কনকচাঁপার টুকরো স্মৃতিতে এন্ড্রু কিশোর
Published: 6th, July 2025 GMT
১৫ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর। এর মধ্যে জনপ্রিয় আর কালজয়ী গানের তালিকাও এতো লম্বা যে, অনেক শিল্পীর গোটা ক্যারিয়ারের চেয়ে তা ভারি। আর তাই যথার্থভাবে তাকেই বলা হয় প্লেব্যাক সম্রাট। আজ কিংবদন্তি এই কণ্ঠশিল্পীর প্রস্থানের পাঁচ বছর পূর্ণ হলো। বছর ঘুরে এমন দিন এলেই তার জন্য মন কেঁদে ওঠে শ্রোতা ও সহশিল্পীদের।
এন্ড্রু কিশোরের বর্ণীল ক্যারিয়ারের অন্যতম সহশিল্পী কনকচাঁপা। তারা জুটি বেঁধে বহু শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। প্লেব্যাক সম্রাটের মৃত্যুদিনে ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করে এই গায়িকা জানালেন প্রতিক্রিয়া।
সোফায় দুইজন বসে থাকা একটি ছবি পোস্ট করে কনক চাঁপা লিখেছেন, ‘ভাবতেই অবাক লাগে কি নির্ভার, কী প্রশ্রয়ে এমন চুলার পাড়ের বিলাইয়ের মতো করে বড় ভাইয়ের সোফার হাতলে বসে ছিলাম আনন্দে। এমনই বড় ভাই ছোট বোন সম্পর্ক ছিল আমাদের। ‘তাঁর গানের সৌকর্য সৌন্দর্য কোয়ালিটি নিয়ে কথা না বললেও চলে। কিন্তু তিনি মানুষ হিসেবে কতটা আন্তরিক ছিলেন তা এই ছবিই বলে দেয়!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘পাঁচ বছর হয়ে গেলো! আশ্চর্য! অথচ তাকে ছাড়া বাংলাদেশ গানপ্রেমী মানুষের একদিন ও কি চলে! স্রষ্টা আপনাকে ভালো রাখুন কিশোর’দা।’
কনকচাঁপার সেই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে অনেকেই লিখেছেন তাদের মনে কথা। পলাশী আক্তার লিখেছেন, ‘আহ! কি জুটিটাই না ছিল এন্ড্রু কিশোর স্যার আর কনকচাঁপা ম্যামের। আর কোনদিন আসবে না এমন জুটি এবং সুন্দর সুন্দর নতুন গান।’ রিপন রানা নামের একজন লিখেছেন, ‘আমার শ্রদ্ধেয় প্রিয় এন্ডু কিশোর স্যারকে অনেক মিস করি।’ গৌরী দাস দোলা লিখেছেন, ‘বিনম্র শ্রদ্ধা। অবিরাম ভালোবাসা, যার শুনতে শুনতে লিখতে পারি মনের মাধুরী মিশিয়ে স্রষ্টা তুমি তাকে ভালো রেখো তোমার কাছে।’ শাহেদ আল সালেক লিখেছেন, ‘লিজেন্ড। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। বাঙালির হৃদয়ে চিরদিন বেঁচে থাকবেন।’ শাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া লিখেছেন, ‘ওনার অধিকাংশ গানই আমার মুখস্ত আছে কেন জানি ওনার গানের ভিতরে অনেক কিছু খুজে পাই।’
মূলত সিনেমার গানের শিল্পী (প্লেব্যাক গায়ক) হিসেবে কালজয়ী এন্ড্রু কিশোর। ১৯৭৭ সালে ‘মেইল ট্রেন’ সিনেমায় আলম খানের সুরে প্রথম গান করেন তিনি। তবে শ্রোতামহলে তার কণ্ঠ ছড়িয়ে পড়ে ১৯৭৯ সালের ‘প্রতিজ্ঞা’ সিনেমার ‘এক চোর যায় চলে’ গানের মাধ্যমে। তার গাওয়া কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমার ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা’, ‘তুমি আমার কত চেনা’, ‘সব সখিরে পার করিতে’, ‘ও সাথীরে’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি চাঁদের জোছনা নও’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’, ‘কিছু কিছু মানুষের জীবনে’, ‘এক বিন্দু ভালোবাসা দাও’ ইত্যাদি।
শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে এন্ড্রু কিশোর ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। এছাড়া বাচসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারও রয়েছে তার অর্জনের খাতায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কনকচ প এন ড র ক শ র এন ড র
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’