সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ: নাহিদ ইসলাম
Published: 6th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গ্রেনেড মারে, বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এসব আগ্রাসন আর মেনে নেওয়া হবে না।
আজ রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জে এনসিপির পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথাগুলো বলেন। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তির মোড় থেকে বেলা দুইটায় শুরু হয় এনসিপির জুলাই পদযাত্রা। পদযাত্রাটি শহরের বাতেন খাঁর মোড়, নিমতলা মোড়, বড়ইন্দারা মোড়, গাবতলা মোড় হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে পথসভা হয়।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে দাদাদের। সেই বাহাদুরির দিন শেষ হয়েছে। যদি আর কোনো সীমান্তে পাঁয়তারা করা হয়, যদি সীমান্তে আগ্রাসন চালানো হয়, সীমান্তে আমার ভাইদের ওপর হত্যার চেষ্টা চালানো হয়, আমরা সীমান্তে লংমার্চ ঘোষণা করব। আমাদের সীমান্ত আমরাই রক্ষা করব।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের পর আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ চেয়েছি। আমরা রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার চেয়েছি। গণহত্যাকারীদের বিচার চেয়েছি। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ চেয়েছি। আমরা জানি, এ দাবি আপনাদের সকলের দাবি। আমরা এসেছি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বার্তা নিয়ে। যে বার্তা একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের জন্য আমাদের স্বপ্ন দেখায়, যে বার্তা একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়, আমরা সেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমাদের সীমান্ত প্রতিরোধের প্রতীক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ মানে সীমান্তে কাস্তে হাতে বসে থাকা সেই কৃষক। আমরা সেই কৃষকের সন্তান। যারা বুক চিতিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। বুলেট-গুলি বুকে নিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এত ঐতিহ্যবাহী জেলা হওয়া সত্ত্বেও এই আমকে, এটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে, এটাকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে, এটাকে রপ্তানি করতে কোনো ধরনের উদ্যোগ আমাদের কোনো সরকারই নেয়নি এখন পর্যন্ত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেশমশিল্পের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এটা দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এ–জাতীয় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। আমরা চাই বাংলাদেশের যেসব জাতীয় শিল্প রয়েছে, কুটির শিল্প রয়েছে, সেগুলোকে যথাযথভাবে রক্ষা করতে হবে।’
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সদস্য আসিফ মোস্তফা জামাল। সূচনা বক্তব্য দেন এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান সমন্বয়কারী আলাউল হক। সঞ্চালনা করেন দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য তাজনুভা জাভিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ইনব বগঞ জ ন হ দ ইসল ম এনস প র আম দ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনা সরকার আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করেছিল: সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার গুম করেছিল, কিন্তু জনগণের দোয়ায় আমি আবার ফিরে এসেছি। প্রায় ১৪ বছর পর মুক্ত পরিবেশে আপনাদের সামনে কথা বলতে পারছি।’
আজ বুধবার দুপুরে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের বনকানন এলাকায় এক পথসভায় এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি কক্সবাজার-১ আসনের (চকরিয়া-পেকুয়া) দলীয় প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার নিজ সংসদীয় এলাকায় পাঁচ দিনের সফরে আসেন।
সফরের দ্বিতীয় দিনে আজ সকাল ১০টার দিকে পেকুয়ার সিকদারপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবা–মায়ের কবর জিয়ারত করে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন তিনি। তাঁর জনসংযোগে মানুষের ঢল নামে। গ্রামীণ সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে সড়কের দুই পাশে নারী-পুরুষ দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।
বেলা ১১টায় পেকুয়ার সাঁকোরপাড় স্টেশনে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত পথসভায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ধানের শীষ দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যের প্রতীক। তিনি অসুস্থ। আমরা সবাই তাঁর জন্য দোয়া করছি।’
দ্বিতীয় দিনের সফরে সালাহউদ্দিন আহমদ সাঁকোরপাড় স্টেশন, শিলখালীর জারুলবনিয়া, মাঝেরঘোনা, এতিমখানা, কাছারীমোড়া, বারবাকিয়া বাজার, টৈটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা, বনকানন, টৈটং বাজার ও রাজাখালীর আরবশাহ বাজারে গণসংযোগ করেন। এ সময় অন্তত ১০টি পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি।
টৈটং ইউনিয়নের বনকানন এলাকায় জনসংযোগের সময় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘২০০৮ সালে আমার অনুপস্থিতিতে আমার স্ত্রীকে আপনারা বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছিলেন। এ জন্য আমি আজীবন আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এই ঋণ আমি প্রাণ দিয়েও শোধ করতে পারব না।’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি। এখনো ভোটাধিকার পুরোপুরি প্রয়োগ করতে না পারলেও অদূর ভবিষ্যতে তা সম্ভব হবে।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই দেশ, এই দেশের মানুষ আমার প্রাণের অংশ। আপনাদের ভালোবাসায় সারা জীবন আবদ্ধ থাকতে চাই। আল্লাহ আবার সেবা করার সুযোগ দিলে সেটিই হবে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোটাররা মুক্ত পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সালাম পৌঁছে দেন উপস্থিত জনতার কাছে। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং তারেক রহমান একটি গণতান্ত্রিক দেশের নেতৃত্ব দেবেন।
পথসভায় উপস্থিত ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ, পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাহাদুর শাহ, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন, পেকুয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কামরান জাদিদ, পেকুয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আহসান উল্লাহ, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবু সিদ্দিক।