শেখ হাসিনা ও সাবেক ৩ ইসির বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা
Published: 22nd, June 2025 GMT
দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, কেএম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিএনপি। এতে তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯ জন এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির আরও তিন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক সমকালকে বলেন, আজ রোববার বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল থানায় এসে তিন দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করে। এতে তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯ জন এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে রকিব, হুদা ও আউয়াল কমিশনের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানাতে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দেয় বিএনপি। সেইসঙ্গে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোট পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে দলটি।
গত ১৬ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.
জানা যায়, বিতর্কিত এবং একতরফা নির্বাচন না করতে বরং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়েছিল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এমনকি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ওপর সারা দেশে বেপরোয়া হামলা এবং আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এসব হামলা বন্ধে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল বিএনপি। তৎকালীন নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ তো নেয়নি, বরং বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করেছিল পুলিশ।
বিতর্কিত ওই তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী সাবেক তিন সিইসি ঢাকাতেই নিজ বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিকক্ষের সংসদ চাইলেও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বিপক্ষে বিএনপি
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে একমত হলেও পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপি একমত পোষণ করেনি। এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের নির্বাচনের বিষয়ে বোধ হয় এখন আমাদের কনসিডার (বিবেচনা) করা ঠিক হবে না।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের টানা তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ধারণা এ জন্য দিয়েছিলাম যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ, ক্রীড়াবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন সেক্টরে যাদের অবদান আছে; যাদের চিন্তাধারা, অবদান জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, তাদের প্রতিনিধি আকারে এখানে যুক্ত করার জন্যই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা বিবেচনা করেছিলাম। আমরা উচ্চকক্ষের ক্ষেত্রে সরাসরি ভোটের কথাও বলিনি। সার্বিক বিবেচনায় আমরা মনে করি, পিআর পদ্ধতিটা এখানে সঠিক হবে না।’
এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হলে সংসদের উচ্চকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পাবে না সংখ্যাগরিষ্ঠ দল, সে ক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন ও সংবিধান সংশোধনে প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হবে। সে কারণে বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন (আসনের অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব) নির্বাচনের পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের পক্ষে বিএনপি।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিদ্যমান পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যদের গোপন ভোটের পক্ষে বিএনপি। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেকটোরাল পদ্ধতিটির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন মতামত দিয়েছে। এর মধ্যে বেশি মতামত এসেছে উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষের সদস্যদের গোপন ব্যালটের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে সবগুলো রাজনৈতিক দল গোপন ভোটের পক্ষে একমত হলে এতে একমত বিএনপি।
একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ‘গ্যাপ’ (বিরতি) দিয়ে পরেরবার আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন—এমন প্রস্তাব বিএনপির।
আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ (সিপিবি) ৩০টি দল অংশ নেয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া।