বগুড়ার আলোচিত যুবলীগ নেতা মতিন সরকার ঢাকায় গ্রেপ্তার
Published: 22nd, June 2025 GMT
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যা মামলার পলাতক আসামি বগুড়ার যুবলীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকারকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর বছিলার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
আবদুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা ছাড়াও অস্ত্র, মাদক আইনেও ডজন খানেক একাধিক মামলা রয়েছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যাসহ আরও ডজন খানেক মামলায় আসামি হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকা থেকে মতিন সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে করেছিলেন। রাজধানীতে সপরিবার তিনি বসবাস করে আসছিলেন। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে হত্যাসহ ডজন খানেক মামলার আসামি তিনি। অতীতেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হতা, মাদক, অস্ত্র আইনে হাফ ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।
এর আগে দুদকের করা মামলায় চলতি বছরের ১১ মার্চ বগুড়ার বিশেষ জজ আদালতে আবদুল মতিন সরকারকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অপরাধে তাঁকে ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকা জরিমানা করা হয়। অর্থদণ্ড ছাড়াও আবদুল মতিন সরকারের অবৈধভাবে অর্জিত ২ কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রাষ্ট্রীয় অনুকূলে জব্দের নির্দেশ দেন আদালত। আবদুল মতিনের অনুপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করা হয়।
যেভাবে উত্থান মতিন সরকারের
আবদুল মতিন সরকারের জন্ম দরিদ্র পরিবারে। স্থানীয়ভাবে তিনি কসাই মতিন নামে পরিচিত। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম ওরফে মোহনের ‘দেহরক্ষী’ হিসেবে রাজনীতিতে উত্থান হয় তাঁর।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মতিন সরকারের কপাল খুলে যায়। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় তিনি বগুড়া শহরে নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ শুরু করেন; বাগিয়ে নেন শহর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদকের পদ। পরে পরিবহনে চাঁদাবাজি, জায়গাজমি দখল, টেন্ডার বাণিজ্য, বড় বড় হাটের ইজারা নিয়ন্ত্রণ, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ নানা অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অস্ত্র, মাদক, হত্যা মামলা মাথায় নিয়েও বগুড়া শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন তিনি। জেলা চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদও দখল করেন।
আবদুল মতিন সরকার ২০০০ সালে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন। সেই মামলায় ২০০৭ সালে ২৭ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। এ ছাড়া ১৯৯৮ সালে চকসূত্রাপুর এলাকার মো.
২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আবদুল মতিন সরকারের ছোট ভাই তুফান সরকার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তুফানের স্ত্রী ও তাঁর বড় বোন নারী কাউন্সিলর এবং তুফানের লোকেরা ওই ছাত্রী ও তাঁর মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় তুফানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনার পর অভিযোগ ওঠে, বড় ভাই মতিন সরকারের প্রভাব খাটিয়েই তুফান এ অপকর্ম করেছেন। দুদকের মামলায় ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত তুফান সরকার বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
আবদুল মতিন সরকার সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে বগুড়া শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মত ন সরক র র এক ধ ক য বল গ বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
‘সবাই সাবধান, শহরে নাগিন আজমেরী হক এসেছে’
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ আন্দোলনের শুরু থেকে জোরোলো ভূমিকা পালন করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কখনো ফেসবুকে, কখনো দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজের ব্যানারে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন এই শিল্পী।
চব্বিশের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘিরে তৈরি হওয়া মতপার্থক্য এখনো দূর হয়নি। ফলে বাঁধনকে নানাভাবে নানাজন কটাক্ষ করেছেন, আক্রমণ করেছেন। এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। অন্তত, সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলে পরিষ্কার বোঝা যায়। এবার বাঁধন জানালেন, গালি হিসেবে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘নাগিন’ শব্দটি।
আরো পড়ুন:
গায়ক জুবিনের প্রেম জীবন
‘ট্র্যাব এক্সিলেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন শিমুল খান
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাঁধন তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি এখন জীবনের দুর্দান্ত সময় পার করছি (বিস্তারিত পরে বলব)। এরই মাঝে আমার ‘গালি’ সংগ্রহে নতুন এক সংযোজন হয়েছে, তা হলো— ‘নাগিন’।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে বাঁধন বলেন, “মানুষ আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। কিন্তু এই নামটা একদম নতুন, স্টাইলিশ…। সত্যি বলতে, এটি আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। তাই সবাই সাবধান—শহরে নাগিন আজমেরী হক এসেছে।”
বাঁধনের এই স্যাটায়ার পোস্ট নিয়ে নেটিজেনদের অনেকে রসিকতা করছেন। কেউ কেউ মানসিক সমর্থন জানিয়ে অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
লাক্স তারকা থেকে রুপালি পর্দা, তারপর বিশ্ব মঞ্চ ও বলিউডে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তবে তার এই চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। কারণ পেশাগত নানা সংকটের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও সংগ্রামটা একাই করতে হয়েছে তাকে।
ঢাকা/শান্ত