টানলেই উঠছে কার্পেটিং, রাস্তায় নিম্নমানের কাজ বন্ধ করালেন হাসনাত
Published: 24th, June 2025 GMT
হাত দিয়ে টানলেই উঠে আসছে সদ্য কার্পেটিং করা রাস্তার ঢালাই। কোথাও বিটুমিন নেই, কোথাও খোয়া ছাড়াই লাল মাটির ওপর পিচ ঢালা! এমন দৃশ্য দেখে কুমিল্লার দেবিদ্বারে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার (২৩ জুন) উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর থেকে সুবিল ইউনিয়নের বুড়িরপাড় বাজার পর্যন্ত সড়কের কাজ পরিদর্শন করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। স্থানীয়দের অভিযোগের পর সরেজমিনে গিয়ে তিনি নিম্নমানের কাজের প্রমাণ পান।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় ২ কোটি টাকার কাজটি পেয়েছে ‘মেসার্স আরতার অ্যান্ড ইয়েস্টেড ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। চার বছর আগে সড়কের মেকাডাম (প্রাথমিক প্রস্তুতি) শেষ হলেও নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে কার্পেটিং স্থগিত ছিল। সম্প্রতি কাজ শুরু হলে অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়।
এ প্রকল্পের ঠিকাদার সুবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মো.
আব্দুল্লাহপুরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেছেন, “আবু তাহের সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের ঘনিষ্ঠ এবং সাবেক পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীমের আত্মীয়। সে কারণে এতদিন চুপ ছিলাম।”
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার আবু তাহের প্রথমে দায় এড়িয়ে যান। পরে স্বীকার করেন কাজ নিম্নমানের হয়েছে এবং বলেন, “সরি, আমি ঠিক করে দেব।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, “সরকারের অর্থ জনগণের রক্ত-ঘামের ফসল। সেই টাকা দিয়ে রাস্তা হবে জনগণের জন্য, কোনো ঠিকাদার বা প্রভাবশালী ব্যক্তির পকেটের জন্য নয়। এমন অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।”
দেবিদ্বার উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার বলেছেন, “আমি নিজে সড়কটি পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ সত্য। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছি। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।