যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান যেতে পারে দিয়েগো গার্সিয়ায়
Published: 21st, June 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের হোয়াইটম্যান বিমানঘাঁটি থেকে একাধিক মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান উড্ডয়ন করেছে। বিমানগুলো প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে গুয়ামে যেতে পারে। তবে বিমানগুলোর গন্তব্য হতে পারে ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া।
ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় শনিবার বিকেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউ জার্সি থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার কথা। স্থানীয় সময় আজ বিকেল ও আগামীকাল রোববার হোয়াইট হাউসে নিজের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বি-২ বিমান ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বোমা বহনে সক্ষম, যা ‘বাংকার-বাস্টার’ নামে পরিচিত। বি–২ বিমান থেকে এই বোমা ফেলে ইরানের ফর্দো ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করা সম্ভব বলে ধারণা করা হয়। ইরানে সরাসরি হামলায় যুক্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র এই বোমারু বিমান দিয়েই ফর্দোতে আঘাত করা হতে পারে বলে আলোচনা আছে।
কিছু ফ্লাইট ট্র্যাকার (বিমান চলাচলের তথ্যদাতা প্রতিষ্ঠান) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, বি–২ বিমানগুলো গুয়ামের দিকে যাচ্ছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। তবে বিমানগুলোর গন্তব্য বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি নিউইয়র্ক টাইমস। কিছু রিফুয়েলিং ট্যাংকার বিমান বি-২ বিমানগুলোর সঙ্গী হয়েছে বলে জানা গেছে।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুয়াম থেকে বিমানগুলো ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ায় নিজেদের সামরিক ঘাঁটির দিকে যেতে পারে। এর অর্থ হলো এখানে এলে একবার জ্বালানি নিয়েই বিমানগুলো ইরানে সরাসরি হামলা চালিয়ে আবার ফেরত আসতে পারবে।
তবে বি-২ বিমানের উড্ডয়ন বা নির্দিষ্ট ঘাঁটিতে পাঠানো মানেই ট্রাম্প ইরানে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, বিষয়টি এমন নয়। সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও সেনা কমান্ডারদের সামনে নানা বিকল্প হাজির করতে সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়। তারই অংশ হিসেবে বোমারু বিমান এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
হোয়াইট হাউসের নিয়মিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ট্রাম্প স্থানীয় সময় আজ সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নিরাপত্তা দলকে নিয়ে বৈঠক করবেন। আগামীকাল রোববারও একই রকম বৈঠক হবে। ট্রাম্প সাধারণত সপ্তাহান্তের দুই দিনই শহরের বাইরে নিজের কোনো অবকাশ যাপনকেন্দ্রে কাটান।
হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের বৈঠক নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে ৩০ হাজার পাউন্ডের বাংকার-বাস্টার বোমাগুলোও ফর্দো ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনার প্রকৃত ক্ষতি হয়তো করতে পারবে না। কারণ, বোমাগুলো এতটা গভীরে পৌঁছাতে পারবে কি না, নিশ্চিত নয়। এই বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প চিন্তাভাবনা করছেন। হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে তিনি এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
আরও পড়ুনসংকট সমাধানে দুই সপ্তাহে কতটা সফল হবেন ট্রাম্প৮ ঘণ্টা আগেগত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি বিবৃতি পড়ে শোনান। এতে ট্রাম্প বলেন, ‘নিকট ভবিষ্যতে ইরানের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচনা না-ও হতে পারে। এর ওপর ভিত্তি করে (সংঘাতে) যাব কি যাব না, সে বিষয়ে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।’
এই সময় দেওয়ার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প আসলে কী করতে চাইছেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প ইরানকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে পরমাণু আলোচনায় নতুন চুক্তিতে সম্মত হতে হবে। তা না হলে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানে হামলা চালাবে।
আরও পড়ুনইরানে হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্রকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না উপসাগরীয় দেশগুলো০২ এপ্রিল ২০২৫ইসরায়েল ১৩ জুন ইরানে হামলা চালানোর পর পাল্টা হামলা চালায় ইরান। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। তবে ট্রাম্প ‘দুই সপ্তাহ’ সময়ের কথা বলার পর ইরানের সঙ্গে নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গতকাল এ বিষয়ে জেনেভায় বৈঠক হয়েছে। আবারও বৈঠকে বসার বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে দুই পক্ষই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র
এছাড়াও পড়ুন:
পেঁয়াজের দাম প্রতিবছর বাড়ে কেন?
বাঙালির রান্নাঘরের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো পেঁয়াজ। কিন্তু প্রতিবছর একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই পেঁয়াজের ঝাঁঝে পুড়তে হয়। বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি এখন দেশের সাধারণ মানুষের কাছে একটি বার্ষিক আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু এই অস্থিরতার কারণ কী?
সাধারণ সরবরাহের ঘাটতি, নাকি এর আড়ালে লুকিয়ে রছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সংঘবদ্ধ কারসাজি? কেন সরকার শত চেষ্টা করেও এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এইসব প্রশ্নের উত্তরে বেশ কিছু তথ্য জানা গেছে।
উৎপাদন ও সরবরাহের সমস্যা:
দেশে সাধারণত শীতকালে (রবি মৌসুম) পেঁয়াজ উৎপাদন হয় এবং তা সংরক্ষণ করে সারা বছরের চাহিদা মেটানো হয়। গ্রীষ্মকালে দেশি পেঁয়াজ প্রায় শেষ হয়ে এলে বাজারে সরবরাহ কমে যায়। নতুন পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) বাজারে আসার আগ পর্যন্ত একটি সংকটকাল তৈরি হয়। পেঁয়াজ উৎপাদনের বীজ, সার এবং শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে বলে দাবি করছে বিক্রেতারা।
এছাড়া দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য আধুনিক ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে উৎপাদনের পর প্রায় ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ সংরক্ষণ, পরিবহন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় নষ্ট হয়ে যায়। এই বিপুল পরিমাণ নষ্ট হওয়া সরবরাহকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
মজুতদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি:
বাজারে অতি মুনাফার লোভে এক শ্রেণির মজুতদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি করে প্রতি বছর মৌসুমের শেষে যখন সরবরাহ কমতে শুরু করে তখন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পেঁয়াজ গুদামজাত করে রাখেন এবং বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দেন। ফলে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
সাধারণ খুচরা বিক্রেতারা বলছে, পেঁয়াজের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক নিয়মে হয় না বরং একটি পরিকল্পিত সিন্ডিকেট এর পেছনে কাজ করে। যারা বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দ্রুত বিপুল মুনাফা লুটতে চায়। এর সাথে জড়িত বড় বড় কোম্পানির আমদানিকারক। এছাড়া সরকারকে চাপে রাখতে অনেক সময় এই ধরনের সিন্ডিকেট পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়িয়ে সরকারকে আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে থাকে। ফলে সরকার বাধ্য হয়ে আমদানির অনুমতি দেয়।
আমদানি নির্ভরতা ও ভারতের রপ্তানি নীতি:
দেশে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পুরোপুরি মেটানোর মতো পর্যাপ্ত ও দীর্ঘস্থায়ী মজুত না থাকায় বাংলাদেশকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। মূলত, প্রতিবেশী দেশ ভারতের উপর এই নির্ভরতা অনেক বেশি।
এই সুযোগে ভারতে যখন পেঁয়াজের দাম বাড়ে বা উৎপাদন কম হয়, তখন সেখানকার সরকার তাদের অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করে আবার কখনো কখনো পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের বাজারে, কারণ আমদানির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশি পেঁয়াজের ওপর চাপ বাড়ে এবং দাম লাফিয়ে বাড়ে।
এছাড়া দেশি কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অনেক সময় সরকার নির্দিষ্ট সময়ে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে দেরি করে। এই বিলম্বও বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে দাম বাড়িয়ে দেয় অতি মুনাফার লোভী ব্যবসায়ীরা।
সংরক্ষণে দুর্বলতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ:
দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত ও আধুনিক অবকাঠামো নেই। ফলে কৃষকের ঘরে বা সাধারণ গুদামে দীর্ঘ সময় রাখলে আর্দ্রতা ও অন্যান্য কারণে অনেক পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যায়। বিক্রেতারা বলছে যদি পেঁয়াজ সংরক্ষণে জন্য আধুনিক হিমাগার তৈরি করা হয় তাহলে কিছু বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকলে প্রতিবছর পেঁয়াজ দাম বাড়ার প্রবণতা কমে আসবে।
এছাড়া অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, বন্যা বা বৈরী আবহাওয়ার জন্য পেঁয়াজের ফলনকে সরাসরি প্রভাবিত করে। আবার, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত মজুত করা পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার হার অনেক বাড়িয়ে দেয়। ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
কৃষক ও ক্রেতাদের মনোভাব:
বেশি লাভের আশায় অনেক সময় কৃষক তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ মজুত করে রাখে। আবার এই মজুত করা পেঁয়াজ বৈরী আবহাওয়ার জন্য অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা যায়। যাতে দাম বেড়ে যায়।
আবার এক শ্রেণির ক্রেতা আছে যারা দাম বাড়ার প্রবণতা শুরু হলেই আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনে মজুত করা শুরু করেন। যা বাজারে বিদ্যমান সংকটকে আরো অস্থির করে তোলে। এই ধরনের ক্রেতাদের জন্য বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে যা বেড়েছে ৪৪.৮৩ শতাংশ।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় ৩৬ লাখ টন। উৎপাদন হয়েছিল ৩৪ লাখ ১৭ হাজার টন। এ অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮ লাখ টন। চলতি মৌসুমে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন প্রত্যাশিত মাত্রার কাছাকাছি হয়েছে। এবার উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ টন।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে যানা যায়, গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২২৫ টাকা। বিক্রেতারা আশঙ্কা করছে সামনের দিনগুলোতে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শফিক বেপারির কাছে হঠাৎ দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এটা তো আর নতুন কথা নয়! প্রতিবছর এই সময়ে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যেই দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসবে, এই মুহূর্তে আমদানি অনুমতি যাতে দেওয়া হয় সেজন্য বড় বড় ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। কিন্তু সাধারণ ক্রেতারা এসে তাদের ক্ষোভ আমাদের উপর প্রকাশ করে। পেঁয়াজের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমাদের কোন হাত নেই।”
রাজধানীর নিউমার্কেটের আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নাজমুল সিকদার রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। এ সপ্তাহে আমাদের কিনতে হয়েছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। পরিবহন, লেবার, দোকান ভাড়া ও কর্মচারী খরচ দিয়ে ১২০ টাকা বিক্রি করলে আমাদের লস হয়। তারপরও ১২০ টাকা বিক্রি করতে হয়। পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি। আমরাও চাহিদা তুলনায় কম নিয়েছি। কিন্তু এক শ্রেণির ক্রেতা আছে যারা দাম বাড়বে শুনে বেশি করে কিনে রাখে। তাদের জন্য এই সমস্যাটা বেশি সৃষ্টি হয়। কারন যারা কম কেনে তখন তারা এসে আর নিতে পারে না। পাইকারি বিক্রেতারা আমাদেরকে জানিয়েছে পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা যে যার মত করে পারছে নিয়ে রাখছে।”
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতারা শাহিন হাওলাদার রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “যদি সরবরাহ বাড়ে অথবা সরকার যদি পেঁয়াজ আমদানের অনুমতি দেয় তাহলে সামনের দাম কমতে পারে। অন্যথায় দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। দেশে এখন পেঁয়াজের মজুত সেইভাবে নেই। আর এবার বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রথমদিকে অনেকের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসা পর্যন্ত দাম বলে আশঙ্কা করছি।”
রাজধানীর নিউমার্কেটে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহিণী কাকলী আক্তার বলেন, “বাংলাদেশ সবকিছু সম্ভবের দেশ। যে যার মত করে পারছে সে সেভাবে কামিয়ে নিচ্ছে। এদেশের সাধারণ মানুষের কথা কেউ কখনো ভাবেনি। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ কিনেছি ৮০ টাকায়, এ সপ্তাহের পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়! এর থেকে দুঃখের বিষয় কি আছে! এখানে সাধারণ মানুষের কথার কোন মূল্য নেই। আমাদের তো আয় ইনকাম বাড়ে না, কিন্তু দিনকে দিন সবকিছু দাম বাড়তে থাকে।”
ঢাকা/এস