শিক্ষা-গবেষণায় বৈষম্য থাকবে না, এমন শিক্ষাঙ্গন করতে চায় বিএনপি: সালাহ উদ্দিন আহমদ
Published: 22nd, June 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, তাঁরা শিক্ষাঙ্গনকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চান, যেখানে শিক্ষা ও গবেষণা দুটোই এগিয়ে যাবে, কোনো বৈষম্য থাকবে না। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোকে পরিবেশ সৃষ্টিতে সহযোগিতা করতে হবে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে আয়োজিত ‘শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহ উদ্দিন আহমদ এ কথাগুলো বলেন। সংলাপের আয়োজক তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তা প্ল্যাটফর্ম।
বাংলাদেশে উন্নত মানের গবেষণার পরিবেশ পেলে মেধাবীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসবেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, রাজনীতিবিদেরা যেমন জাতি গঠনে দায়বদ্ধ, তেমনি শিক্ষকেরাও। তবে সহযোগিতা নিতে হবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছ থেকে। এই তিন ফ্যাক্টর মিলিয়ে রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব হবে। মেধা পাচার কমে আসবে। মেধাবীরা দেশে থাকার পরিবেশ পাবেন। দেশে উন্নত মানের গবেষণার পরিবেশ পেলে মেধাবীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসবেন।
সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশ থেকে মেধাবীরা বাইরে গেলে আর ফিরে আসেন না। কারণ, গত কয়েক বছরে এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যাতে মেধাবীরা আর দেশে ফিরে না আসেন। কিন্তু চীন ও ভারতের ক্ষেত্রে দেখা যায়, মেধাবীরা উন্নত দেশে গিয়ে জ্ঞান নিয়ে নিজ নিজ দেশকে উন্নত করছেন। প্রযুক্তিতে তারা বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশে পরিণত হচ্ছে। তাঁরা বিদেশে থেকে যাননি। কিন্তু এখানে সেটা হচ্ছে না।
বাংলাদেশে মাতৃভাষায় মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে বলে মত দেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, এখানে মাতৃভাষায় মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। কারণ, শিশু মায়ের কাছ থেকে যে ভাষা শেখে, সেটি ব্যাকরণসহ শেখে না। বিদেশি ভাষা অবশ্যই শিখতে হবে। কিন্তু সেই বিদেশি ভাষা দিয়ে যদি ইতিহাস, গণিত, বিজ্ঞান পড়া হয়, তাহলে মেধার বিকাশটা ঠিকমতো হবে না। এটা মাথায় রাখতে হবে। শুধু ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় সৃষ্টি করলেই হবে না।
সংলাপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর পাভেল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন। সংলাপ সঞ্চালনায় ছিলেন অর্পণ আলোক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা বীথিকা বিনতে হোসাইন। সংলাপে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন–সম্পর্কিত প্রশ্ন, মতামত তুলে ধরেন। অতিথিরা সেসব প্রশ্নের উত্তর দেন। সেরা প্রশ্নকারীদের মধ্যে তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনা ও সাবেক ৩ ইসির বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা
দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, কেএম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএনপি। এতে তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯ জন এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির আরও তিন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক সমকালকে বলেন, আজ রোববার বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল থানায় এসে তিন দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এতে তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯ জন এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে রকিব, হুদা ও আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানাতে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দেয় বিএনপি। সেইসঙ্গে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোট পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে দলটি।
গত ১৬ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা যায়, বিতর্কিত এবং একতরফা নির্বাচন না করতে বরং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়েছিল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এমনকি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর সারা দেশে বেপরোয়া হামলা এবং আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এসব হামলা বন্ধে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল বিএনপি। তৎকালীন নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ তো নেয়নি, বরং বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করেছিল পুলিশ।
বিতর্কিত ওই তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সাবেক তিন সিইসি ঢাকাতেই নিজ বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।