাতন করেছে, সেই নির্যাতনকে সায় দিয়ে দিল্লীর সরকার দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে, এমনকি এই চাঁপাইনবাবগঞ্জেও মাঝে মাঝে গুলি করে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের মানুষের লড়াই, মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই। দেশের মানুষ নিজেদের মর্যাদা, স্বতন্ত্র, ঐতিহ্য নিয়ে বাংলাদেশে বাস করবে। এতে ভারত, আমেরিকা, চীন আঙুল উঁচিয়ে কথা বলার সাহস পাবে না।”

তিনি আরো বলেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষরা দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। কিন্তু নতুন যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেই নতুন বাংলাদেশে আর কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। যে রক্ত, শ্রম ও জীবনের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই নতুন বাংলাদেশ আর পুরোনো সিস্টেমে, পুরোনা কায়দায় চলতে পারে না। বাংলাদেশকে নতুন ব্যবস্থায় নতুন কাঠামোতে পরিচালনর জন্য অবশ্যই একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।”

এর আগে, রবিবার দুপুর ২টায় জেলা শহরের শান্তিমোড় থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়। এরপর বাতেন খাঁর মোড়, নিমতলা মোড়, বড় ইন্দারা মোড়, গাবতলা মোড় হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভা শেষে এনসিপির জেলা কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন নেতারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা.

তাসনিম জারা, নাহিদা সারওয়ার নিভা, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সামান্তা সারমিন, যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অ্যাড. আলী নাছের খান, সাকিব মাহাদী, যুগ্ম-সদস্য সচিব এসএম সাইফ মোস্তাফিজ, মো. মাহিন সরকার, আরিফ সোহেল, যুগ্ম-আহ্বায়ক মনিরা শারমিন প্রমুখ।

ঢাকা/মেহেদী/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ র ম ন ষ নত ন ব

এছাড়াও পড়ুন:

হাসিনা সরকার আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করেছিল: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার গুম করেছিল, কিন্তু জনগণের দোয়ায় আমি আবার ফিরে এসেছি। প্রায় ১৪ বছর পর মুক্ত পরিবেশে আপনাদের সামনে কথা বলতে পারছি।’

আজ বুধবার দুপুরে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের বনকানন এলাকায় এক পথসভায় এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি কক্সবাজার-১ আসনের (চকরিয়া-পেকুয়া) দলীয় প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার নিজ সংসদীয় এলাকায় পাঁচ দিনের সফরে আসেন।

সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ সকাল ১০টার দিকে পেকুয়ার সিকদারপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা–মায়ের কবর জিয়ারত করে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। তাঁর জনসংযোগে মানুষের ঢল নামে। গ্রামীণ সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে সড়কের দুই পাশে নারী-পুরুষ দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।

বেলা ১১টায় পেকুয়ার সাঁকোরপাড় স্টেশনে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত পথসভায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ধানের শীষ দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যের প্রতীক। তিনি অসুস্থ। আমরা সবাই তাঁর জন্য দোয়া করছি।’

দ্বিতীয় দিনের সফরে সালাহউদ্দিন আহমদ সাঁকোরপাড় স্টেশন, শিলখালীর জারুলবনিয়া, মাঝেরঘোনা, এতিমখানা, কাছারীমোড়া, বারবাকিয়া বাজার, টৈটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা, বনকানন, টৈটং বাজার ও রাজাখালীর আরবশাহ বাজারে গণসংযোগ করেন। এ সময় অন্তত ১০টি পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি।

টৈটং ইউনিয়নের বনকানন এলাকায় জনসংযোগের সময় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার অনুপস্থিতিতে আমার স্ত্রীকে আপনারা বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছিলেন। এ জন্য আমি আজীবন আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এই ঋণ আমি প্রাণ দিয়েও শোধ করতে পারব না।’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। এখনো ভোটাধিকার পুরোপুরি প্রয়োগ করতে না পারলেও অদূর ভবিষ্যতে তা সম্ভব হবে।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই দেশ, এই দেশের মানুষ আমার প্রাণের অংশ। আপনাদের ভালোবাসায় সারা জীবন আবদ্ধ থাকতে চাই। আল্লাহ আবার সেবা করার সুযোগ দিলে সেটিই হবে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটাররা মুক্ত পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছে দেন উপস্থিত জনতার কাছে। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং তারেক রহমান একটি গণতান্ত্রিক দেশের নেতৃত্ব দেবেন।

পথসভায় উপস্থিত ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ, পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাহাদুর শাহ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন, পেকুয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কামরান জাদিদ, পেকুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আহসান উল্লাহ, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবু সিদ্দিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোটে আওয়ামী দোসরদের সুযোগ দিলে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও
  • হাসিনা সরকার আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করেছিল: সালাহউদ্দিন আহমদ