বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা অনুমোদন দিল বিশ্বব্যাংক
Published: 21st, June 2025 GMT
বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বর্তমান বাজারদরে এর পরিমাণ ছয় হাজার কোটি টাকার কিছুটা বেশি।
আজ শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে এই অর্থ খরচ করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, এই অর্থসহায়তা মূলত সরকারি রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা উন্নয়ন, করনীতির স্বচ্ছতা, ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা জোরদার এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারি সেবায় ই-প্রকিউরমেন্ট চালুর মতো সংস্কারমূলক পদক্ষেপে খরচ করা হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা অনুমোদন দিয়েছে। ৩০ জুনের আগেই বিশ্বব্যাংক ও এডিবির বাজেট সহায়তার অর্থ হাতে পাবে বাংলাদেশ। এর মানে, ৩০ জুনের আগে প্রায় ১০০ কোটি ডলার পাচ্ছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া আগামী সোমবার ঋণের দুই কিস্তির অর্থও অনুমোদন হতে পারে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বোর্ড সভায়। কিস্তি অনুমোদন হলে সেখান থেকে মিলতে পারে আরও ১৩০ কোটি ডলার। অনুমোদনের দুই সপ্তাহের মধ্যে এই অর্থ বাংলাদেশ পাবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন জরুরি। এই অর্থায়ন দেশের নীতিমালাকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের আওতায় যেসব মূল উদ্যোগ হবে—জাতীয় সংসদের মাধ্যমে কর অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেওয়াকে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্যে আনা; ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা; ২০২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদন জনগণের সামনে উন্মুক্ত করার কৌশল প্রণয়ন; সরকারি কেনাকাটায় ই-জিপি বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি দরপত্র প্রক্রিয়ার আরও প্রতিযোগিতামূলক করা।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা বলেন, এই অর্থায়ন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে নাগরিকদের চাহিদা পূরণে সরকারকে সহায়তা করবে। পাশাপাশি দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক ধাক্কায় দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য সহায়তা নিশ্চিত করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বব য ব যবস থ র অর থ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ সেলিমের ৩৫ ব্যাংক হিসাব ও ২৩ বিও হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর ২৩টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশও দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন বুধবার রাতে এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে বলা হয়, শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে–বিদেশে বিপুল পরিমাণ স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। একই সঙ্গে দুদক শেখ সেলিমের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব ও ২৩টি বিও হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২৮ আগস্ট শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাদের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়। ব্যাংক হিসাব জব্দের এ তালিকায় থাকা বাকিরা হলেন শেখ সেলিমের স্ত্রী ফাতেমা সেলিম, তাঁর ছেলে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ফজলে ফাহিম ও শেখ ফজলে নাইম এবং মেয়ে শেখ আমিনা সুলতানা সনিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠায়।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাঁদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা এবং তাঁদের নামে কোনো লকার থাকলে তার ব্যবহার ৩০ দিনের জন্য বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ২০ আগস্ট শেখ সেলিম, তাঁর ছেলে ফজলে ফাহিমসহ পরিবারের সবার ব্যাংক হিসাব তলব করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ছাত্র আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর অনেক মন্ত্রী-এমপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করা হয়।