ইরানের সঙ্গে সংঘাত শেষ করতে চায় ইসরায়েল, তবে তা নির্ভর করছে তেহরানের ওপর
Published: 24th, June 2025 GMT
শিগগির ইরানে হামলা গুটিয়ে আনার পথ খুঁজছে ইসরায়েল। এই বার্তা ইসরায়েল ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে পৌঁছে দিয়েছে। ইসরায়েলের তিনজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তবে ইসরায়েল এই হামলা অচিরেই বন্ধ করে পাল্টা হামলা থেকে রেহাই পাবে কি না, সেটা অনেকাংশে ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে।
অপর দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নেতারা চলমান এই সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার সুনির্দিষ্ট কৌশল বের করার চেষ্টা করছেন। যাতে ইরানে ইসরায়েলের হামলা বন্ধের পাশাপাশি ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা বন্ধ হয়। ইরানের পাল্টা হামলায় ইতিমধ্যে ইসরায়েলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ইসরায়েলি নেতাদের এই অবস্থান সম্পর্কে অবগত অপর এটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানে তাদের লক্ষ্য অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল তার ইচ্ছেমতো ইরানে আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। কিন্তু এই সংঘাত কখন শেষ হবে, সেটা তাদের হাতে নেই। তেহরান এই লড়াই চালিয়ে যেতে চাইলে ইসরায়েলের চড়া মূল্য দেওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে হবে।
১৩ জুন ভোররাতে ইরানে হামলা চালিয়ে দেশটির সেনাপ্রধানসহ ২০ জনের বেশি ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা এবং বেশ কয়েকজন পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যা করে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে দেশটির একাধিক পারমাণিবক স্থাপনা এবং ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় হামলা চালিয়ে আসছে।
এর মধ্যে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানোয় ইসরায়েল উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পায়। এই হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েল তার লক্ষ্য অর্জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এবং এই অভিযান দীর্ঘমেয়াদি করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।
এরপর রবি ও সোমবার ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এসব ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু আকাশেই ধ্বংস করতে পারলেও বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত হানে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে লাখ লাখ ইসরায়েলিকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লিওনেল মেসির আজ জন্মদিন: এমন মানবজনম আর কি হবে
শুরুটা হয়েছিল একটা স্যুটকেস থেকে কিংবা একটা ন্যাপকিন পেপার অথবা একটা বাইসাইকেল থেকে। সেসব তখন ছিল বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা। ধীরে ধীরে ঘটনাগুলো জোড়া লেগে রূপান্তরিত হলো একটা পূর্ণাঙ্গ গল্পে। স্মৃতির সেসব পাথরখণ্ড এখন গল্পের জগৎ পেরিয়ে মিথ বা কিংবদন্তিতে রূপ নিয়েছে। কে জানে, হয়তো কোনো এক মনোরম মনোটোনাস সকালে কফির মগ হাতে মনে মনে সেই স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন রূপকথার সেই মহানায়ক, যাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এই অনবদ্য গল্পগাথা।
রূপকথার সেই গল্পের মহানায়কের নামটা যে লিওনেল মেসি, তা বোধ হয় আলাদা করে না বললেও চলে। আজ ৩৮তম জন্মদিনে মেসি কি আরেকবার সেসব রূপকথার দিকে ফিরে তাকাবেন? হয়তো তাকাবেন, হয়তো না। কিন্তু আমরা তো কাঁটায় হেঁটে মুকুটের সন্ধান পাওয়া সেই গল্পটার দিকে ফিরে তাকাতেই পারি।
একজন মানুষের দেবদূত হয়ে ওঠার যাত্রাটা আরেকবার দেখে নিয়ে বলতে পারি, ‘এমন মানবজনম আর কি হবে।’ নাহ, এমনটা সব সময় হয় না। কখনো কখনো হয়, কদাচিৎ কেউ কেউ আসেন প্রকৃতির বর নিয়ে। যাঁর হাতে প্রকৃতি তুলে দেয় হ্যারি পটারের সেই জাদুর ছড়ি, যা মুহূর্তেই মাটিকে বদলে দিতে পারে হীরকখণ্ডে।
আরও পড়ুনফ্রি–কিকের সময় কী ভাবেন মেসি? গোল হয় কোন কৌশলে২১ জুন ২০২৫‘মেসি’ নামের এই মহাকাব্যটা লেখা শুরু হয়েছিল ৩৮ বছর আগে আজকের এই দিনে। কিন্তু এই গল্প যেন আর কখনোই শেষ হওয়ার নয়। অনন্তকাল ধরে বিনি সুতার মালায় গাঁথা হতে থাকবে সেই গল্পটা। প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে বেড়াবে এক অলৌকিক জাদুকরের গল্প, যে গল্পে একজন মানুষ ভীষণ কঠিন এক লড়াই শেষে পান করবেন অমরত্বের সঞ্জীবনী।
কিন্তু অমরত্বের পর আর কী? আর্জেন্টাইন সাহিত্যিক রবার্তো ফুনতানারোজার ‘এন আর্জেন্টাইন’স হেভেন’ নামক গল্পে একদল মানুষ মৃত্যুর পরে কীভাবে ফুটবল খেলা দেখার মধ্য দিয়ে স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন সেটা দেখিয়েছিলেন। ফুটবলীয় সেই স্বর্গ কাতারে আড়াই বছর আগেই পেয়ে গেছেন মেসি। আঙুলের ইশারায় পুরো পৃথিবীকে একাই নাচিয়ে তুলেছিলেন ট্যাঙ্গোর তালে। কিন্তু এরপর? অমরত্বের পর সত্যিই কি কিছু থাকে? হ্যাঁ থাকে। অমরত্বের পর থাকে উপভোগ। অমরত্বের পর থাকে বয়ে যাওয়া।
বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে লিওনেল মেসি