শিক্ষকদের ভূমিকা থেকে আমরা বিচ্যুত হয়েছি: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 6th, July 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) বলেছেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের যে ভূমিকা হওয়ার কথা ছিল, সেটি থেকে আমরা বিচ্যুত হয়েছি। আমাদের অবশ্যই রাজনৈতিক বিশ্বাস ও রাজনৈতিক দলের সমর্থন থাকবে। কিন্তু ওই রাজনৈতিক দলের নেতিবাচক প্রভাবগুলো আমরা আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ফেলতে পারি না। আমাদের মাথায় রাখতে হবে, এখানে আমরা মেধার বিকাশ ঘটাতে এসেছি। রাজনৈতিক দলের নেতিবাচক প্রভাব যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে বিনষ্ট করতে না পারে, সেদিকে শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে।’
আজ রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, ‘অবশ্যই তোমরা বিশাল কিছু অর্জন করেছ। কিন্ত তোমাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণ, শ্রমজীবী মানুষ তাঁরাও এই অর্জনে ভূমিকা রেখেছেন। তাঁদের সমর্থন ছাড়া তোমরা এটা করতে পারতে না। তোমাদের এই সংগ্রামে বিভিন্ন সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী এগিয়ে এসেছিল। শিক্ষকের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো কাজ তোমাদের করা যাবে না। তোমাদের হতাশা থাকতে পারে, তোমাদের কিছু দাবিদাওয়া থাকতে পারে, কিন্তু তার জন্য জনদুর্ভোগকারী কোনো কাজ তোমরা কোরো না।’
অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এ অধ্যাপক বলেন, ‘বর্তমান সরকারের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী সংস্কার। কিন্তু রাতারাতি এটি সম্ভব নয়। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে এম আজহারুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। আরও বক্তব্য দেন সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মতিয়ার রহমান প্রমুখ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মারকপত্রের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন-১ চত্বরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা, বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। এর পর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক উপদ ষ ট আম দ র আবর র
এছাড়াও পড়ুন:
ছেলেদের পড়াশোনা করাতে কী কষ্টটাই না করেছেন এই মা, পেয়েছেন সরকারের শ্রেষ্ঠ সফল জননীর সম্মাননা
‘কষ্ট হয়েছে, খেয়ে না-খেয়ে থেকেছি, কিন্তু ছেলেদের পড়ালেখা বন্ধ করিনি। তিন ছেলেই এখন চাকরি করে। নাতি-নাতনিদের নিয়ে ভালোই আছি।’
ভালো যে আছেন, মেরিনা বেসরার মুখের হাসিতেই তা ফুটে উঠল। তাঁর বড় ছেলে মাথিয়াস মুর্মু বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) হাবিলদার। মেজ ছেলে মানুয়েল মুর্মু ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আর ছোট ছেলে সামুয়েল মুর্মু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব। সন্তানদের যোগ্য করে গড়ে তোলার স্বীকৃতি হিসেবে গত মার্চে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৫’-এ শ্রেষ্ঠ সফল জননীর সম্মাননা পেয়েছেন ৬৭ বছর বয়সী এই নারী। এলাকায় সবাই তাঁকে এখন মান্য করে।
অথচ কী কষ্টেই না কেটেছে তাঁর প্রথম দিকের জীবন। নিজেই সেই দিনগুলের কথা বললেন মেরিনা, ‘মানুষের জমিতে কাজ করে দৈনিক পেতাম ২০ থেকে ৩০ টাকা। তিন ছেলেসহ পাঁচজনের সংসার। ওদের বাবা ঘরামির (রাজমিস্ত্রি) কাজ করত। মাঝেমধ্যে বড় ছেলেও ওর বাবার সাথে কাজে যেত। এভাবেই ছেলেদের বড় করেছি।’
গত মার্চে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘অদম্য নারী পুরস্কার-২০২৫’-এ শ্রেষ্ঠ সফল জননীর সম্মাননা পেয়েছেন মেরিনা বেসরা