সিলেটে ভারত সীমান্তের অভ্যন্তরে গাছে ঝুলছিল বাংলাদেশি যুবকের লাশ
Published: 19th, June 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে একটি গাছে জাকারিয়া আহমদ (২৫) নামের এক বাংলাদেশি তরুণের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের লামা গ্রামের ওপারে লাশটি পাওয়া যায়। ভারত সীমান্তের ভেতরে হওয়ায় বিজিবি ও পুলিশ এখনো লাশটি উদ্ধার করতে পারেনি।
নিহত জাকারিয়া আহমদ উপজেলার উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী লামা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় তাঁর লাশ ওই গাছে ঝুলছিল। পুলিশ ও বিজিবি তাঁর লাশ ফেরত আনতে স্বজনদের থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দিয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাকারিয়া আহমদ সম্প্রতি বিয়ে করেন। তাঁর বাড়ি কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র উৎমাছড়া-সংলগ্ন এলাকায়। আজ সকাল ৬টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন ভারত সীমান্তের ১২৫৭ নম্বর খুঁটির কাছে একটি গাছের সঙ্গে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি বিজিবি ও পুলিশকে জানানো হয়।
উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, সীমান্ত এলাকার বিষয়গুলো বিজিবির সহায়তা নিয়ে করতে হয়। যেহেতু ঘটনাটি ভারত সীমান্তের অভ্যন্তরে, যার কারণে পুলিশ কিংবা বিজিবি ঘটনাস্থলে যেতে পারছে না। বিজিবি সদস্যরা এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করতে পরামর্শ দিয়েছেন। জিডির পর সেই সূত্র ধরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে লাশটি ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ভারত সীমান্তের প্রায় ২০ থেকে ২৫ গজ অভ্যন্তরে আছে। লাশটি ফিরিয়ে আনার পর ময়নাতদন্ত করলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ময়নাতদন্ত শেষে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইন জুয়ায় জড়িতদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার চিন্তা
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, যারা অনলাইন বেটিংয়ে জড়িত, তাদের মোবাইলে ইন্টারনেটের গতি সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সভায় ফয়েজ আহমদ বলেন, দেশকে অনলাইন জুয়া থেকে মুক্ত করতে হলে জুয়ার চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে লিংকের গতি ধীর করা এবং যে নম্বর বা এমএফএস (মোবাইলে আর্থিক সেবা) অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যাচাইয়ের পর এসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হবে। তবে ন্যায্যতা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া সিম ও এমএফএসের ইকেওয়াইসি (গ্রাহকের পরিচয় যাচাই) সমন্বয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন
কমিশনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, অনলাইন জুয়া বন্ধে বিটিআরসি থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মেইল দেওয়া শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো কীভাবে তাদের ওয়েব ব্রাউজার ও এডসেন্স সেটআপ করবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ভেটিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভেটিং শেষে তা সংশ্লিষ্ট সব গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল বিজ্ঞাপনসংক্রান্ত গাইডলাইনও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এটা অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হবে।
সভায় তিনি আরও জানান, অনলাইন জুয়ায় জড়িত প্রায় ৫ হাজার এমএফএস হিসাব ইতিমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। সরকার এখন একটি কমন ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার) তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, প্ল্যাটফর্ম ও অপারেটরদের সমন্বয়ে তথ্য সংরক্ষণ ও নজরদারি করা হবে।
সভায় বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের পর সিম সংখ্যা ১০টিতে সীমিত করলে জুয়া প্রতিরোধে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে যারা জুয়া খেলছে, তাদের শনাক্ত করাও জরুরি।
সভায় অনলাইন স্ক্যাম ও জুয়া প্রতিরোধে মাদক অধিদপ্তরের মতো একটি বিশেষ সংস্থা গঠন এবং ক্রস-ডোমেইন মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার প্রস্তাব করা হয়।
সভায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে সার্ভিস, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।