যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরান কি খেলতে পারবে
Published: 23rd, June 2025 GMT
এশিয়া মহাদেশ থেকে গত মাসে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ইরান। এ বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। তবে বিশ্বকাপে মোট ১০৪ ম্যাচের মধ্যে সেমিফাইনাল, ফাইনালসহ যুক্তরাষ্ট্রেই আয়োজিত হবে বেশির ভাগ ম্যাচ (৭৮টি)।
চলতি মাসে ইরান-ইসরায়েল সামরিক সংঘাত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সামগ্রিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে থাকা দুটি দেশের সংঘাতে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্রও। পরশু রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এর পর থেকেই একটি প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠেছে, ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরান খেলার সুযোগ পাবে, নাকি নিষিদ্ধ হবে?
আরও পড়ুনরিয়াল কোচ আলোনসোর বেতন কত৬ ঘণ্টা আগে২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজনে ফিফার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে কাজ করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কও বেশ ভালো। যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজনের আগে থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে বিভিন্ন দফায় বৈঠক করতে দেখা যাচ্ছে ইনফান্তিনোকে। সংবাদমাধ্যমগুলোর ধারণা, ইরানে সামরিক হামলার পরও ইনফান্তিনোর কূটনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে নিজ দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন ও সেখানে খেলার পথকে বাধাগ্রস্ত করবে না। তবে ইনফান্তিনোর ওপর ট্রাম্পের যে প্রভাব, তাতে ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরান নিষিদ্ধ হলেও হতে পারে। সেটা সময় হলেই জানা যাবে। তবে এখন অন্তত এটুকু বলাই যায়, সংঘাতে জড়ানোয় ইরানের টানা চতুর্থ বিশ্বকাপে খেলা ঝুঁকিতে পড়েছে।
ইতিহাস বলে, যুদ্ধের সংঘাতে জড়ানো দেশকে এর আগে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালানোয় রাশিয়াকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও উয়েফা। এ ছাড়া নব্বইয়ের দশকে বলকান যুদ্ধের কারণে সাবেক যুগোস্লাভিয়াকে নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা।
আরও পড়ুনমেসিকে মনে করালেন, কিন্তু গল্পটা এখন এচেভেরির১০ ঘণ্টা আগে২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইরানকে নিয়ে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু শোনা যায়নি। তবে ইরান যদি ২০২৬ বিশ্বকাপ খেলার সুযোগও পায়, তাদের সমর্থকেরাও সম্ভবত নিজ দলের ম্যাচ দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারবেন না। ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় লাল তালিকাভুক্ত ১১ দেশের একটি ইরান। লাল তালিকাভুক্ত দেশের নাগরিককে কোনোভাবেই মার্কিন ভূখণ্ডে ঢুকতে দেবে না ট্রাম্প সরকার। গত মার্চে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে ইরানের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য এ নিয়ম হয়তো শিথিল করা হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ইরানের ম্যাচ সে দেশের সমর্থকেরা দেখতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে এখনো কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত মেলেনি। ২০২৬ বিশ্বকাপের অন্য দুটি আয়োজক দেশ মেক্সিকো ও কানাডার ইরানের ওপর কোনো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নেই। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এতে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ইরানকে ‘এ’ গ্রুপে রাখা হতে পারে। এই গ্রুপের সব কটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে মেক্সিকোয়। তবে ৪৮ দলের গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে ইরান শেষ ৩২–এ উঠলে তখন জটিলতা তৈরি হতে পারে।
বিশ্বকাপে এর আগে ছয়বার খেলেছে ইরান। ১৯৭৮, ১৯৯৮, ২০০৬, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে তারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইনফ ন ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনিশ্চয়তার মুখে ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরানের অংশগ্রহণ
২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপে মাঠে দেখা যাবে ৪৮ দল। তার এশিয়ার শক্তিশালী দল ইরান ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে তাদের অংশগ্রহণ। কিন্তু মাঠের লড়াই জিতে বিশ্বকাপের টিকিট পেলেও এখন তাদের সামনে এক অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিপক্ষ রাজনীতি ও ভিসা জটিলতা।
এই বিশ্বকাপ আয়োজন করবে তিনটি দেশ— যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। ফাইনালসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্রে। আর এখানেই শুরু হয়েছে সমস্যা। ওয়াশিংটনের কড়া ভিসা নীতি, সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব একত্রে জটিল করে তুলেছে ইরানের বিশ্বকাপ যাত্রা।
চলতি বছরের মার্চে উজবেকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ইরান। কিন্তু ভিসা না পেলে যুক্তরাষ্ট্রে নকআউট পর্বে খেলাই অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়াবে। এমন পরিস্থিতিতে ফিফা ও আয়োজকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
আরো পড়ুন:
গোলবন্যায় শেষ ষোলোতে ম্যানসিটি
চেলসিকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় ফ্ল্যামেঙ্গো
বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী, ইরান যদি ‘গ্রুপ এ’-তে পড়ে, তাহলে প্রাথমিক ম্যাচগুলো হতে পারে মেক্সিকোতে। কিন্তু শেষ ষোলোতে গেলে ম্যাচ পড়বে যুক্তরাষ্ট্রে—যেখানে ভিসা পাওয়া দারুণ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে ইরানি খেলোয়াড়দের জন্য।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল আছে ১২টি দেশের ওপর, যার মধ্যে রয়েছে ইরান। যদিও ক্রীড়াজগতের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এখনো নিশ্চিত কিছু নয়।
ইতিহাস বলছে, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েনে আগে রাশিয়া ও যুগোস্লাভিয়া যেমন নিষিদ্ধ হয়েছিল ইরানের ক্ষেত্রেও তেমন কিছু ঘটতে পারে কি না তা নিয়েই শঙ্কা ফুটবলমহলে।
শুধু জাতীয় দল নয়, ভিসা সমস্যা তাড়া করছে ক্লাব ফুটবলেও। ইন্টার মিলানের ইরানি স্ট্রাইকার মেহদি তারেমি ক্লাব বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকলেও ভিসা জটিলতায় যুক্তরাষ্ট্রে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা সত্ত্বেও তাকে তেহরান থেকে বের করে আনা যায়নি।
এখনও পর্যন্ত ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো কিংবা মার্কিন প্রশাসন কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে বিশ্বকাপে ইরানের উপস্থিতি আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছেই।
ঢাকা/আমিনুল