শিক্ষার্থীকে শিকল পরানো সেই শিক্ষক বহিষ্কার
Published: 23rd, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় পায়ে শিকল পরিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পাঠগ্রহণে বাধ্য করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক সাঈদ আহমদ ওরফে রিপনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রোববার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃত সাঈদ আহমদ উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের জামিয়া ইসলামিয়া দেওয়ানগঞ্জ মাদ্রাসার শিক্ষক। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাঈদ আহমদ মাদ্রাসার নূরানি দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে পাঠগ্রহণে বাধ্য করতে শিকল পরিয়ে তালাবদ্ধ করেন।
ঘটনার দিন বিকেলে মাদ্রাসা ছুটি হলে শিশুটি শিকলের অপর প্রান্ত একটি শপিং ব্যাগে ভরে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। পথিমথ্যে গাছতলা বাজারে পৌঁছালে বিষয়টি নজরে আসে সমকাল প্রতিনিধির। পরে সমকাল প্রতিনিধি ও শিশুটির বাবা ওই শিশুকে নিয়ে মাদ্রাসায় ছুটে যান। এ সময় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আশরাফ আলী বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো অভিভাবকদের দোষারোপ করেন।
এ নিয়ে গত শুক্রবার সমকালের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভিডিও এবং গত শনিবার সমকালের প্রিন্ট ভার্সনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠান।
শিক্ষক সাঈদ আহমদ বলেন, ‘ওই শিশু মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেত। শুধু ভয় দেখানোর জন্য এমনটি করেছিলাম। আমার এমনটি করা উচিত হয়নি। এ ঘটনার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আশরাফ আলী বলেন, শিক্ষক সাঈদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনি রায় বলেন, কোনোভাবেই শিক্ষার্থীকে এমন শাস্তি দেওয়া যাবে না। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলে অঙ্গীকারনামা দিয়েছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ সমক ল উপজ ল ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
এক নীতির বাংলাদেশ হবে, বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এই বাংলাদেশ হবে এক নীতির বাংলাদেশ। সবার আগে বাংলাদেশ। বিদেশি কোনো প্রভু থাকবে না, বন্ধু থাকবে। এই বাংলাদেশ তাবেদারমুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া বিজয় র্যালি-পূর্ব সমাবেশে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে রাজধানী ঢাকায় এই ‘বিজয় র্যালি’ করেছে বিএনপি। এতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার আশাবাদ ব্যক্ত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই ঐক্য হবে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য হবে আমাদের শক্তি। এই শক্তিকে সমুন্নত রেখে এই জাতিকে শীর্ষ উচ্চতায় নিয়ে যাব। সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যাব। আমাদের শক্তি হবে আমাদের ঐক্য।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে তাঁরা কোনো বিভেদ চান না। যারা বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। যারা নির্বাচনের বিপক্ষে কথা বলছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। যারা ঐক্য ভঙ্গের চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি না। বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে, গণতন্ত্রের সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সংস্কারের সঙ্গে সবাই মিলে এগিয়ে যেতে হবে। এই রাষ্ট্রকে পৃথিবীর বুকে সমৃদ্ধি ও শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে।
শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যখনই দেশে গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা হয়েছে, তখনই জনগণ তা প্রতিহত করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যার পক্ষে ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, ‘অতি দ্রুত আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণা করবে বলে আশা করছি।’ তবে নির্বাচন ঠেকাতে বিরোধী শক্তি ষড়যন্ত্র করছে বলেও মনে করেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে যেন কেউ ষড়যন্ত্র না করতে পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জুলাই ঘোষণাপত্রে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা আব্বাস। সমাবেশে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নাম না থাকার বিষয়টি তাঁকে পীড়া দিয়েছে। এরপরও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার কারণে স্বাগত জানান তিনি।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর সহযোগিতার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে, মাথা নত করেনি।
র্যালি-পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।
আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমানতা কেটে গেছে: সালাহউদ্দিন আহমদ১৯ ঘণ্টা আগে