মোবাইল অ্যাপে জানা যাবে সারাদেশের বাজারদর
Published: 23rd, June 2025 GMT
নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি ঠেকাতে ‘বাজারদর’ শীর্ষক একটি মোবাইল অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এই অ্যাপের মাধ্যমে এখন থেকে সারাদেশের নিত্যপণ্যের খুচরা বাজারদর সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। গতকাল সোমবার এই অ্যাপটির উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আক্তার খান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভোক্তা অধিদপ্তরের চাহিদার ভিত্তিতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অ্যাপটি তৈরি করে দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটি। এই অ্যাপে প্রতিদিনের খুচরা বাজারদরের তথ্য সরবরাহ করবে ভোক্তা অধিদপ্তর। ফলে অ্যাপটির মাধ্যমে যে কোনো জায়গায় বসে জানা যাবে দেশের ৬৪টি জেলার খুচরা বাজারে পণ্যের দাম। এতে বাজারে কারসাজি কমবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম ভোক্তার জন্য নিশ্চিত করাও সহজ হবে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলীম আখতার খান বলেন, নাগরিকবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে আর্থিক সীমাবদ্ধতা, জনবল স্বল্পতা ও কারিগরি সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অধিদপ্তর ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে পণ্যের প্রকৃত সর্বোচ্চ দাম জানতে পারবে ভোক্তা। এতে ধীরে ধীরে এ-সংক্রান্ত প্রতারণা কমে আসবে।
তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে অধিদপ্তরের দাখিল করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল সফটওয়্যারগুলোর উপস্থাপনা-সংক্রান্ত মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারদর অ্যাপসের বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এই অ্যাপটি সহজ, সংক্ষিপ্ত, কার্যকর ও ব্যবহারকারীবান্ধব।
অনুষ্ঠানে অ্যাপটি বাস্তবায়ন, টেকনিক্যাল সহযোগিতা প্রদানসহ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অধিদপ্তর ও ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মোল্লার মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। অ্যাপটির নির্মাতা শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মোল্লা বলেন, পণ্য বাজারে দাম নিয়ে কারসাজি বন্ধে অবাধ তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে বাজারদর অ্যাপ। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম ভোক্তার জন্য নিশ্চিত করা সহজ হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর এই অ য প ব জ রদর
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।