মুম্বাইয়ে শাহরুখ খানের বাসভবন ‘মান্নাত’-এর সংস্কারকাজ চলছে। দুই বছরের জন্য সংস্কারকাজ চলবে। তাই কিং খান আর তাঁর পরিবার এ বছরে তল্পিতল্পা গুটিয়ে বান্দ্রার পালি হিলের একটি ভাড়া অ্যাপার্টমেন্টে গেছেন। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, মান্নাতে নাকি অবৈধভাবে নির্মাণকাজ চলছে। সত্যিই কি তা–ই? অনেক গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর ব্যাখ্যা দিয়েছেন শাহরুখের ম্যানেজার পূজা দাদলানি।

শাহরুখ খানের বাসভবন মান্নাতে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগের পর সেখানে পৌঁছায় মুম্বাই পৌরসভা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের একটি দল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, এক পরিবেশকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁরা যাচাই করতে যান, নির্মাণে কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে কি না।

আরও পড়ুনযে কারণে ‘মান্নাত’ ছেড়ে ৯ কোটি টাকার ভাড়া বাসায় যাচ্ছেন শাহরুখ০৩ মার্চ ২০২৫

পরিদর্শনে আসা কর্মকর্তাদের শাহরুখ খানের কর্মীরা জানান, প্রয়োজনীয় সব অনুমতিপত্র এবং সংশ্লিষ্ট নথি যথাযথভাবে দাখিল করা হবে। শাহরুখ খানের ম্যানেজার পূজা দাদলানি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই। সব কাজ নিয়ম অনুযায়ীই চলছে।’

বন বিভাগের এক কর্মকর্তা পত্রিকাটিকে জানান, ‘সংস্কারের অনুমতি–সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা পরিদর্শন করেছি। আমরা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন তৈরি করব।’ তিনি আরও জানান, বন দপ্তরকে সহায়তা করতেই পৌরসভার কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

তবে সমাজকর্মী সন্তোষ দাউন্ডকর অভিযোগ করেন, শাহরুখ খানের বাড়ির নির্মাণে একাধিক অনিয়ম হয়েছে। সাবেক আইপিএস কর্মকর্তা ওয়াই পি সিং দাবি করেন, নগর জমিসীমা আইনের ফাঁক গলিয়ে ১২টি ছোট ফ্ল্যাট অনুমোদন করিয়ে পরে সেগুলো মিলিয়ে একটি বিলাসবহুল আবাসস্থলে রূপ দেওয়া হয় মান্নাতকে। তাঁর অভিযোগ, এতে পৌর সংস্থার সহায়তা ছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনুন

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে কূটনীতিকসহ ইরানে যেসব বাংলাদেশি আছেন, তাঁরা ভয়াবহ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছেন। তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সারি ও রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকিতে আছে। বিবিসি বাংলার খবরে জানা যাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় বাংলাদেশের একজন কূটনীতিকের বাসভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনিসহ তেহরান দূতাবাসের ৪০ জন কর্মীকে নিরাপদ স্থানে সরানোর প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু গোটা ইরানই যখন ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্যবস্তু, তখন সেটা কতটা নিরাপদ, তা ভেবে দেখার বিষয়।

মঙ্গলবার ঢাকায় ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির নিরাপত্তা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন বাংলাদেশি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

কিন্তু ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। কোনো কোনো সূত্র বলেছে, আরও বেশি। উল্লেখসংখ্যক বাংলাদেশি ইরানিদের বিয়ে করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাঁরা হয়তো ইরানি সমাজে মিশে যেতে পারবেন। কিন্তু যেসব বাংলাদেশি সমুদ্র অঞ্চলে মাছ ধরাসহ ছোটখাটো কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় আছেন। অনেকের বৈধ কাগজপত্র নেই। আবার কিছু বাংলাদেশি ইরানের ডিটেনশন সেন্টারে (আটককেন্দ্র) আছেন। এর বাইরে কিছু বাংলাদেশি আছেন পেশাজীবী, যাঁরা গণমাধ্যম ও চিকিৎসাসেবা খাতে কাজ করছেন।

রুহুল আলম সিদ্দিকী জানান, ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিকসহ দূতাবাসের ৪০ জনকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার রাতে ইরানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রদূতের নির্ধারিত বাসভবন ছেড়ে গেছেন। পররাষ্ট্রসচিব যতই বলুন সবাইকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু ইরানে এখন যে পরিস্থিতি, তাতে নিরাপদ স্থানে যাওয়া মোটেই সহজ নয়। ইরানের সঙ্গে বহির্বিশ্বের বিমান যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ। এ অবস্থায় ইরান ত্যাগ করা কঠিন। স্থলপথে তুরস্ক, পাকিস্তান হয়তো যাওয়া গেলেও সেটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়সাপেক্ষ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তার ভাষ্যে জানা যাচ্ছে, ইরানে অবস্থিত সব বাংলাদেশি এখনো তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। সে ক্ষেত্রে দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরই উচিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। প্রয়োজনে ইরান সরকারের সহায়তা নিতে হবে। তবে এ সময় তারা কতটা সহায়তা দিতে পারবে, সেই প্রশ্নও আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন তেহরান শহর খালি করার কথা বলেন, তখন উদ্বিগ্ন হতে হয় বটে। ইরানে যেসব বাংলাদেশি আছেন, তাঁদের বৈধ কাগজপত্র থাকুক আর না-ই থাকুক বাংলাদেশ সরকারের কর্তব্য হবে তাঁদের জীবন বাঁচানো। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে জানা যাচ্ছে, এরই মধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও পাকিস্তান তাদের নাগরিকদের ইরান থেকে সরিয়ে আনছে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারকে আমাদের নাগরিকদের ইরান থেকে সরিয়ে আনার জন্য জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহায়তা নিতে হবে। যেকোনোভাবেই বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে আনতে হবে।

আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হবে। কিন্তু সেটি যদি না হয়, তাহলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে; যা কারও কাম্য নয়। যুদ্ধ প্রলম্বিত ও বিস্তৃত হলে ইসরায়েলের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয়ও যেসব বাংলাদেশি আছেন, তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়েও সরকারকে সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অশ্রু আর ভালোবাসায় মামুন রেজাকে চিরবিদায়
  • নারায়ণগঞ্জকে সুনামের পথে নিয়ে আনতে চেষ্টা করছি : গিয়াস উদ্দিন
  • নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনুন