সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অজুহাত দেওয়ার ট্রেনিংপ্রাপ্ত: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 25th, June 2025 GMT
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অজুহাত দেওয়ার ট্রেনিংপ্রাপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার দেবীদ্বার সদর এলাকায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভাজক ও সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে ‘অনিয়ম দেখার’ পর সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর নিজ উপজেলার কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দেবীদ্বার অংশের বিভাজক ও সড়কের দুই পাশে তিন ফুট করে প্রশস্তের কাজ দেখতে যান। সেখানে কাজে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করেন তিনি।
কাজে অনিয়ম সম্পর্কে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকার এই কাজ জনগণের কোনো কাজে আসবে না। বরং জনগণের আরও দুর্ভোগ বেড়েছে। কথা ছিল ডিভাইডার বসানোর আগে ছয় ইঞ্চি গাঁথুনি করবে, কিন্তু তারা তা করেনি। রাস্তার পিচের ওপরেই ডিভাইডার তোলা হয়েছে, যা ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। এখানে ব্লক দেওয়ার কথা ছিল, তা দেয়নি। একটা রড থেকে আরেকটা রডের দূরত্ব থাকবে ৩০০ এমএম, কিন্তু তারা দূরত্ব দিয়েছে ৪০০ এমএম। যেখানে ১০০ রড লাগত, সেখানে তারা ৭০টি রড দিয়ে কাজ চালিয়ে দিয়েছে।
গত ২০ বছরে জবাবদিহিবিহীন একটা সমাজ গড়ে উঠেছিল উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যাঁরা আছেন তাঁরা হচ্ছেন যেকোনো এক্সকিউজ বা অজুহাত দেওয়ার ট্রেনিংপ্রাপ্ত। তাঁদের যেকোনো জিনিসের জন্য অজুহাত প্রস্তুত থাকে। এটা আমার দায়িত্ব ওর দায়িত্ব, এই চেয়ার, ওই চেয়ার আমার না, এটা আমার দায়িত্ব না—এমনটা আমাদের সঙ্গেও করে। আগে ১ কোটি টাকার কাজে ৩০ লাখ টাকাই খেয়ে ফেলা হতো, কোনো জবাবদিহি ছিল না। গত ২০ বছর এভাবে চলছে, জবাবদিহিবিহীন একটা সমাজ গড়ে উঠেছিল। যারা অনিয়ম করে তাদের কেউ কেউ এখনো ভাবছে যে তাদের কোনো জবাবদিহি করতে হবে না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা যেহেতু কমিশন খাই না, সুতরাং আমরা কারও কাছে ধরা নেই। সুতরাং এ কাজের জন্য যে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তার যথাযথ প্রয়োগ হতে হবে।’
সেখানে উপস্থিত ঠিকাদার আশিকুর রহমান ভূঁইয়াকে উদ্দেশ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই টাকা আমার বাপের টাকা না, আপনার বাপের টাকাও না, জনগণের টাকা। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাওয়া-আসা করে। তারা গালাগালি করে। ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, দরকার হলে আরও ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হতো, তবু এ কাজটা ঠিকভাবে করতেন। এই কাজে কেন অনিয়ম করলেন? ভাই গজব পড়বে! সওয়াবের নিয়তে কাজ করলে এমন করতে পারতেন না।’
পরে হাসনাত আবদুল্লাহ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন।
কাজের অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে মেসার্স ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।