ট্রাম্প ইউক্রেন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ইউরোপকে এখনই ঠিক করতে হবে, সে কি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে, না রাশিয়ার জয়ের মূল্য দেবে।

কিছুদিন আগেও ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় মিত্র ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা অস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করত। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ট্রাম্পকে আর তেমন ভাবায় না। তিনি রাশিয়ার কথাই বারবার বলছেন। ন্যাটোকে তুচ্ছ করেছেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা নিয়ে রসিকতা করেছেন। যদিও পুতিন সম্প্রতি বলেছেন ‘পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছে’। 

ট্রাম্প আর ইউক্রেনের সমর্থক নন। তিনি কোনো গ্রহণযোগ্য শান্তি-উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেননি। সব মিলিয়ে ইউক্রেন বিষয়ে তাঁর কথার এখন তেমন মূল্য নেই। তবে এসবের খেসারত দিচ্ছে ইউক্রেন। দুই সপ্তাহ আগে ইউক্রেন শুরু করেছে ‘অপারেশন স্পাইডারওয়েব’। রাশিয়ার ভেতরে ড্রোন হামলার মাধ্যমে ডজনখানেক বিমানঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস দ্রুতই জানায় যে এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ট্রাম্প আবার বললেন, তিনি যুদ্ধ থেকে ‘সরে যাবেন’।

এই ঘটনার পর ইস্তাম্বুলে দ্বিতীয় দফা শান্তি আলোচনা ভেঙে পড়ে। একমাত্র চুক্তি হয়, ছয় হাজার মৃত সেনার মরদেহ বিনিময়। এর মধ্যেই ট্রাম্পের তরফে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জানালেন, তিনি চান জেলেনস্কি ও পুতিন সরাসরি কথা বলুন। তবে তখন সময় পেরিয়ে গেছে। 

২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরও বহুবার দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে চাপ দিয়েছে, রাশিয়াকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছে। ইউরোপীয় নেতারা কিছুটা প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু ইউরোপের নিরাপত্তার পুরো দায় কাঁধে তোলেননি। এখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা কমছে। ট্রাম্প নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন। ইউরোপ পড়েছে ইতিহাসের এক ক্রান্তিলগ্নে। ইউরোপ এখন একা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তৈরি হওয়া ন্যাটো জোটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় ভিত্তি ইউরোপের প্রতিশ্রুতি।

প্রশ্ন হলো, এই সময়ের দাবি কি ইউরোপ পূরণ করতে পারবে? ইউরোপের দেশগুলো কি যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াই একটি কার্যকর নিরাপত্তা জোট গড়তে পারবে? তা কি সম্ভব? 

২০২৫ সালের শুরুতে ইউক্রেন নিজে প্রায় ৪০ শতাংশ সামরিক চাহিদা পূরণ করছিল। বাকি ৩০ শতাংশ দিচ্ছিল ইউরোপ, ৩০ শতাংশ আসছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আগে ইউক্রেনের প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ যুক্তরাষ্ট্র জোগাত। ইউরোপ মরিয়া হয়ে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছে। কিন্তু ইউরোপের অস্ত্রশিল্প অনেক দিন ধরে পিছিয়ে আছে। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ২০ লাখ কামান গোলা তৈরি করবে ইউরোপ; যা ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের সর্বনিম্ন চাহিদা মাত্র। রাশিয়া যদি ইউক্রেন দখল করে, তবে কেবল জার্মানিরই খরচ হবে বর্তমান সহায়তার ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি। কারণ হবে শরণার্থী স্রোত, জ্বালানিসংকট, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা হুমকি। একটি বড় উদ্যোগ নিচ্ছে চেক প্রজাতন্ত্র। 

২০২৬ সালের শেষ নাগাদ তারা ইউক্রেনকে ১৮ লাখ কামান গোলা সরবরাহ করবে। এই প্রকল্পে কানাডা, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্কসহ বেশ কিছু দেশ অংশ নিচ্ছে। এটি সময়মতো পৌঁছালে যুদ্ধের গতিপথে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারে। মে মাসের শেষ দিকে জার্মানি আর ইউক্রেন এক চুক্তি করেছে। এর মাধ্যমে ইউক্রেনেই দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র তৈরি করা হবে স্থানীয় শিল্প ও প্রকৌশল দক্ষতা কাজে লাগিয়ে। ইউক্রেনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মিত্র ব্রিটেন ঘোষণা করেছে ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের নতুন ড্রোন প্যাকেজ। এই প্যাকেজ ২০২৬ সালের মধ্যে ১ লাখ ড্রোন সরবরাহ করবে।

সম্প্রতি ট্রাম্প ফক্স নিউজে বলেন, ইউক্রেনে আমেরিকানদের করের টাকা ‘অপচয়’ হচ্ছে। মন্তব্যটা বিভ্রান্তিকর। যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেনকে প্রায় ১২৮ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিয়েছে। এর মধ্যে ৬৬.

৫ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সদস্যদেশগুলো ১৩৫ বিলিয়ন ইউরো দিয়েছে—৫০ বিলিয়ন সামরিক, ৬৭ বিলিয়ন আর্থিক ও মানবিক, ১৭ বিলিয়ন ইউরো শরণার্থী সহায়তা। যুক্তরাজ্য দিয়েছে আরও ১২.৮ বিলিয়ন পাউন্ড। এসব কোনো দান নয়। এগুলো কৌশলগত বিনিয়োগ। রাশিয়া যুদ্ধে জিতলে এই দেশগুলোর লোকসান হবে আরও বেশি। 

ইউরোপ নেতৃত্ব দিচ্ছে নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রেও। ২০১৪ সাল থেকে, বিশেষ করে ২০২২-এর পর রাশিয়ার অর্থনীতিকে লক্ষ্য করে ১৭ দফা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে যুদ্ধ না থামলেও রাশিয়ার ওপর চাপ বেড়েছে। ২০ মে ট্রাম্প ও পুতিনের ফোনালাপের পরদিনই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য সবচেয়ে বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ ঘোষণা করে।

বিশ্লেষণ বলছে, এই নিষেধাজ্ঞা যদি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যায়, তবে রাশিয়ার বার্ষিক ক্ষতি হবে ১০ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার। এমনকি এর আংশিক প্রয়োগেও যুদ্ধের অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। 

ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাইজা কাল্লাস বলেছেন, ‘যত দিন রাশিয়া যুদ্ধ চালাবে, তত কঠিন হবে আমাদের জবাব।’ এখন ইউরোপকে শুধু কথায় নয়, কাজে তা প্রমাণ করতে হবে। ড্রোন থেকে কামান, নিষেধাজ্ঞা থেকে অস্ত্র উৎপাদন—ইউরোপ এখন ধীরে ধীরে বক্তব্য থেকে কৌশলে রূপ নিচ্ছে। কিন্তু এই গতি থামা চলবে না। এটি আর শুধু ইউক্রেনের যুদ্ধ নয়। 

যুক্তরাষ্ট্র সরে গেছে। ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প নয়। সেই এখন শেষ প্রতিরক্ষা। যদি ইউরোপ ব্যর্থ হয়, ইউক্রেনও ব্যর্থ হবে। আর সেই সঙ্গে ধূলিসাৎ হবে স্বাধীন ও নিরাপদ ইউরোপের স্বপ্ন।

সের্হেই মাইডুকোভ ইউক্রেনীয় লেখক

আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ইউক র ন র ইউর প র সহ য ত ন ইউর সবচ য

এছাড়াও পড়ুন:

সৌদি, আরব আমিরাত, ওমানে বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা কেন কমছে

বিদেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের শুরু থেকেই শীর্ষে আছে সৌদি আরব। এখন পর্যন্ত বিদেশে যাওয়া কর্মীদের ৩৪ শতাংশেরই গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ। চলতি বছরের মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে কাজের জন্য দেশ ছেড়ে যাওয়া কর্মীদের ৭৩ শতাংশই গেছেন সৌদিতে। তবে এ শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে আসছে।

অন্যদিকে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। তৃতীয় শীর্ষে থাকা ওমানের বাজারও বন্ধ রয়েছে গত বছর থেকে। গত বছরের জুন থেকে বন্ধ হয়ে আছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। অবশ্য এটি দ্রুত চালু করতে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় চাহিদামতো কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না। ইউরোপে কর্মী পাঠানোর সম্ভাবনাও সেভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

অভিবাসন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নির্দিষ্ট কয়েকটি শ্রমবাজারের ওপর নির্ভরতার কারণেই বিদেশে কর্মী পাঠানোর হার বাড়ছে না। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, সৌদি আরবের চাহিদা একই রকম থাকবে না। ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে সৌদিতে ব্যাপক অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে কর্মীর চাহিদা বেড়েছিল। তবে এরই মধ্যে তা কমতেও শুরু করেছে। চলতি জুন মাসে ভিসা বন্ধ রেখেছে

মধ্যপ্রাচ্যে নারী কর্মীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত হয়নি। এ ছাড়া সৌদিতে বাসাবাড়ির কাজে যে শ্রম দিতে হয়, সে তুলনায় তেমন আয় হয় না। বিভিন্ন অভিযোগ তো আছেই। তাই নারীদের আগ্রহ কমে গেছে। আবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিকল্প উৎস হিসেবে আফ্রিকার দেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে।বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের (বিএনএসকে) নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম

সৌদি। জুলাইয়ে নতুন ঘোষণা দিতে পারে দেশটি। বিকল্প শ্রমবাজার চালু করা না গেলে কর্মী পাঠানো কমে যাবে।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন ১১ লাখের বেশি কর্মী। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ লাখে। তবে ২০২৪ সালে ৩ লাখ কমে হয় ১০ লাখ।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে দেশ ছেড়েছেন ৪ লাখ ২০ হাজার কর্মী। তাঁদের মধ্যে তিন লাখই গেছেন সৌদি আরবে। এরপর রয়েছে কাতার। দেশটিতে ৪০ হাজার কর্মী গেছেন। ২৬ হাজারের বেশি কর্মী গেছেন সিঙ্গাপুরে।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সৌদি যেতে অধিকাংশ কর্মী পরিচিত বা স্বজনের মাধ্যমে নিয়োগের চাহিদাপত্র সংগ্রহ করে থাকেন। এ নিয়ে একটি দালাল শ্রেণিও তৈরি হয়েছে। তারা নকল নিয়োগপত্র গছিয়ে দেয়। তাই কেউ কেউ সৌদিতে গিয়ে কাজ পান না, প্রতারিত হন। এটি বন্ধ হলে দেশটিতে গিয়ে বেকার থাকার অভিযোগ কমে আসবে।

রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সৌদি আরবে এক মাস ভিসা বন্ধ। নতুন চাহিদাও কমে গেছে। জুলাইয়ে দেশটি কী ধরনের ঘোষণা দেয়, সে জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কর্মী নিয়োগে তারা আরও যাচাই–বাছাই চালু করতে পারে। তাই বিকল্প শ্রমবাজার চালু করতেই হবে।

বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়ার তেমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নতুন শ্রমবাজার চালুর ক্ষেত্রেও তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। যেসব দেশে সম্ভাবনা আছে, সেটিও কাজে লাগানো হচ্ছে না। শাকিরুল ইসলাম, চেয়ারপারসন, ওকাপকমছে নারী কর্মীও

বিদেশে কর্মসংস্থানে বাংলাদেশি নারীদের মূল গন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। অধিকাংশ নারীই যান গৃহকর্মী হিসেবে। তাঁদের কেউ কেউ নানা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসেন। যৌন নিপীড়নের অভিযোগও আছে। এতে নারীদের মধ্যে বিদেশে যাওয়ার উৎসাহ কমছে।

বিএমইটির তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিদেশে নারী কর্মী গেছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৪৬৬ জন। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৬ হাজার ১০৮, অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় কমে ২৮ শতাংশ। গত বছর এটি আরও কমে ৬১ হাজার ১৫৮–তে নেমে এসেছে। কমার হার ২০ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গেছেন ২৪ হাজার ৬১৭ নারী। এর মধ্যে সৌদি আরবে গেছেন ১৭ হাজার ৭৮৬ জন। সাড়ে চার হাজার নারী গেছেন জর্ডানে।

অর্থাৎ গত কয়েক বছরে বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়লেও আনুপাতিক হারে নারী কর্মীর সংখ্যা কমছে। ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল—এই তিন বছর বিদেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। এ সময় বিদেশে গেছেন ৩৪ লাখের বেশি কর্মী। এর মধ্যে নারী কর্মী গেছেন আড়াই লাখের কম। অথচ ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর লক্ষাধিক নারী কর্মী বিদেশে গেছেন। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে এ সংখ্যা কমে আসে। পরের দুই বছর আবার বাড়ে। তবে দুই বছর ধরে কমছে।

বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের (বিএনএসকে) নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে নারী কর্মীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত হয়নি। এ ছাড়া সৌদিতে বাসাবাড়ির কাজে যে শ্রম দিতে হয়, সে তুলনায় তেমন আয় হয় না। বিভিন্ন অভিযোগ তো আছেই। তাই নারীদের আগ্রহ কমে গেছে। আবার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিকল্প উৎস হিসেবে আফ্রিকার দেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে।

সম্ভাবনা কাজে লাগানোর তাগিদ

বৈদেশিক শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে আসার প্রধান কারণ একক দেশের ওপর নির্ভরতা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, একটা সময় কোনো এক দেশে বিপুল হারে কর্মী যেতে শুরু করেন। এরপর নানা সমস্যা তৈরি হওয়ার পর ওই শ্রমবাজার কয়েক বছরের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তখন আরেক দেশে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। এভাবে ঘুরেফিরে হাতে গোনা কয়েকটি দেশের শ্রমবাজারে সীমিত হয়ে আছে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান।

পরিস্থিতি আসলেই হতাশাজনক বলে মনে করেন তৃণমূল অভিবাসীদের সংগঠন অভিবাসীকর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম। প্রস্তাবিত বাজেটে আগের চেয়েও এ খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়ার তেমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নতুন শ্রমবাজার চালুর ক্ষেত্রেও তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। যেসব দেশে সম্ভাবনা আছে, সেটিও কাজে লাগানো হচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌদি, আরব আমিরাত, ওমানে বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা কেন কমছে
  • যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরান কি খেলতে পারবে
  • ইনফান্তিনো-ট্রাম্প ‘ব্রোমান্স’–এর ভেতরে কী আছে
  • অনিশ্চয়তার মুখে ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরানের অংশগ্রহণ
  • ক্লাব বিশ্বকাপে গরম আর ঝড়–বৃষ্টিই শিরোনাম, ২০২৬ বিশ্বকাপে কী হবে
  • বিশ্বকাপের টিকিট পেলো কানাডা
  • বাছাইপর্ব পেরিয়ে সবার আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কানাডা
  • চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেট ব্যর্থ
  • বিশ্বকাপের টিকিট পেল কানাডা